শাহজাদপুর উপজেলার দ্বারিয়াপুর মন্ডলপাড়া গ্রামের মৃত আবু বক্কার মন্ডলের বাড়িতে গত ২০২২ সালের ১০ জুন সকালে আসলাম সুবেদার গংরা জোরপুর্বক তাদের বাড়ি থেকে বের করে ঘরে তালা লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
এঘটনায় গত চলতি বছরের ৭মে আকরাম হোসেন ময়দুল বাদি হয়ে বাংলাদেশ পুলিশ হেটকোয়ার্টার (আইজিপি) বরাবর পুলিশ সদস্যে বেআইনী কর্মকর্তাণ্ডের বিরুদ্ধে একটি লিখিত দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২০১০ সালের ৬ জুন আসলাম সুবেদার রাজশাহী রেঞ্জ থেকে ছুটিতে বাড়িতে এসে বড় ভাই আকরাম হোসেন ময়দুলসহ স্ত্রী ও সন্তানদের বসতবাড়ির শৌচাগারের দরজা জোরপুর্বক তালা ঝুলিয়ে দেয়।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালের ১০ জুন রাতে মৃত আবু বক্কার মন্ডলের ছেলে আসলাম সুবেদার, সেরাজুল মন্ডল, আইয়ুব মন্ডল, সিদ্দিক মন্ডল, আনছার আলী মন্ডল ও মৃত আনছার আলী মন্ডলের স্ত্রী টুনি খাতুন, ছেলে রাসেল মন্ডল, আলী হোসেন মন্ডলের ছেলে রিপন মন্ডল, মৃত হযরত আলী মন্ডলের ছেলে জহুরুল মন্ডল, সেরাজুল মন্ডলের স্ত্রী সাথি খাতুন, আসলাম মন্ডলের স্ত্রী শাহিনুর খাতুন, সিদ্দিক মন্ডলের স্ত্রী লতা খাতুন, আইয়ুব আলী মন্ডলের স্ত্রী সেলিনা খাতুন, রিপন মন্ডলের স্ত্রী পপি খাতুন, রাসেল মন্ডলের স্ত্রী বিথি খাতুন, মোকাদেসুর রহমানের স্ত্রী রোউপন খাতুনসহ ভারাটিয়া বেশকয়েকজন মিলে কোন কারণ ছাড়াই আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের জোরপুর্বক বসতবাড়ি থেকে বের করে ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরবর্তীতে আমি বাদি হয়ে শাহজাদপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।
অভিযোগের পরে স্থানীয় ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিল আব্দুর রউফ ও পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ঘরের তালা খুলে দেয়। আপোষ মিমাংসার জন্য ১৩ জুন দিন নির্ধারণ করে। ওই তারিখে শালিশ না হয়ে ১৭ জুন পুর্নরায় শালিশের দিন ধার্য্য করে। শালিশ না করে ওই দুপুরে আসলাম সুবেদার এর হুকুমে সেরাজুল মন্ডলসহ ১০/১২ মিলিত হয়ে জোরপুর্বক আকরাম হোসেন ময়দুলের ঘরে ঢুকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে মারপিট, ভাংচুর ও লুটপাট করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
তিনি আরও বলেন, গত ২০২২ সালের ৯ আগষ্ট আসলাম সুবেদার ঈদে ছুটিতে বাড়িতে এসে আমার দুইটি চার-চালা টিনসেট বিল্ডিং পরিবর্তন করে দুই চারা করে। সেই সঙ্গে আমার শৌচারাগার ভেঙ্গে তার নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। আমিসহ আমার পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘ ১ বছর যাবৎ বাড়ি ঘর ছেলে মানবেতন জীবন যাপন করছি। বর্তমানে আমি প্রাণের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এজন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
ময়দুলের স্ত্রী ডেইজী পারভিন সাগরিকা বলেন, আসলাম সুবেদার পুলিশ কর্মকর্তা হওয়াতে আমার স্বামী ও আমাদের মারপিট করে। তার অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য প্রশাসনসহ ও প্রধামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামরা করছি।
ময়দুলের ছেলে জিসান মন্ডল বলেন, আমার ছোট চাচা পুলিশ কর্মকর্তা হওয়ায় তার অত্যাচারে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র মানবেতন জীবন যাপন করছি। চাচার অত্যাচারের ঘটনায় ডিআইজি রাজশাহী রেঞ্জ, পুলিশ সুপার সিরাজগঞ্জ ও শাহজাদপুর থানায় আমাদের বসতবাড়ি ফিরে পাওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে এবং দ্রুত বিচার আদালত-সিরাজগঞ্জ একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য অবগত করেন।
শাহজাদপুর পৌরসভার ৮নং কাউন্সিলর আব্দুর রউফ বলেন, আকরাম হোসেন ময়দুলরা মোট ৬ ভাই। আকরাম হোসেন ময়দুলকে তার বাবা বাদ দিয়ে বাকি ৫ ছেলে নামে ঐ বাড়ি লিখে দেন। আর আকরাম হোসেন ময়দুলকে অন্য স্থান থেকে ৬ শতক জমি লিখে দেন। কিন্তু আকরাম হোসেন ময়দুল তার বোনদের নিকট থেকে ঐ বাড়ির অংশ থেকে ৩ শতক জমি ক্রয় করেন। সেই সুবাধে দীর্ঘদিন দিন ধরে ঐবাড়িতে বসবাস করছে আসছে আকরাম হোসেন ময়দুল। কিছুদিন আগে ঐ বাড়ি থেকে তার আপন ছোট ভাইয়েরা বের করে দিয়েছে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাজশাহী পুলিশ লাইন্স এর কর্মকর্তা আসলাম সুবেদার বলেন, ওই বসতবাড়ী আমাদের বাবা ৫ ভাইয়ের নামে লিখে দিয়েছে। আকরাম হোসেন ময়দুলকে অন্য জায়গাতে জমি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সে আমাদের বাড়িতে বসবাস করতো। তাই তাকে আমাদের বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছি।
শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম মৃধা বলেন, বিষয়টি এলাকার সবাই জানে। ওদের ভাই ভাই মধ্যে জমি নিয়ে দন্দের কারণে উভয় পক্ষ আদালতে মামলা করেছে। যেহেতু আদালমে মামলা রয়েছে সেখানে আমাদের কিছু করার নেই।
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। আমি এখনি শাহজাদপুর থানার ওসিকে অবগত করছি।
আরও পড়ুন
জীবননগরে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ, প্রশাসন ও র্যাব ও আনসার এর যৌথ মহড়া অনুষ্ঠিত
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে ৫ বাংলাদেশি আহত
চন্দনাইশে সাতবাড়ীয়া বার আউলিয়া আলিম মাদ্রাসায় নতুন অধ্যক্ষের যোগদান