রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ বাবার বাড়ির জমির অংশ বিক্রি করে না আনায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে বেদম মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বামী আব্দুল ওহাবের বিরুদ্ধে। নির্যাতিত ওই অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে গ্রামবাসীরা রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। (১৭ সেপ্টেম্বর) শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের গয়টাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নির্যাতিত গৃহবধূ বাদি হয়ে রৌমারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। ১১দিন ধরে অন্যের বাড়িতে ঠাঁই নিয়ে চিকিৎসা ও খাবারের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ওই গৃহবধূ।
নির্যাতিত গৃহবধূ উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাঁঠাল বাড়ি গ্রামের মৃত আবু তাহেরের মেয়ে হালিমা খাতুন (৩৮)। তার বিয়ে হয় শৌলমারী ইউনিয়নের গয়টাপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে আব্দুল ওহাবের সাথে।নির্যাতিত গৃহবধূূ হালিমা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, সাত বছর আগে প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর আমাকে বিয়ে করেন আব্দুল ওহাব। বিয়ের সময় যৌতুক হিসাবে নগদ ৩ লাখ টাকা, ৪টি গরু, ৫০টি হাঁসসহ আসবাবপত্র নেন। এক বছর পর তিনি আমাকে আমার বাবা বাড়ির জমি ভাগের অংশ বিক্রি করে না আনায় শুরু হয় আমার ওপর মানসিক ও শারীরিক নিযার্তন। তার অমানুসিক নির্যাতনে আমার গর্ভে থাকা সাত মাসের সন্তান নষ্ট হয়ে যায়।
ওই সময় থানায় অভিযোগ করতে চাইলে তিনি আমাকে তালাকসহ নানা ধরনের হুমকি দেন। এই ভয়ে তখন আমি কোথাও অভিযোগ করিনি। তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, এরপর আমার স্বামী আরও দুই বিয়ে করেন। বিয়ের পর যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করায় সইতে না পেরে তার দুই স্ত্রী তালাক দিয়ে চলে যায়। গত ১৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার আবারও বিয়ে করে পঞ্চম স্ত্রীকে বাড়িতে এনে আমাকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। ১১দিন ধরে অন্যের বাড়িতে ঠাঁই নিয়ে আছি। না পাচ্ছি চিকিৎসা করতে, না পাচ্ছি খাবার কিনতে।
থানায় অভিযোগ করেও কোনো বিচার পাচ্ছি না।গয়টাপাড়া গ্রামের নতুব আলী, আলিম উদ্দিন, সাখাওয়াত হোসেন, আমির হোসেন, সাহিদা কাতুন, কামাল হোসেন জানান, গত ১৭ আগস্ট শুক্রবার রাতে আব্দুল ওহাব পঞ্চম বিয়ে করে বউ নিয়ে বাড়িতে আসেন। এনিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এর একপর্যায়ে আব্দুল ওহাব তার অন্তঃসত্ত্বা দ্বিতীয় স্ত্রী হালিমাকে বেদম মরপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেন।
এসময় তার লাঠির আঘাতে স্ত্রী হালিমার মাথায় মারাত্মক জখম হয়ে আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।অভিযুক্ত স্বামী আব্দুল ওহাব বলেন, আমার দ্বিতীয় স্ত্রী অবাধ্য চলাফেরা করায় তাকে তালাক দিয়েছি। তারপরেও সে আমার বাড়ি থেকে না যাওয়ায় জোর করে বের করে দিয়েছি। এব্যাপারে রৌমারী থানার ওসি মোন্তাছের বিল্লাহ বলেন, এবিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন
হোসেনপুরে গৃহবধূকে মধ্যরাতে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ
ফুলবাড়ীতে বিষ প্রয়োগে ৬ বিঘা জমির ধান নষ্টের অভিযোগ
হাতীবান্ধায় সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ আহত ১০