হোম » অন্যান্য বিভাগ » বগুড়া গাবতলীতে যৌতুকের বলি হলো নববধূ ঋতু

বগুড়া গাবতলীতে যৌতুকের বলি হলো নববধূ ঋতু

এম,এ রাশেদ: বগুড়ার গাবতলী উপজেলার উজগ্রাম সরকার পাড়া গ্রামে যৌতুকের বলি হলো নববধূ ঋতু। এঘটনায় পুলিশ ঋতুর স্বামী সোহেল আরমানকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে৷ 
মামলার অভিযোগ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ১২/৯/২২ইং তারিখে পারিবারিক পছন্দে আনুষ্ঠানিক ভাবে গাবতলী উপজেলার দক্ষিণপাড়া ইউনিয়নের সরকার পাড়া গ্রামের রেজাউল করিমের মেয়ে ঋতু খাতুন (২২) এর সাথে একই ইউনিয়নের উজগ্রাম আকন্দপাড়া গ্রামের মৃত আছালত আকন্দের পুত্র সোহেল আরমানের বিয়ে হয়।
বিয়ের আগে থেকেই সোহেল আরমান ঢাকা আশুলিয়ায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন। সোহেল আরমানের বাবা- মা অনেক আগেই মারা যাওয়ায় তার দুলাভাই শাহীন নিজে অভিভাবক হয়ে এ বিয়ে সম্পাদন করেন। বিয়ের ৫ মাস পর সোহেল আরমান নববধূ ঋতুকে নিয়ে তার কর্মস্থল ঢাকা আশুলিয়া যান। আশুলিয়া নিশ্চিন্তপুর উত্তরপাড়া  আসহান উল্লাহ নামের এক ব্যক্তির বাড়ী ভাড়া নিয়ে তারা বসবাস করেন।
এদিকে সোহেল আরমানের ভগ্নিপতি শাহীন আলম শ্যালকের যৌতুকের টাকা দাবি করে ঋতুর বাবা রেজাউল করিমকে প্রায়ই চাপ দিয়ে আসছিল। যৌতুকের টাকার জন্য সোহেলও ঋতুকে কারনে অকারণে গালিগালাজ করতো বলে ঋতু মোবাইল ফোনে তার বাবা মাকে জানাতো। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৯ মে সোহেলের ভগ্নিপতি বরাবরের মত ঋতুর বাবাকে যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দেয়।
এসময় ঋতুর বাবা আরও কিছু দিন সময় চাইলে শাহীন তার সঙ্গে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি শাহীন তার শ্যালক সোহেলকে মোবাইল ফোনে জানালে সে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তারপর থেকে সোহেল যৌতুকের টাকা দ্রুত পরিশোধ করতে তার স্ত্রীকে চাপ প্রয়োগ করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। ঋতু এ কথা গুলো মোবাইল ফোনে বাবা- মাকে কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন। এরপর গত ২০মে শনিবার সোহেল সকাল বেলা ঋতুকে আবারও যৌতুকের টাকা তার বোন জামাইকে দিতে বলে তার কর্মস্থল গার্মেন্টসে যায়।
দুপুর ২টার সময় ঋতু তার বাবা-মা’র সাথে মোবাইল ফোনে শেষ কথা বলেন। এরপর রাত ৮টার সময় ঋতুর পরিবার অন্যের মাধ্যমে জানতে পারেন ঋতু গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে আশুলিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। ঋতুর পরিবারের দাবি যৌতুকের জন্য তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ঋতুর স্বামী সোহেল আরমানের ভগ্নিপতি শাহীন এই হত্যার জন্য দায়ী। সে যদি যৌতুকের টাকার জন্য বারবার ঋতুর পরিবারকে চাপ না দিতো তাহলে এ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতো না। আজ যৌতুকের বলি হয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেল ঋতু। এঘটনার পরপরই সোহেল আরমানের ভগ্নিপতি শাহীন ও তার স্ত্রী বাড়ির দরজায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে রয়েছে। এলাকাবাসী সঠিক তদন্ত করে দোষীদের সর্বচ্চো শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
error: Content is protected !!