হোম » অন্যান্য বিভাগ » খুরুশকুলে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক)কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বহুতল ভবন নির্মাণ 

খুরুশকুলে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক)কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বহুতল ভবন নির্মাণ 

মোহাম্মদ খোরশেদ হেলালী: যেখানে মাষ্টারপ্ল্যান অনুযায়ী ‘হ্যাচারী জোন’ সেই এলাকাতেই অবৈধভাবে আবাসিক বহুতল ভবন নির্মাণ করছে একটি সিন্ডিকেট। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ একাধিকবার নোটিশ দিলেও কোন কথায় মানছে না শাওন আচার্য এবং তার সহযোগী  পিতা নেপাল আচার্য, ভাই সুজয় আচার্য, কথিত স্ত্রী রিমি আক্তার।
খুরুশকুলের হাটখোলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে প্রনতি কুটির প্রকাশ হিন্দু বাড়ি নামে এই ভবন গড়ে তুলছে তারা। তাদের পার্শ্ববর্তী আনিছুর রহমান নামে প্রতিবেশী এই অনুমোদনবিহীন ও অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ বন্ধে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
সেই অভিযোগ আমলে নিয়ে, অভিযুক্ত শাওনকে একাধিকবার ভবন নির্মাণ বন্ধ রাখার নোটিশ করা হয়।  স্থানীয় খুরুশকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছেও তারা আশ্বস্ত করেছিলেন নিয়মনীতি মেনেই ভবন নির্মাণ করবে। অথচ পার্শ্ববর্তী বসতবাড়ির ক্ষতি হয় এমন কাজ করার অভিযোগ উঠেছে শাওন,সুজয় ও রিমি আক্তারের  বিরুদ্ধে।
অভিযোগমতে, বিগত চার বছর আগে ঢাকার বাসিন্দা আনিছুর রহমান ১২ শতক  ক্রয়কৃত জমিতে ভবন তৈরি করে,পরিবেশবান্ধব ভাবে, প্রকৃতির সান্নিধ্যে বসবাস করিয়া আসছেন। দুই বছর পর, বাকি কিছু জমি ক্রয় করে বিভিন্ন উৎপাত শুরু করে,বর্তমানে অনুমতিবিহীন ভবন নির্মাণ করছে শাওন গং। কথিত আছে, কক্সবাজার শহরের বাহার ছড়ার এক মুসলিম পরিবারের এনজিও কর্মী নারীকে বিয়ে করে ওই এলাকায় ওঠে, সহযোগীদের তৎপরতায় রাতের আধাঁরে বাড়ি তৈরি করছে শাওন নামের এই যুবক। শুধু তাই নয়! দিন গড়ালেই সন্ধ্যা থেকে নিষিদ্ধ নেশা এবং মদের আড্ডা চলে বলে ভিড় করা জনতার কাছ থেকে শোনা যায়। ইবাদতের পরিবেশ নষ্ট হয়, সংক্রামক রোগবাহী পশুপাখির মলমূত্রের গন্ধে দূষিত চারপাশ। একেবারেই পাশাপাশি আনিছুর রহমান বিষয়টি নিয়ে চরম অস্বস্তিতে থাকেন, তাদের বারংবার বলা হলেও তারা কোন ভাবেই র্কণপাত করেন না।
ভুক্তভোগী প্রতিবেশী রহমান জানান, শুরুতে অস্থায়ী স্থাপনা তৈরি করার কথা বলে বাউন্ডারি দেয়াল ঘেঁষে এক ইঞ্চি ফাঁকা না রেখে  ইট ও টিনের ঘর করতে গিয়ে ড্রিল, ভাংচুর করে বাথরুম ফিটিংস লাগায় শাওন ও সুজয় গং। নৈতিক কারণে ভদ্রোচিত ভাবে বারণ করলে হুমকি ধমকি সহ বিভিন্ন অসদাচরণ করে, স্থানীয় সর্দার, শালিসদের জানানো হলে দুরত্ব রেখে ঘর করার নির্দেশ দেয়া সত্বেও খামখেয়ালি করে ঘর তুলতে থাকে এবং সম্পূর্ণ বানোয়াট, ভিত্তিহীন, মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে মামলা দায়ের করে স্থানীয় চারজন ব্যক্তিসহ আনিছুর রহমানকে আসামী করা হয়। সেই মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা কোনোরকম সম্পৃক্ততা পাননি। স্থানীয়দের চাপের মুখে মামলা প্রত্যাহার করে নিলে ও উক্ত দুষ্ট প্রকৃতির মানসিকতার চক্রান্ত থামেনি। এতদসত্বেও বাউন্ডারি দেয়ালের পাশে ইমারত নির্মাণ আইন মেনে স্থাপনা করবে এই মর্মে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান এর মাধ্যমে আপোষনামা করা হয়েছে।
