হোম » সারাদেশ » রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্রসহ ৩ আরসা সন্ত্রাসীকে  গ্রেফতার করছে র্যাব ১৫

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্রসহ ৩ আরসা সন্ত্রাসীকে  গ্রেফতার করছে র্যাব ১৫

কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এসময় ২টি বিদেশি অস্ত্র, একটি দেশীয় অস্ত্র ও ৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মঙ্গলবার মধ্যরাতে উখিয়ার ২০ নম্বর এক্সটেনশন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন, উখিয়ার ৪ নম্বর ক্যাম্পের আবুল হাসিম, ১২ নম্বর ক্যাম্পের হোসেন জোহার প্রকাশ আলী জোহার ও ৬ নম্বর ক্যাম্পের মো. আলম প্রকাশ শায়ের মুছা।
র‌্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তার আবুল হাসিম আরসার সেকেন্ড ইন কমান্ড, মো. আলম আরসা প্রধান আতাউল্লাহ জুনুনির দেহরক্ষী এবং আলী জোহার আরসার পরিবহন শাখার কমান্ডার। তাদের বিরুদ্ধে হত্যাসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগীতায় গোপন সংবাদে জানায় কয়েকজন আরসা সদস্য ২০ নম্বর এক্সটেনশন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটি ঘরে অবস্থান করছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার মধ্যরাতে অভিযান চালায় র‌্যাব। র‌্যাবের উপস্থিতি বুঝতে পেরে দিক-বিদিক কৌশলে দ্রুত পালায়নের চেষ্টাকালে তিন আরসা সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার করে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করে।
তিনি বলেন, আবুল হাসিম ২০১৭ সালে বাংলাদেশে এসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেন। ২০১৮ সালে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী সংগঠন আরসায় যোগদান করে। তার নেতৃত্বে ৪ নম্বর ক্যাম্প ও বর্ধিত অংশে আরসার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য নতুন করে ঘাঁটি তৈরি করেন। পরে আবুল হাসিম সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি আরসার নির্দেশনা মোতাবেক আরসার আধিপত্য বিস্তার জেন্য ক্যাম্পে সহিংসতা সৃষ্টি, মারামারি, রোহিঙ্গাদের হত্যা ও অপহরণসহ নানাবিধ অপরাধমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা হয়ে আসছিল।
এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে সন্ত্রাসী কার্যক্রম শেষে তিনি আত্মগোপনে চলে যেত। আবুল হাসিম ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এরশাদ, ইমাম হোসেন ও সাব মাঝি সৈয়দ আলম হত্যা, ৩ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আব্দুল হামিদ, মো. কাসিম ও ইউনুস হত্যা এবং ১৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাছিম হত্যাসহ ৭টি মামলা রয়েছে।
লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, হোসেন জোহার প্রকাশ আলী জোহার মিয়ানমারে থাকাকালীন আরসার সদস্য হিসেবে নিয়োজিত ছিল এবং ২০১৭ সালে বাংলাদেশে প্রবেশ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান করছে তাদের খুঁজে বের করে পুনরায় আরসায় ফেরত আনা ছিল তার মূল কাজ। ২০২২ সালে কোনারপাড়া ডিজিএফআই কর্মকর্তা হত্যাকাণ্ডের পর আরসার কমান্ডাররা মিায়ানমারের অভ্যন্তরে চলে গেলে তিনি আরসার পরিবহন শাখার কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ পায়। তার উখিয়া থানায় ২টি মামলা রয়েছে।
র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, মো. আলম প্রকাশ শায়ের মুছা ২০১৬ সালে মিয়ানমার থাকতেই আরসায় যোগদান করেন। পরে আতাউল্লাহ জুনুনির দেহরক্ষী হিসেবে কাজ করে। তার বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় ৫টি মামলা রয়েছে।  গ্রেপ্তার তিন জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করে উখিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে জানিয়েছেন র‌্যাব অধিনায়ক।
error: Content is protected !!