হোম » প্রধান সংবাদ » বগুড়ায় দ্বিতীয় দিনে মনোনয়ন যাচাই-বাছাই: বাদ পড়েছেন আরও ১৬ জন প্রার্থী!

বগুড়ায় দ্বিতীয় দিনে মনোনয়ন যাচাই-বাছাই: বাদ পড়েছেন আরও ১৬ জন প্রার্থী!

বগুড়া প্রতিনিধি : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়ার মনোনয়ন যাচাইয়ের দ্বিতীয় দিনে ৩টি আসনে ৪১জনের মধ্যে বাদ পড়েছেন ১৬জন প্রার্থী।
বাতিলদের মধ্যে বগুড়া-৭ আসনেই আছেন ১২জন। যাদের ১১জনই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। আর ১জন জাতীয় পার্টি জেপি। আগের দিন গত রোববার বগুড়ার ১, ২, ৩ ও ৪ আসনের মনোনয়ন যাচাই-বাছাই করা হয়। সেদিন বাদ পড়েন ১২ জন প্রার্থী।
এ নিয়ে জেলার সাতটি সংসদীয় আসনে মোট ২৮ জনের প্রার্থীতা বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী ২১জন। বাকি সাতজন বিভিন্ন দলের। প্রার্থীতা বৈধ ৬০ জনের। বগুড়া-৬ আসনের একজনের প্রার্থীতা স্থগিত রাখা হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বগুড়া জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের কার্যালয়ে এই মনোনয়ন যাচাই বাছাই হয়।
এদিন বগুড়া- ৫, ৬, ও ৭ আসনের প্রার্থীদের মনোনয়ন যাচাই করেন নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা। যাচাইয়ের শুরুতে বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনের জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী মো. ওমর ফারুকের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়। যাচাইয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবির রিপোর্টে ঋণসংক্রান্ত তথ্য থাকলেও আসনটির জাতীয় পার্টির প্রার্থী ওমর ফারুক হলফনামায় তা গোপন করেন। এ জন্য তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়। একই আসনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) প্রার্থী আব্দুর নুর শেখের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।
মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবকারী, সমর্থকের স্থানে তিনি নিজেই স্বাক্ষর করেন। এর আগে এই আসন থেকে মোট মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন ৮জন। যাচাই-বাছাইয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব মজিবর রহমান মজনুসহ ৬জনের মনোনয়নপত্র গৃহিত হয়। বগুড়া-৬ (সদর) আসনে দুই জন স্বতন্ত্র প্রার্থী নয়ন রায় ও সৈয়দ কবির আহম্মেদ মিঠুর মনোনয়ন বাতিল করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম। নয়ন রায়ের মনোনয়নপত্রে দেয়া তথ্যে এক শতাংশ সমর্থনযুক্ত ভোটারের সাক্ষরের তথ্য সঠিক না হওয়ায় তাকে বাতিল করা হয়।
সৈয়দ কবির আহম্মেদের নামে ঋণ খেলাপ থাকার কারণে মনোনয়ন বাতিল করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। এই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রাগেবুল আহসান রিপুসহ মোট ৮জন মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন। এরমধ্যে ৬ জনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে গৃহিত হয়। বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনে মোট ১২টি প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী ১১জন ও অপর ১জন জাতীয় পার্টি-জেপি মো. রাকিব হাসান। জাতীয় পার্টির (জেপি) মনোনীত প্রার্থী থাকা সত্বেও জালিয়াতি করায় রাকিব হাসানের মনোনয়ন বাতিল করা হয়।
বাতিল হওয়া ১১জনের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জহুরুল ইসলাম এর নামে ঋণ খেলাপ থাকার কারণে মনোনয়ন বাতিল করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। আর বাকিদের মনোনয়নপত্রে দেয়া তথ্যে এক শতাংশ সমর্থনযুক্ত ভোটারের সাক্ষরের তথ্য সঠিক না হওয়ায় বাতিল করা হয়। এই আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডাঃ মোস্তফা আলম নান্নুসহ মোট ২৫জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাইয়ে ১৩জনের মনোনয়নপত্র গৃহিত হয়। মনোনয়ন যাচাইবাছাই শেষে বগুড়া জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, বাতিলকৃত প্রার্থীরা আগামী ৫থেকে ৯ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের কাছে আপিল করার সুযোগ পাবেন। যাচাইবাছাই শেষে সোমবার বিকেল চারটার পর আমাদের রায়ের কপি নিয়ে নির্বাচন কমিশন বরাবর আপিল করতে হবে। উল্লেখ্য, এর আগে গত ৩০ নভেম্বর বগুড়ার সাতটি আসনে ৮৯জন প্রার্থী নিজেদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এ নিয়ে বগুড়ার সাতটি আসনে মোট প্রার্থীতা বৈধ ৬০জনের।
বাতিল হয়েছে ২৮টি। আর বগুড়া-৬ আসনের একজনের প্রার্থীতা স্থগিত রাখা আছে। বগুড়ার সাতটি আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৮ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৪। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৪ লাখ ৪ হাজার ৩২১ এবং নারী ভোটার ১৪ লাখ ২৪ হাজার ২৩ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৯৬৯ টি। ভোট কক্ষ স্থায়ী ৫ হাজার ৮১৫ টি ও অস্থায়ী ৪০৮টি মিলে মোট ৬ হাজার ২২৩টি কক্ষে ভোট দিবেন জেলাবাসী। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী- রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ও শুনানি ৬-১৫ ডিসেম্বর এবং ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। এর মধ্যে বগুড়ায় মনোয়নপত্র বাছাইয়ের দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩ ডিসেম্বর।
error: Content is protected !!