হোম » অন্যান্য বিভাগ » শেরপুরে স্ত্রী ও শাশুড়িকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যু দন্ড 

শেরপুরে স্ত্রী ও শাশুড়িকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যু দন্ড 

শেরপুর প্রতিনিধিঃ শেরপুরে স্ত্রী ও শাশুড়িকে কুপিয়ে হত্যার মামলায় মো. ইসমাইল হোসেনকে (৪০) মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাঁকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। 

আজ বুধবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ তৌফিক আজিজ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত ইসমাইল হোসেন ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার চরগোরকপুর গ্রামের মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা দায়রা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) চন্দন কুমার পাল।

চন্দন কুমার পাল জানান, ইসমাইলের স্ত্রী শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার কাকরকান্দি এলাকার মৃত আমজাদ হোসেনের মেয়ে বিলকিস আক্তার (২৫)। স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। ২০১৫ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিলকিস সন্তানকে নিয়ে ভাই আব্দুল খালেকের বাড়িতে বেড়াতে যান।

২৬ সেপ্টেম্বর রাতে ইসমাইল ওই বাড়িতে গেলে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে স্ত্রী বিলকিসের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ধারালো দা দিয়ে বিলকিসকে কোপান। বিলকিসের চিৎকারে শাশুড়ি খালেদা বেগম ও মামাশ্বশুর নুরুল আমিন, প্রতিবেশী দাদাশ্বশুর কুদ্দুস মিয়া ও চাচি শাশুড়ি সেলিমা বেগম অজুফা এগিয়ে গেলে তাঁদেরও কোপান ইসমাইল। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গিয়ে ইসমাইলকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।

পিপি চন্দন কুমার পাল আরও জানান, স্ত্রী-শাশুড়িসহ জখম পাঁচজনকে গুরুতর অবস্থায় প্রথমে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে নিলে পরদিন বিলকিস আক্তার মারা যান। এরপর শাশুড়ি খালেদাসহ চারজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে দুই দিন পর শাশুড়ি মারা যান।

এ ঘটনায় ২৭ সেপ্টেম্বর গৃহবধূ বিলকিস আক্তারের বড় ভাই আব্দুল খালেক বাদী হয়ে ইসমাইল হোসেনকে আসামি করে নালিতাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে ২ অক্টোবর ইসমাইল হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ২৮ মে ইসমাইলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নালিতাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলাম। পরে ২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি বিচারিক আদালতে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরে ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। চলতি বছরের ৫ মার্চ উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি গ্রহণ করা হয়। যুক্তিতর্ক শেষে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ইসমাইলকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।

এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী জাহিদুল হক আধার জানান, রায়ের বিষয়ে তাঁরা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

error: Content is protected !!