দুঃখজনক হলেও সত্যি যে দিনের পর দিন তারা আরো বেপরোয়া হয়ে বিভিন্ন দুর্ব্যবহার সহ সীমানা দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত করা শুরু করে, স্যুয়ারেজ লাইন, পাইলিং, বেইজ নির্মাণ করতে গিয়ে সীমানা দেয়ালের একাংশ ভেঙে ফেলে, বিমের নীচের মাটি সরিয়ে নেয়, যেসবের ছবি এবং সাক্ষী বিদ্যমান। দৈর্ঘ্য প্রস্থ দুইদিকের চৌহদ্দির মালিক হওয়াতে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছেন আনিছুর রহমান ও তার পরিবার।
লিখিত বক্তব্যে আনিছুর রহমান জানান, গত কয়েক মাস যাবত স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের উদ্দেশ্যে কাজ শুরু করার প্রাক্কালে আবারো মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তাকে এবং সিনিয়র সিটিজেন পারিবারিক সদস্যকে জড়িয়ে ১০৭/১১৭ ধারায় মামলা রুজু করেই ক্ষান্ত হয়নি! সমন/ নোটিশ গোপন করে ওয়ারেন্ট ইস্যু করে গ্রেফতার করে হেনস্তা করা হয় তাদের। মূলত অনৈতিকভাবে অনিয়ম তান্ত্রিক বাড়ি ভবন তৈরি করার টার্গেট নিয়ে মিথ্যা হেনস্তা করে আমার মুখ বন্ধ করার সুচতুর কৌশল অবলম্বন করে আসছে তারা।
ইমারত নির্মাণ বিধিমালার আলোকে যে কারো ক্রয়কৃত জমিতে বাড়ি ভবন তৈরি করার অধিকার যেমন আছে, তেমনি প্রতিবেশীর অধিকার সহ সামাজিক শান্তি অক্ষুণ্ণ রাখা একান্ত জরুরী। কক্সবাজার জেলার স্থায়ী কিংবা জন্মসূত্রে বাসিন্দা না হওয়াতে বৈষম্যের শিকার হতে হবে এমনটা কাম্য নয়! বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে প্রচলিত আইন অনুযায়ী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত  সহ যেকোনো অপরাধের বিরুদ্ধে  বিচার প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা যে কারোর আছে, ভুক্তভোগী হিসেবে এই পরিস্থিতি বিবেচনার বিষয়!
কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃপক্ষ,জেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহ সর্বস্তরের সম্মানিত প্রশাসকগণ এবং যথাযথ কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই হতাশাজনক বৈষম্য এবং অবিচারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে প্রতিকার চাচ্ছি।
পরিকল্পিত নগরী, শহর এবং শহরতলী গড়তে আগামী প্রজন্মের জন্য সুন্দর পরিবেশ বিনির্মাণে নিয়োজিত মহান উদ্দেশ্য সফল করতে হলে এইসব দুষ্টচক্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রয়োজন বলে মনে করি।
এদিকে অনুমোদনবিহীন ভবন নির্মাণ ও আনিছুর রহমানকে হেনস্থার বিষয়ে সরাসরি কথা হলে শাওন আর্শ্চয্যে জানান, লিগাল প্রসিডিউর মেনে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি,’তারা অনুমোদন দেয়নি এটি তাদের ব্যর্থতা! আনিছুর রহমানের অভিযোগ মিথ্যা ও হয়রানিমূলক বলে দাবী করেন শাওন আচর্য।
error: Content is protected !!