হোম » অন্যান্য বিভাগ » মহেশখালীতে মেয়াদোত্তীর্ণ ভ্যাকসিন পুশ করায় মারা গেল দুই খামারির ২৫ টি ছাগল ১টি গরু 

মহেশখালীতে মেয়াদোত্তীর্ণ ভ্যাকসিন পুশ করায় মারা গেল দুই খামারির ২৫ টি ছাগল ১টি গরু 

মোহাম্মদ খোরশেদ হেলালী: কক্সবাজারের মহেশখালীতে উপজেলা উপ-সহকারী প্রাণী সম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জাকির হোসেন মেয়াদোত্তীর্ণ ভ্যাকসিন পুশ করায় তার ভুল চিকিৎসায় তিন খামারির গৃহ পালিত ২৫টি ছাগল ও ১টি গরু মারা গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 
ভুক্তভোগী খামারি ইব্রাহিম মোহাস্মদ মেহেদী হাসান ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অপ চিকিৎসার বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে চট্টগ্রাম বিভাগিয় প্রাণী সম্পদ পরিচালকের কার্যালয়সহ স্থানীয় প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এবং সম্প্রীতি ওই কর্মকর্তার শাস্তির দাবিতে উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের প্রধান সড়কের চালিয়াতলি মানববন্ধন করেছেন ভোক্তভোগি ও স্থানিয় এলাকাবাসী। ওই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে উক্ত কর্মকর্তার শাস্তির দাবি করে তাঁদের ক্ষতিপূরণের দাবি জানান তারা।
জানাগেছে, দায়েরকৃত অভিযোগের ভিত্তিতে বিভাগীয় প্রাণী সম্পদ দপ্তরের চট্টগ্রামের পরিচালক একে এম হুমায়ুন কবির মহেশখালীতে প্রাণী সস্পদ বিভাগীয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। তারই প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা নন্দন কুমার গত ১৬ আগষ্ট সরেজমিনে কালারমারছড়া চালিয়াতলি ঘটনাস্থলে এসে ভোক্তভোগি কামারিদের অভিযোগ শুনে প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে চলে যান।
পরবর্তীতে ১৯ আগষ্ট শনিবার একইস্থানে চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর চকরিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকতা মোহাম্মদ আরিফ উদ্দিনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি সরেজমিনে তদন্ত করেন। ভোক্তভোগিদের সাথেও কথা বলেন এবং চিকিৎসায় ব্যবহারিত বিভিন্ন ধরনের ঔষদ জব্দ করেন।
সর্বশেষ তৃতীয় দফা বিভাগীয় প্রাণী সম্পদ দপ্তরের চট্টগ্রামের পরিচালক এটি হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে একটি টিম ২৮ আগষ্ট (সোমবার) সকাল ১০ টা থেকে বিকাল পর্যন্ত উপজেলার কালারমারছড়ার ঝাপুয়া -চালিয়াতলি বিভিন্ন দোকান থেকে প্রায় ৩ বস্তা ভ্যাকসিন জব্দ করেন। যেখানে বেশিরভাগ ভ্যাকসিন ছিল মেয়াদোত্তীর্ণ।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের উত্তর নলবিলা গ্রামের বাসিন্দা কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ইব্রাহিম মোহাম্মদ মেহেদি হাসান পড়ালেখার পাশাপাশি বাড়ির আঙ্গিনায় ছোট পরিসরে ছাগলের কামার করেন। আর একই এলাকার গরুর কামার করেন ইমতিয়াজ উদ্দিন ওয়ামের ১ গরু মারা যায়।
অপরদিকে পুতুল তার সহোদর সাজ্জাদ  পেশায় তারা দুই ভাই গাড়ী মেকারনিক্স। গাড়ী মেকারনিক্সের পাশাপাশি  তারা নিজ বাড়িতে একটি ছাগলের খামার গড়ে তোলেন। সম্প্রীতি তাদের পশু পালনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে উপজেলা উপ-সহকারী প্রাণী সম্পদ কর্মকতা নিজে তাঁদের কামারে এসে ভ্যাকসিন পুশ করার পরামর্শ দেন।
তার কথা মতো খামারিরা ভ্যাকসিন দিতে রাজি হলে উপজেলা উপ-সহকারী প্রাণী সম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জাকির হোসেন
সম্প্রীতি উল্লেখিত ওই তিন খামারির কামারে এসে ওই কর্মকতা পালাক্রমে ৩দিন ২৫টি ছাগল ও ১টি গরুকে ভ্যাকসিন পুশ করেন।  ভ্যাকসিন দেওয়ার পর ওই দিন বিকাল ৪টায় দুইটি গাভী ছাগল মারা যায় কলেজ ছাত্র ইব্রাহিমের এর পর অপর কামারি পুতুল আর সাজ্জাদের ১টি গাভী ছাগল মারা যায়। ইমতিয়াজের ১টি গরু মারা যায়। পরে ছাগল গুলো অসুস্থ হয়ে পড়ে। খিচুনি ও লাফালাফি করে পরবর্তীতে নিস্তেজ হয়ে মরতে শুরু করে।
পরে কামারিরা গৃহ পালিত পশু মরতে শুরু করলে উপজেলা উপ-সহকারী প্রাণী সম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তার উপর সন্দেহ শুরু হয়। এক পর্যায়ে কামারি নিজেরা তার কাছ থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ ভ্যাকসিন জব্দ করে কালারমারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তারেক শরীফের নির্দেশে স্থানিয় মেম্বার কাদেরের হেফাজতে জমাদেন। পরে ২৮ আগষ্ট বিভাগীয় প্রাণী সম্পদ দপ্তরের চট্টগ্রামের পরিচালক এটি হুমায়ুন কবির এসে এসব ভ্যাকসিন জব্দ করেন। যেখানে বেশির ভাগ মেয়াদোত্তীর্ণ ভ্যাকসিন ছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগীয় প্রাণী সম্পদ দপ্তরের চট্টগ্রামের পরিচালক একে এম হুমায়ুন কবির ভ্যাকসিন জব্দ করার কথা সত্যতা স্বীকার করেছেন। এবং ওই অসাধু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগিয় ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানান। তিনি আরোও জানান ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের সংশ্লিষ্টদের প্রশাসনকে জানানোর জন্য আমার পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
error: Content is protected !!