হোম » Uncategorized » সুন্দরবনের বাঘের হানা আতঙ্কে ৪ গ্রামের মানুষ

সুন্দরবনের বাঘের হানা আতঙ্কে ৪ গ্রামের মানুষ

রিপোর্টার,বাগেরহাট: বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলায় আবারো হানা দিয়েছে সুন্দরবনের একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার। বৃহস্পতিবার রাতে খেজুরবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভোলা নদী ভরাট হওয়ার কারণে সুন্দরবন সংলগ্ন এই লোকালয়ে মাঝেমধ্যে বাঘ ঢুকে পড়ছে। লোকালয়ে বাঘ হানা দেওয়ার ঘটনায় চরম আতঙ্কে কাটছে ৪টি গ্রামের মানুষের নির্ঘুম রাত । এই অবস্থায় বনরক্ষীদের একটি দল সুন্দরবনে বাঘ ফিরিয়ে নিতে গ্রামবাসীকে সাথে নিয়ে টহল দেয়া শুরু করেছে।
শরণখোলার ধানসাগর ইউনিয়নের ১ ন¤\^র ওয়ার্ডের মে¤\^র মো. আবুল হোসেন খান জানান, সুন্দরবন থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরত্বে তাদের বাড়ি সংলগ্ন মাছের ঘের। তার ছেলে মো. শাহিন খান বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মাছের ঘের পাহারা দিতে যান। এসময় টর্চ লাইটের আলোতে দেখেন একটি বাঘ ঘেরের মধ্যে বসে রয়েছে। সাথে সাথে ছেলের ডাক চিৎকারে তিনি এগিয়ে আসলে বাঘটি দৌড়ে পালিয়ে যায়। তবে বাঘটি বনে ফিরে গেছে বা লোকালয়ে লুকিয়ে রয়েছে কিনা- তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। এরপর থেকে রাতভর বনরক্ষী ও গ্রামবাসী মিলে পাহারা দিয়েছেন।

সুন্দরবনের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা মো. আব্দুস সবুর জানান, তারা লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়ার খবর পেয়ে কমিউনিটি পেট্রোলিং গ্রæপ (সিপিজি), ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম (ভিটিআরটি) ও এলাকাবাসীদের নিয়ে ওই গ্রামসহ আশপাশের ৪টি গ্রামে পাহারা বসিয়েছেন। বাঘটি লোকালয়ে পাওয়া গেলে নিরাপদে ফিরিয়ে দেয়া হবে।

জানা গেছে, ভোলা নদী ভরাট হয়ে গ্রামের সাথে মিশে যাওয়ার কারনে প্রায়ই শরণখোলা উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন রাজাপুর, দাসেরভারানি, খেজুরবাড়িয়া ও টগড়াবাড়ি এলাকার লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়ছে। বৃহস্পতিবার রাতে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার লোকালয়ে আবুল হোসেন মে¤া^ারের মাছের ঘেরে বাঘ দেখতে পাওয়ার আগে ৩১ মার্চ রাজাপুর গ্রামের সোবাহান হাওলাদার বাড়িতে ঢুকে একটি মহিষকে আক্রমণ করে বাঘ। এভাবে লোকালয়ে বাঘ এসে প্রায়ই হানা দিচ্ছে। এঘটনায় এই ৪টি গ্রামের মানুষের মধ্যে চরম বাঘ আতঙ্ক বিরাজ করছে। লোকালয়ে আসা বাঘ যাতে মানুষের হাতে মারা না পড়ে এবং সুন্দরবনে ফেরানো যায়- সেজন্য বনরক্ষী ও গ্রামবাসী মিলে পাহারা দেয়া দিচ্ছে। বন বিভাগ সব সময় সতর্ক রয়েছেন।

লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়ার বিষয়ে খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, গত ২৮ মার্চ বন বিভাগের এক সভায় লোকালয়ে যাতে বাঘসহ বণ্যপ্রাণী প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সুন্দরবনের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের ৬০ কিলোমিটার লম্বা বেড়া দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন অর্থ ছাড় পাওয়া গেলে আগামী এক বছরের মধ্যে এ কাজ শুরু হবে। এছাড়া সুন্দরবন সুরক্ষা প্রকল্পের মাধ্যমে ভোলা নদী পুনঃখনন করা হবে বলেও তিনি জানান।

error: Content is protected !!