হোম » প্রযুক্তি » সন্তানকে বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে ঘরে বসেই শিক্ষার্থীদের তথ্য পাচ্ছে অভিভাবক

সন্তানকে বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে ঘরে বসেই শিক্ষার্থীদের তথ্য পাচ্ছে অভিভাবক

হুমায়ুন কবির সুমন, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সন্তানকে বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দুর-চিন্তায় থাকার দিন শেষ। এর সমাধান করেছেন সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার হৈমবালা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়টি। এবার ঘরে বসেই শিক্ষার্থীদের তথ্য জানতে পারবে অভিভাবকরা। এতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার বেড়েছে।

সিরাজগঞ্জ জেলার প্রথম স্মার্ট বিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করা হৈমবালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা, অনলাইনে বেতন, ডিজিটাল ক্লাস, পরীক্ষা ফি গ্রহণ করলেই মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে অভিভাবকরা নিশ্চিত হতে পারছেন তাদের সন্তানেরা স্কুলে কখন যাচ্ছে, কখন স্কুল থেকে বের হচ্ছেন। আর রশিদ সিস্টেম নয়, অনলাইনে বেতন বা পরীক্ষা ফি দিয়ে মেসেজের মাধ্যমে নিশ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে বিদ্যালয়টির এমনই দৃশ্য দেখা গেছে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১৮ জুলাই আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে স্মার্ট বিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর পরেই শিক্ষার্থীরা লাইনে দাঁড়িয়ে পাঞ্চ মেশিনে নিজেদের আইডি কার্ড পাঞ্চ করে হাজিরা দিয়ে ক্লাসে প্রবেশ করেন। আইডি কার্ড পাঞ্চ করার পর ডাটা উঠে যাচ্ছে হাজিরা শিটে। সেই সঙ্গে একটি মেসেজ যাচ্ছে তাদের অভিভাবকদের মোবাইল ফোনে। অভিভাবকরা নিশ্চিত হচ্ছেন তাদের সন্তান বিদ্যালয়ে গিয়েছে কিনা। একই সঙ্গে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের সময় মতো উপস্থিতি মূল্যায়ন রিপোর্ট, পরীক্ষার সিট প্লান, পরীক্ষার ফলাফল, বেতন ফি জমা দেওয়ার ভোগান্তি কাটিয়ে প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন সব কিছুই সহজে করা যাচ্ছে। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ক্লাবসহ স্মার্ট বিদ্যালয়ের সব সুবিধাই পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এতে বিদ্যালয়ের প্রতিটি কক্ষ শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ। শিক্ষকরাও পাঠদান করে আনন্দ পাচ্ছেন।

হৈমবালা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলেন, জেলায় প্রথমবারের মতো স্মার্ট বিদ্যালয় ঘোষণা করা হয়েছে। এখানে আমরা আইডি কার্ড পাঞ্চ করে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করছি। ফলে আমাদের মা-বাবা ঘরে বসেই নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন। এতে বিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুন্দর পরিবেশ ফিরে এসেছে। কেউ ক্লাস ফাঁকি দিতে পারে না। আমরা এ বিদ্যালয়ের ছাত্রী হিসেবে গর্বিত।

সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে নিশ্চিন্তায় থাকা অভিভাবকেরা বলেন, হৈমবালা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়টি স্মার্ট বিদ্যালয় হওয়ার পর থেকে আমাদের সন্তানরা অনেকটাই নিরাপদ। কারণ মোবাইল মেসেজে আমরা জানতে পারছি সন্তানেরা এখন কোথায় আছে। তাছাড়াও বেতন, পরীক্ষা ফি, বিদ্যালয়ের যাবতীয় তথ্য জানতে পারছি অনলাইনের মাধ্যমেই। ফলে সবকিছু খুব সহজ হয়ে গেছে।

হৈমবালা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মোছা. শামীম আরা বলেন, আমাদের ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তে বিদ্যালয়টি সিরাজগঞ্জে প্রথম স্মার্ট বিদ্যালয় করা হয়েছে। আইডি কার্ডে পাঞ্চ করে শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করে। এতে উপস্থিতির হার অনেক বেড়েছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শেখ সুলতান মাহমুদ জানান, সরকার স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করার প্রধান হাতিয়ার হবে ডিজিটাল সংযোগ। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা স্মার্ট বিদ্যালয় ঘোষণা করেছি। স্মার্ট বিদ্যালয়ের সব সুযোগ সুবিধা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সকালে স্কুলের নাম করে সন্তানেরা বাড়ি থেকে বের হয়ে বান্ধবীদের সঙ্গে ঘুরতো। এখন আর সেই সুযোগ পাবে না। একারনেই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার বেড়েছে অনেক।

error: Content is protected !!