হোম » প্রধান সংবাদ » লাল সবুজ ট্রেনে চড়ে  কক্সবাজার রেললাইন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

লাল সবুজ ট্রেনে চড়ে  কক্সবাজার রেললাইন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

মোহাম্মদ খোরশেদ হেলালী, কক্সবাজার: দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের উদ্বোধনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসছে। আগামী ১১ নভেম্বর বহুল প্রতীক্ষিত এই রেলপথ উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।
ওইদিন তিনি টিকিট কেটে ট্রেনে ভ্রমণ করবেন । ইতিমধ্যে   মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) দুপুর ২টা ২০মিনিটে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন উদ্বোধনী লাল সবুজের ট্রেনটি ১৫ বগির সঙ্গে অতিরিক্ত আরও ৪টি বগি নিয়ে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে কক্সবাজারে রওনা হয়।
জানাগেছে, ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোহাজারী-কক্সবাজার নবনির্মিত রেলপথে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধনের জন্য  সকালে কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনে উপস্থিত হবেন। সেখানে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন উপলক্ষে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী ট্রেনে উঠে এই রেলপথ উদ্বোধন করবেন। পরবর্তীতে ট্রেন স্টেশন চত্বরে তিনি সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিবেন।
তবে অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, ঐদিন প্রধানমন্ত্রী সকালে প্রথমে হেলিকপ্টার যোগে রামু যাবেন। রামু রেল স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠে নবনির্মিত দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ চলাচলের জন্য উদ্বোধন করে কক্সবাজার আইকনিক স্টেশন নামবেন। কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনে নেমে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিবেন। এরপর সেখান থেকে মহেশখালীর মাতারবাড়িতে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় ম্যানেজার প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম  বলেন, আগামী ১১ নভেম্বর দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথে প্রধানমন্ত্রী ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনী ট্রেনে রয়েছে ১৫টি নতুন বগি। এই ১৫ বগির সঙ্গে আরও অতিরিক্ত ৪ বগি চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তত্ত্বাবধানে ছেড়ে গেছে। ১৫ বগিতে যদি কোনো সমস্যা থাকে তাহলে অতিরিক্ত ৪ বগি থেকে যুক্ত করা হবে। ট্রেনে থাকা একটি ইঞ্জিনে যদি কোন ত্রুটি দেখা যায় সঙ্গে সঙ্গে অন্য ইঞ্জিন যাতে লাগানো যায় সেজন্য নেওয়া হয়েছে আরও অতিরিক্ত তিনটি ইঞ্জিন।
তিনি আরও বলেন, এটি প্রধানমন্ত্রীর জন্য কক্সবাজার যাচ্ছে। কক্সবাজার থেকে এটিতে চড়বেন তিনি। এরপর রামু গিয়ে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন উদ্বোধন করবেন।
প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ট্রেনের চালক হতে পেরে উচ্ছ্বাসের শেষ নেই তাদের।
মাস্টার মাহফুজুর রহমান জানান, এটি নতুন অভিজ্ঞতা। প্রধানমন্ত্রীকে এই ট্রেনে করে নিয়ে যাবো আমরা। এটি আমাদের জন্য আনন্দের বিষয়। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পর আগামী পহেলা ডিসেম্বর ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু হবে।
ট্রেনে রেলের ঊর্ধতন কর্মকর্তা ছাড়াও পুলিশ, আরএনবি সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তত্ত্বাবধানে এই ট্রেন কক্সবাজারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইঞ্জিনসহ বগি সব ব্র্যান্ডনিউ। যা কোরিয়া থেকে আনা হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
২০১০ সালে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্ত ঘুমধুম পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের প্রকল্প নেয়া হয়। এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল কক্সবাজারে যাতায়াত সহজ করা। পাশাপাশি মিয়ানমারসহ ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করা।
ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন চলাচলের জন্য চট্টগ্রামের দোহাজারী পর্যন্ত ব্রিটিশ আমল থেকেই রেললাইন আছে। ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে এই প্রকল্পের ব্যয় র্নিধারণ করা হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে সরকারের অগ্রাধিকার এই প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এখনও ৯টি স্টেশনের মধ্যে বেশ কয়েকটির কাজ চলছে। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে। এই প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
এর আগে রোববার (৫ নভেম্বর) ৯ টার দিকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রথমবারের মতো পর্যটন নগরী কক্সবাজারে উদ্দেশ্য ছেড়ে যায় ট্রেন। রেলওয়ে পরিদর্শন অধিদপ্তরের সরকারি রেল পরিদর্শক (জিআইবিআর) রুহুল কাদের আজাদের নেতৃত্বে প্রথম ট্রেনটি কক্সবাজার পৌঁছে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায়। সফলভাবে কক্সবাজার স্টেশনে পৌঁছার পর ট্রেনটি কিছুক্ষণ বিরতি শেষে পুনরায় চট্টগ্রামে ফিরে আসে।
error: Content is protected !!