হোম » অন্যান্য বিভাগ » এই পৃথিবীতে আপনার  কর্মের ফল আপনাকে  ভোগ করতে হবে, সেটা ভালো হোক বা খারাপ

এই পৃথিবীতে আপনার  কর্মের ফল আপনাকে  ভোগ করতে হবে, সেটা ভালো হোক বা খারাপ

মোহাম্মদ হানিফ গোলজার হানিফ নোয়াখালী প্রতিনিধি : পৃথিবীতে মানুষের প্রকৃত বিচারে তাইতো তার জন্ম-পরিচয় তেমন গুরুত্ব বহন করে না। বরং তার কর্মের অবদানের মাধ্যমেই মানুষ পায় মর্যাদার আসন, হয় সে বরণীয় স্মরণীয় একটা মানুষের পরিচয় তার কর্মের দ্বারা হয়।
কর্মের মাধ্যমে আমরা আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলি পূর্ণ করতে পারি। আমাদের জীবনে কর্ম একটি শক্তির মতো যা আমাদেরকে জীবনে সফল হতে সাহায্য করে।
আমরা যখন কর্ম করি তখন আমরা জ্ঞান, কাজের দক্ষতা, পরিশ্রম এবং সংগঠনশীলতা সহ অনেক কিছু অর্জন করি। একটি সঠিক কর্ম আমাদেরকে জীবনের সাফল্য পেতে সহায়তা করে
মানুষের জন্ম পরিচয়ের চেয়ে তার কর্মই সর্বাপেক্ষা তাৎপর্য বহন করে। তাই মানুষকে তার কর্মগুণের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা উচিত
সমাজে এক শ্রেণির মানুষ আছে যারা বংশ আভিজাত্যে নিজেদের সম্ভ্রান্ত মনে করেন। তারা বংশ মর্যাদার অজুহাতে সমাজে বিশেষ মর্যাদা দাবি করেন। কিন্তু তাদের এই প্রয়াস বাস্তবতা বিবর্জিত ও হাস্যকর। সমাজের নিচু তলায় জন্ম নিয়েও মানুষ কর্ম ও অবদানে বড় হতে পারে। মানব সমাজের ইতিহাসে এ রকম উদাহরণ অজস্র।
মানুষ “আশরাফুল মাখলুখাত” অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে বিবেচিত। মানুষ তার এই শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে জন্মের শ্রেষ্ঠত্বের মধ্য দিয়ে নয়, কর্মের শ্রেষ্ঠত্বের দ্বারা। জন্মের ব্যাপারে মানুষের নিজের কোনো হাত নেই। উঁচু বা নিচু, ধনী বা দরিদ্র পরিবারে তার জন্ম হওয়াটা তার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে না। তবুও মানুষকে বংশ বা ধর্মের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয়। যা ন্যায়সঙ্গত নয়।
পদ্ম ফুলের সৌদর্যই বড়। পঙ্কে জন্মেছে বলে তাকে হেয় গণ্য করা হয় না। তেমনি মানুষের কর্মের সাফল্যই বড়, জন্ম-পরিচয়ে মানুষের বিচার হীনমন্যতারই পরিচায়ক। বস্তুত প্রকৃতির রাজ্যে মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ নেই। সমাজের এক দল মানুষ মানুষের উপর আধিপত্য স্থাপন করে ছোট বড় ধনী-গরিব ইত্যাদি ভেদাভেদ সৃষ্টি করেছে। ধর্মীয় ব্যবধান রচনা করেছে মানুষই।
 ফলে সমাজে মানুষে মানুষে আপাতদৃষ্টে ভেদাভেদ সৃষ্টি হয়েছে। তাই যে-কোন পেশা, যে-কোন কাজ মানুষ করুক না কেন, তা সমাজে গুরুত্বহীন নয়। তাকে অপ্রয়োজনীয় ও অবজ্ঞেয় করা সুস্থতার পরিচয়ক নয়। মানুষ যেখানেই জন্মগ্রহণ করুক বা যে কাজই করুক , সে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছে কিনা সেটাই বিবেচ্য।
মানুষের কল্যাণে সমাজের অগ্রগতিতে সে যতটা অবদান রাখে তার ভিত্তিতেই তাকে মূল্যায়ন করা হয়। সে বংশ পরিচয়ের অজুহাতে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ, ক্ষমতা ও দম্ভের শক্তিতে মানুষের ওপর জবরদস্তি করে সমাজে মর্যদার আসন লাভ করা যায় না।
নিচুকুলে জন্মগ্রহণ করলেই যে নিচু হতে হবে এমন কোনো নিয়ম নেই। তার কৃতকর্মই তাকে উঁচু নিচুর পরিচয় করিয়ে দেয়। তাই মানুষ যেখানেই জন্মগ্রহণ করুক, যে কাজই করুক, সে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছে কি না সেটাই বিবেচ্য বিষয়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, বংশগৌরবই মানুষের যথার্থ পরিচয় নয়। তাই জন্ম কোথায় হলো এ বিষয়টা একেবারে অযৌক্তিক ও অবান্তর।
বরং মানুষের মহৎ কর্মই তার আসল পরিচয় বহন করে।মহান এই ব্যক্তিগনের মধ্যে কাজী নজরুল ইসলাম, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এর নাম না বললেই নয়, যারা জন্মে নয় বরং কর্মের মাধ্যমে নিজের পরিচয় আমাদের জানান দিয়ে গেছেন। তাই শত সহস্র স্যালুট এই মহানদের।তাই আবারো বলতে চাই কর্মই মানুষের জীবনের আসল পরিচয়।
জন্ম-পরিচয়ের উর্ধ্বে আপন কর্ম পরিচয় তুলে ধরাই মানুষের ব্রত হওয়া উচিত ।
কর্মের মাধ্যমেই মানুষ  নিজেকে সকরের নিকট পরিচিত করে তোলে। মানুষ  রক্তে মাংসে মানুষ হলেও প্রতিটি মানুষ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত  এবং স্বপরিচয়ে পরিচিত করে তোলে  একমাত্র কর্মের মাধ্যমেই। জগদ্বিখ্যাত মানুষ গুলোর জীবনী পর্যালোচনা  করলে দেখতে পাওয়া যায় রক্তে মাংসে গড়া এসব মানুষ গুলোর সাথে সাধারণ মানুষের পার্থক্য শুধু কর্মেই।
তাই আমাদের প্রতিদিন এমন ভাবে কাজ করতে হবে যেন সকালবেলা যে প্রতিজ্ঞা নিয়ে ওঠো ঘুমানোর সময় যেন সে সন্তুষ্ট নিয়ে ঘুমাতে পারো।আমাদের জীবন আমাদের ইচ্ছার উপর নয় আমাদের কর্মের উপর দন্ডায়মান ।
error: Content is protected !!