হোম » প্রধান সংবাদ » জামালপুরে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

জামালপুরে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

রবিউল হাসান লায়ন,জামালপুর: চিকিৎসার অবহেলায় এক মহিলার মৃত্যুর অভিযোগে রোগীর স্বজনদের হাসপাতালের জরুরী বিভাগে হামলা-ভাংচুর ও চিকিৎসকদের মারধরের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে টানা তৃতীয় দিনেও কর্মবিরতি অব্যহত রেখেছেন জামালপুর জেনারেল হাসপাতালসহ ৬ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা। এছাড়াও বেসরকারী ক্লিনিক হাসপাতালগুলোতেও কর্মবিরতি চলছে।
এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা। একদিকে করোনা অন্যদিকে শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব, এসময় এ ধরনের চিকিৎসকদের কর্মবিরতি দূভোর্গ বাড়িয়েছে রোগীদের। এদিকে চিকিৎসকদের অবহেলায় রোগীর মৃত্যু এবং রোগীর স্বজনদের উপর হামলার প্রতিবাদে ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শহরের বকুলতলা চত্বরে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় সড়ক অবরোধ করে  বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে রোগীর স্বজনসহ এলাকাবাসী।
হাসপাতালে আসা রোগীর স্বজনরা জানান, কোন পুর্ব ঘোষনা ছাড়াই চিকিৎসকরা কর্মবিরতি শুরু করায় বিপাকে পড়েছেন তারা। শীতজনিত নানা রোগ নিয়ে জামালপুর জেলার ৭ উপজেলাসহ প্বার্শবতী শেরপুর জেলার বহু মানুষ জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। কর্মবিরতির কারনে দূভোর্গ পোহাতে হচ্ছে তাদের।
রোববার থেকে শুরু হওয়া চিকিৎসকদের কর্মবিরতি মঙ্গলবারও অব্যহত রয়েছে। টানা তিনদিন কাজ বন্ধ করে কর্মসুচি পালন করছেন আন্দোলনরত চিকিৎসকরা। ফলে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হওয়ায় চরম দূভোর্গ দেখা দিয়েছে হাসপাতালগুলোতে। মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল থেকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের বহিঃবিভাগে কোনো চিকিৎসক আসেনি। সেবা না পেয়ে অনেক মূমূর্ষ রোগীকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন স্বজনরা। এতে অচলাবস্থা তৈরী হয়েছে হাসপাতালটিতে। তবে হামলাকারীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে অনড় আন্দোলনরত চিকিৎসকরা। চিকিৎসক নেতারা ৪ দফা দাবি আদায়ে আরো কঠোর কর্মসুচি গ্রহনের আলটিমেটাম দিয়েছেন।
শহরের গেটপাড় এলাকার ২৫ বছর বয়সি গর্ভবতি সুইটি বেগম। হাসপাতালে এসেছিলেন পেটের ব্যথা নিয়ে। তিনি বলেন, পেটে অসহ্য ব্যথা নিয়ে  হাসপাতালে এসেছিলাম। ডাক্তার দেখাতে পারি নাই। ক্লিনিকগুলোতেও ডাক্তার বসছেনা। এখন কই চিকিৎসা নিমু?
জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের রোগী কল্যান সমিতির সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, রোগীকে জিম্মি করেতো চিকিৎসকরা এভাবে কর্মবিরতি করতে পারেনা। এটা শুধু বেআইনি-ই নয়,অমানবিক। দ্রুত চিকিৎসকদের উপর হামলাকারীদেওশাস্তিমুলক ব্যবস্থার পাশাপাশি কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের দাবি জানান তিনি।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মাহফুজুর রহমান জানান, চিকিৎসকদের উপর হামলার ঘটনায় কর্মবিরতি চলছে। এই নিয়ে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। চিকিৎসকদের ৪দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে বলে জানান তিনি।
অপরদিকে চিকিৎসকদের অবহেলায় রোগীর মৃত্যু এবং রোগীর স্বজনদের উপর হামলার প্রতিবাদে ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে রোগীর স্বজন ও এলাকাবাসী এক ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় বাসিন্দা শামীম আহমেদ, সাবেক কাউন্সিলর বিজু আহমেদ,এডভোকেট বাবর আলী খান, বিষ্ণ চন্দ্র মন্ডল ও পারুল বেগমসহ অনেকে।
বক্তারা বলেন, ডাক্তারদের অবহেলায় আমাদের রোগী করিমন নেছার মৃত্যুর পর ইন্টার্ন ডাক্তাররা নগ্ন হামলা করেছে রোগীর স্বজন ও এলাকাবাসীর উপর। আবার হামলার অভিযোগ করে রোগীর স্বজনদের নামে মিথ্যা মামলা দায়েরও করেছে। অবিলম্বে দোষী ডাক্তারদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি, সাইদুর ও শহিদুরের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। অন্যথায় হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসুচির আলটিমেটাম দিয়েছেন বক্তারা।
error: Content is protected !!