হোম » প্রধান সংবাদ » আলমডাঙ্গায় গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ; স্বামী ও শাশুড়িসহ আটক-৩ 

আলমডাঙ্গায় গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ; স্বামী ও শাশুড়িসহ আটক-৩ 

মোঃতারিকুর রহমান চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় মোছাঃ মুক্তা মালা (৩২) নামের গৃহবধূকে পরিকল্পিতভাবে গলাটিপে হত্যার পর লাশ তার পিতার বাড়িতে প্রেরণ করে হত্যাকারীরা। পরবর্তীতে ওই গৃহবধুর পিতা মেহেরপুর জেলার গাংনী থানাধীন বাথানপাড়া গ্রামের মৃত সামছুদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে মোঃ আব্দুর রশিদের দায়ের করা মামলায় নিহত গৃহবধুর স্বামী ও শাশুড়িসহ পুলিশের হাতে ৩ আসামি আটক হয়েছে। রবিবার (২রা মে) সকালে উপজেলার এরশাদপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। আটককৃতরা হলো নিহতের স্বামী আলমডাঙ্গা উপজেলার এরশাদপুর গ্রামের মোঃ ইছাহকের ছেলে মোঃ জহুরুল ইসলাম (৩০), ইছাহকের স্ত্রী মোছাঃ জহুরা বেগম (৫০) এবং একই এলাকার মৃত মুনছুর আলীর ছেলে কথিত পীর মোঃ সালাহউদ্দিন @ পান্টু (৪৫)
মামলার এজাহারের বিবরণে জানা যায়, গত ৫/৬ বছর পূর্বে হার্টের সমস্যাজনিত কারণে নিজ মেয়ে মুক্তা মালাকে নিয়ে মোঃ আব্দুর রশিদ আলমডাঙ্গার এরশাদপুর গ্রামের মোঃ সালাহউদ্দিন @ পান্টু হুজুরের দরবারে চিকিৎসা নিতে আসেন। সে সময় পান্টু হুজুরের আশ্রয়ে থাকা মোঃ জহুরুল ইসলামের সাথে তার মেয়ের পরিচয় হয়। ডিভোর্সী নারী হওয়ায় ৮ বছর বয়সী মেয়ে নিয়ে মুক্তামালা তার পিতার বাড়িতেই থাকতো। গত ৫/৬ মাস আগে মুক্তামালা ও জহুরুল ইসলাম একে অপরকে বিয়ে করে পান্টু হুজুরের বাড়িতেই থাকতো। কিন্তু পূর্বে আরেকবার বিয়ে হওয়ার কারণে জহুরুল ইসলামের মা জহুরা বেগম মুক্তামালাকে পুত্রবধূ হিসেবে মেনে নিতে রাজি না হওয়ায় তাদের সংসারে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকতো। এছাড়া জহুরুল ইসলামের ছোটভাই জমির উদ্দিন ও তার মা প্রায়ই
মুক্তামালার উপর নির্যাতন করতো। তাদের সাথে জহুরুল ইসলাম ও যোগ দিতো। এমনাবস্থায় গত রবিবার (২রা মে) সকালে পান্টু হুজুরের সহযোগিতায় জহুরুল ইসলাম তার মা ও ছোটভাই মিলে মুক্তামালাকে মারধর করে এবং ডিভোর্স দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এতে সে রাজি না হওয়ায় তাকে গলাটিপে হত্যা করে ঘরের আড়ার সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রেখে মুক্তামালার মৃত্যু নিশ্চিত করে আসামিরা। পরবর্তীতে পান্টু হুজুরের নিজস্ব ভ্যানযোগে মুক্তামালার লাশ তার পিতার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
রবিবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ১১টার সময় মুক্তামালার লাশ তার পিতার বাড়িতে পৌঁছালে আব্দুর রশিদ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার মেয়ের মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে আসামিরা তাকে হুমকি ধামকি দেয়। এ অবস্থায় পরিবারের লোকজনের সাথে বিষয়টি আলোচনা করে আব্দুর রশিদ তার মেয়ের লাশ মাইক্রোবাসযোগে সরাসরি আলমডাঙ্গা থানায় নিয়ে এনে তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ জানান। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর রবিবার রাতে আলমডাঙ্গার এরশাদপুর গ্রাম থেকে ৩ আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
error: Content is protected !!