হোম » সারাদেশ » সান্তাহার ইউপি সদস্যদের সন্মানি ভাতা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছেন চেয়ারম্যান

সান্তাহার ইউপি সদস্যদের সন্মানি ভাতা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছেন চেয়ারম্যান

গোলাম রব্বানী দুলাল,আদমদীঘি উপজেলা প্রতিনিধি: বগুড়ার আদমদীঘিতে প্রায় ৩বছর সন্মানি ভাতা থেকে বঞ্চিত সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত মেম্বার ও মহিলা মেম্বাররা। তারা সরকারি সন্মানি ভাতা নিয়মিত পেলেও বঞ্চিত আছেন ইউনিয়ন পরিষদের ভাতা থেকে। আর এই ভাতা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছেন ওই পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী ওই সকল ইউপি সদস্যদের। তারা একাধিক বার এ ব্যাপারে তাগাদা দিলেও কোন গুরুত্ব দেয়না চেয়ারম্যান টুলু। এতে মাসের পর মাস ভাতা বকেয়া থেকেই যাচ্ছে।

জানা যায়, আদমদীঘি উপজেলার ৬নং ইউনিয়ন হচ্ছে সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদ। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এই পরিষদ। ৯জন সদস্য ও ৩জন মহিলা সংরক্ষিত সদস্যা এবং একজন চেয়ারম্যান মিলে এই ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন। এই জন্য ভাতা হিসেবে সরকার থেকে একজন ইউপি সদস্য পেয়ে থাকেন ৩৬০০ টাকা এবং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পাবেন ৪৪০০ টাকা। ২০১৬ সালে এই ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে এরশাদুল হক টুলু নৌকা প্রতিকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন।

একাধিক ইউপি সদস্য অভিযোগ করে বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম ২ বছর আমাদেরকে নিয়মিত ভাতা প্রদান করেছেন চেয়ারম্যান। এরপর গত তিন বছর যাবৎ আর কোন ভাতা দেননি। অথচ ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন খাত হোল্ডিং ট্যাক্স, নাগরিকত্ব, ওয়ারিশ সার্টিফিকেট, ট্রেড লাইসেন্স, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ফি, ওয়ান পারসেন্ট, হাট এসব থেকে যেসব রাজস্ব আদায় হয় সেখান থেকে প্রতি ইউপি সদস্য ভাতা হিসেবে পাবেন ৪৪০০ টাকা। তারা বলেন, আমরা সরকার থেকে ৩ মাস অন্তর অন্তর ১০হাজার ৮০০ টাকা করে নিয়মিত সন্মানি ভাতা পেয়েছি।

আর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রাপ্য ভাতা প্রতিমাসে ৪৪০০ টাকা করে গত ৩ বছর থেকে আমাদেরকে বঞ্চিত করে রেখেছেন চেয়ারম্যান। আমরা একাধিক বার এ ব্যাপারে চেয়ারম্যানকে জানালেও আজও কোন পদক্ষেপ নেয়নি। এ ব্যাপারে যেন তার কোন মাথা ব্যাথাই নেই। ফলে মাসের পর মাস জমা হতে হতে একজন সদস্যের ১লক্ষ ৫৪ হাজার ৪০০ টাকা এবং ১২জন সদস্য ও সদস্যার মিলে ১৯ লাখ ৮০০ টাকা যা বকেয়া রেখে দিয়েছেন। অথচ নিয়মিত পরিশোধ করলে আজ এত পরিমানে এই ভাতার টাকা জমা থাকত না। তাহলে তিন বছরের এই ভাতার টাকা গেল কোথায়? এনিয়ে ইউপি সদস্যসহ প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।

এদিকে নির্বাচন কমিশন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন ঘোষণা করেছেন। ফলে আরও দুচিন্তায় পড়েছেন ওই সকল সদস্যরা। হয়তো আর ২ মাস পর থেকেই নির্বাচনের প্রচারণা শুরু হবে। প্রত্যেক ওয়ার্ডে চলবে ভোটের আমেজ। ভোটের অজুহাতে ব্যস্ত থাকবে অনেকেই। যার কারণে এই টাকাগুলো এত কম সময়ে না পাওয়ারই আশঙ্কা করছেন ইউপি সদস্যরা। এই জন্য ইউপি সদস্যদের মাঝে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। করছেন সমালোচনা৷ তাই তারা তাদের প্রাপ্য ভাতার টাকা দ্রুত পাওয়ার জন্য চেয়ারম্যানসহ সরকারের সঠিক পদক্ষেপ কামনা করেছেন।

সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু বলেন, আমার ইউনিয়নের তেমন আয়ের উৎস কোথায়। বেতন ভাতা দিবো কোথায় থেকে? যেটুকু পারি তাদের দিই। আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্রাবণী রায় বলেন, ইউপি সদস্যরা অভিযোগ দিলে এ বিষয়ে একটা পদক্ষেপ নিব।

error: Content is protected !!