বগুড়া প্রতিনিধিঃ বগুড়ার ধুনটে নবজাতক বিক্রির ঘটনায় ধুনট থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে নবজাতক শিশুর মা আয়েশা আক্তার আশা। সে বেলকুচি গ্রামে তার নানা মৃত কপিল উদ্দিনের বাড়িতে নানী আছিয়া বেগমের সঙ্গে বসবাস করে।
মামলার বাদি সূত্রে জানা যায়, প্রায় বছর আগে ঢাকায় গার্মেন্টেসে চাকুরিরত অবস্থায় নওগাঁ জেলার নজিপুর এলাকার সোহেল নামে এক যুবকের সঙ্গে আয়েশার বিয়ে হয়। বিয়ের পর আয়েশা ও সোহেল ধুনটের বেলকুচি গ্রামেই বসবাস করে। আয়েশা গর্ভবতী হওয়ার কিছুদিন পর তার স্বামী সোহেল নানী আছিয়া খাতুনের সাথে বাড়িতে রেখে জীবিকার তাগিদে ঢাকায় যায়। ২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর মঙ্গলবারের ঘটনা।
ওই দিন বিকাল অনুমান ৩টা দিকে বেলকুচি গ্রামের রমজান আলীর ছেলে রফিকুর ইসলাম শাহীন আয়েশাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার নানীর বাড়ী বেলকুচি হতে আব্দুস সালাম ওরফে কোইন্টা নামের এক ব্যাক্তি অটোরিক্সা যোগে তাকে শেরপুর খেজুর তলার মাহবুব ক্লিনিকে নিয়ে সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করায়। পরে আয়েশার অজ্ঞাতে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগসাজসে অজ্ঞান থাকা অবস্থায় ধুনট উপজেলার নয়া চান্দিয়াড় গ্রামের মৃত মনছের আলীর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক ও একই গ্রামের ফরিদ উদ্দিনের ছেলে সম্রাট মন্ডলের কোন এক পরিচিত জনের নিকট নবজাতক শিশুকে বিক্রি করে দেয়। তিনি আরো বলেন, সন্তান প্রসব হওয়ার পাঁচ-ছয় দিন পর উক্ত ক্লিনিকে থাকাবস্থায় আমার ও আমার নানীর নিকট হইতে আসামীগণ জোর পূর্বক কয়েকটি ছাপানো কাগজে স্বাক্ষর নেয়। উক্ত কাগজে কি লেখা ছিল তাহা আমাকে পড়িয়া শোনায় নাই।
কাহার নিকট বাচ্চা বিক্রি করেছে আমাকে অদ্যবধি তাদের নাম ঠিকানা জানানো হয় নাই। আসামীগণ অত্যন্ত সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক হওয়ায় এবং উক্ত ঘটনা প্রকাশ করলে আমাকে খুন জখম করার হুমকী দেওয়ায় আমি তা প্রকাশ করিতে সাহস পাই নাই। উক্ত ঘটনা আমি আমার সম্পর্কীয় নানী বেলকুচি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকাকে স্বেচ্ছায় খুলে বললে আমার সম্মতিক্রমে তিনি আমার কথা ভিডিও ধারন করেন। পরবর্তীতে সাংবাদিকগণ বিষয়টি জানতে পারেন এবং খবর ছাপায়।
খবর প্রকাশিত হওয়ার পর আসামীগণ ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ রবিবার রাত ১০ টার দিকে ঘটনার সাথে জড়িতরা আমার নানীর বাড়ীতে এসে আমাকে ও আমার নানীকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এবং সন্তান তাদের আত্মীয়ের নিকট আছে বলে তারা জানায়। গত ৫ ফেব্রুয়ারী রফিকুল ইসলাম শাহীনের ছেলে ফাহিম আমার নানীর বাড়ীতে এসে আমাকে আমার ভিডিও বক্তব্য প্রত্যাহার করার জন্য হুমকি দিতে থাকে। তখন বাড়ীর বাহির হইতে কেউ একজন পুলিশ এসেছে বলে শব্দ করলে তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমি বাদি হয়ে ধুনট থানায় একটি মামলা দায়ের করি।
ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ সৈকত হাসান জানান, নবজাতক বিক্রির ঘটনায় একটি মামলার কপি হাতে পেয়েছি। নবজাতকের মা আয়েশা বাদি হয়ে এই মামলা করেন।
আরও পড়ুন
জয়পুরহাটে বাজার স্থিতিশীল রাখতে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা
চকরিয়াতে শিক্ষার্থীদের ৫ ঘন্টা প্রধান সড়ক অবরোধ
সরিষাবাড়ীতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ ও গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত