হোম » প্রধান সংবাদ » আমতলীতে আওয়ামীলীগের দু’গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। ইট পাটকেল নিক্ষেপ।

আমতলীতে আওয়ামীলীগের দু’গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। ইট পাটকেল নিক্ষেপ।

বরগুনা প্রতিনিধি: আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগেরদু’ গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে মোটর সাইকেল ভাংচুর ও ৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে দু’জনকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে সোমবার দুপুরে। আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ভ্রাম্যমান আদালতের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। আইন শৃংখলা রক্ষায় শহর জুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ ঘটনার সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।  জানাগেছে, বরগুনার আমতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগ সদস্য গোলাম ছরোয়ার ফোরকানকে ঋণ খেলাপীর অভিযোগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারী বরগুনা যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালত ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে বিচারক আল মামুন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী সামসুদ্দিন আহম্মেদ ছজুকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিজয়ী ঘোষনা করে নির্বাচন কমিশনকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে গেজেটভুক্ত করার আদেশ দেন।
এ আদেশের বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ¦ গোলাম ছরোয়ার ফোরকান রবিবার বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করেন। আদালতের বিচারক মোঃ হাসানুল ইসলাম মামলাটি আমলে নিয়ে তাকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি ও প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীকে চেয়ারম্যান ঘোষনা করে গেজেটভুক্তির রায় স্থগিত করে দেন। রায় স্থগিত হওয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যানেরন সমর্থকরা উচ্ছাসিত হয়। সোমবার তার সমর্থকরা মোটর সাইকেল শোভাযাত্রা করে ফোরকানকে আমতলী উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে সংবর্ধনার আয়োজন করে।
ওই সংবর্ধনায় কয়েক হাজার নেতা-কর্মী ও সমর্থক অংশ নেয়। এ দিকে উপজেলা চেয়ারম্যানের এ সংবর্ধনাকে প্রতিহত করতে উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানের নেতৃত্বে অন্তত পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা এসে উপজেলা কম্পাউন্ডের মধ্যে অবস্থান নেয় এমন দাবী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফোরকানের। উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার সমর্থকরা ইউএনও অফিসের সম্মুখ্যে এবং সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়রের সমর্থকরা স্মৃতিস্তস্তের পাদদেশে অবস্থান নেয়। এ সময় দু’পক্ষের কর্মী-সমর্থকরা মুহুমুহু উসকানীমুলক শ্লোগান দিতে থাকে।
এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পুলিশ উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে তাৎক্ষনিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পুলিশ উভয় পক্ষকে উপজেলা পরিষদ কম্পাউন্ডের মধ্যে থেকে সরিয়ে দেয়। পরে পৌর শহরের সদর রোডে ও পৌরসভার সম্মুখ্যে উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদকের সমর্থকরা উপজেলা চেয়ারম্যানের সমর্থকদের উপর হামলা এবং মোটর সাইকেল ভাংচুর করে। এতে ৭ টি মোটর সাইকেল ভাংচুর ও তার ৫ জনসমর্থক আহত হয়েছে বলে দাবী করেন উপজেলা চেয়ারম্যান। গুরুতর আহত মোঃ জাহাঙ্গীর (২৫)ও জহিরুল মৃধাকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অপর আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ¦ গোলাম ছরোয়ার ফোরকান বলেন, আমার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে পন্ড করার জন্য উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান লোকজন নিয়ে এসে গন্ডগোল করেছে। তারতো এখানে কোন কাজ নেই। তিনি আরো বলেন, আমার সমর্থকদের ধরে ধরে মতিয়ার রহমানের লোকজন ৭ টি মোটর সাইকেল ভাংচুর ও৫ সমর্থকদের মারধর করেছে।
আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান সংবর্ধনা পন্ড করার কথা অস্বীকার করে বলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পটুয়াখালী থেকে লোকজন এনে গন্ডগোল করতে চেয়েছিল। তাই আমি পরিস্থিতি সামাল দিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তিনি আরো বলেন, আমি উভয় পক্ষ যাতে গন্ডগোল করতে না পারে তার জন্য আইন শৃংখলা বাহিনীকে সাথে নিয়ে কাজ করেছি।
আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, পুলিশের কঠোর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব হয়েছে। বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। বরগুনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম তারেক রহমান বলেন, আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী যথেষ্ট সজাগ রয়েছে। আইন শৃংখলা বাহিনীর কঠোর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আছে। তিনি আরো বলেন, পরিস্থিতি রক্ষায় শহর জুরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
error: Content is protected !!