হোম » সারাদেশ » দোহাজারী স্টেশনে যাত্রী ওঠানামার ব্যবস্থার দাবি দোহাজারীবাসীর স্বপ্নের ট্রেনে চড়ে কক্সবাজার যেতে না পারার হতাশা 

দোহাজারী স্টেশনে যাত্রী ওঠানামার ব্যবস্থার দাবি দোহাজারীবাসীর স্বপ্নের ট্রেনে চড়ে কক্সবাজার যেতে না পারার হতাশা 

মো. শহীদুল ইসলাম, চন্দনাইশ : চট্টগ্রামের দোহাজারী পৌর এলাকার স্বপ্নের ট্রেন ঢাকা থেকে কক্সবাজার গেলেও দক্ষিণ চট্টগ্রামে কোথাও থামছে না। এতে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষ স্বপ্নের ট্রেনের যাত্রী হতে পারছে না।
যদিও দোহাজারী থেকে রেললাইন সম্প্রসারিত হয়ে কক্সবাজার পর্যটন নগরীতে সংযুক্ত হয়েছে। সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কি.মি. নতুন রেলপথ নির্মিত হয়।
বর্তমানে ২টি আন্তঃনগর ট্রেন ঢাকা থেকে কক্সবাজার সোয়া ৯ ঘণ্টায় যাতায়াত করছে। কোনো ধরনের লোকাল ট্রেন এ পর্যন্ত সংযুক্ত করা হয়নি এ লাইনে।
গত বছর ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার পর দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনে একই বছর ১ ডিসেম্বর থেকে বাণিজ্যিকভাবে রেল চলাচল শুরু হয়। দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষ স্বপ্ন দেখেছিল ট্রেনে করে দোহাজারী থেকে পর্যটন নগরী কক্সবাজার, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া-আসা করবে।
কিন্তু দোহাজারী পৌর এলাকার স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল। দোহাজারী রেলওয়ে স্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনের কোনো স্টপেজ না রাখায় শুরুতেই স্বপ্নের ট্রেনে চড়তে পারছে না দোহাজারী পৌর এলাকার মানুষ। এমনকি লোকাল ট্রেনও চালু করা হয়নি এই লাইনে।
অথচ বাণিজ্যিকভাবে রেল চলাচল শুরু হওয়ার খবরে শত শত মানুষ প্রতিদিন দোহাজারী রেলওয়ে স্টেশনে আসছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার আগ্রহ নিয়ে। কিন্তু যেতে না পেরে মনে দুঃখ নিয়েই ফিরে গেছে শুরু থেকে।
১৯৩১ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রাচীনতম দোহাজারী রেলওয়ে স্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনের স্টপেজ না থাকায় ট্রেন থামছে না। দোহাজারী পৌরসভার মেয়র মো. লোকমান হাকিম বলেছেন, ব্রিটিশ আমলের আখেরি স্টেশন দোহাজারী থেকে পর্যটন স্পট বান্দরবানের দূরত্ব ২৯ কিলোমিটার, চন্দনাইশ সদরের দূরত্ব ১২ কিলোমিটার, সাতকানিয়ার দূরত্ব ৯ কিলোমিটার ও আনোয়ারার দূরত্ব ৩০ কিলোমিটার।
বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাতকানিয়ার বাইতুল ইজ্জতে অবস্থিত বিজিবি ট্রেনিং সেন্টারের দূরত্বও মাত্র ১৫ কিলোমিটার। এ সকল অঞ্চল থেকে দোহাজারী মধ্যবর্তী হওয়ায় যাতায়াত অত্যন্ত সহজ ও সাশ্রয়ী হবে বিধায় দোহাজারীতে স্টপেজ করলে এ সকল স্থানের রেলযাত্রীদের যাতায়াত সহজ হবে।
এছাড়া দোহাজারী ও আশেপাশে রয়েছে সরকারি বড় বড় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। চন্দনাইশ উপজেলা আ.লীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর বলেছেন, প্রতিদিন আমাদের বাড়ির পাশ দিয়েই কক্সবাজার যাচ্ছে স্বপ্নের ট্রেন।
অথচ আমরা কেউ স্বপ্নের ট্রেনের যাত্রী হতে পারছি না, বিষয়টি ভীষণ বেদনাদায়ক। বীর মুক্তিযোদ্ধা জাফর আলী হিরু বলেছেন,দক্ষিণ চট্টগ্রামের দোহাজারী পৌর এলাকার মানুষের প্রত্যাশা ছিল বাণিজ্যিক রেল চলাচলের শুরু থেকেই দোহাজারী স্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনের স্টপেজ থাকবে।
এখান থেকে সাধারণ মানুষ পর্যটননগরী কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া-আসা করতে পারবে। কিন্তু শুরুতেই দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষ হতাশ। রেললাইন সম্প্রসারণের পূর্বে চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত যে কমিউটার ট্রেন চলাচল করতো, অন্তত সেই ধরনের ট্রেন দিয়ে হলেও দোহাজারী থেকে কক্সবাজারসহ বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচলের ব্যবস্থা করতে পারতো।
দোহাজারী পুরনো রেলস্টেশন হিসেবে সুনাম ধরে রাখতে দোহাজারীতে আন্তঃনগর ট্রেনের স্টপেজ দিতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি।
error: Content is protected !!