হোম » প্রধান সংবাদ » ধোপাজান বালিমিশ্রিত পাথর মহালে,বিআইডব্লিউটিএ এর নামে চলছে বেপরোয়া চাঁদাবাজী

ধোপাজান বালিমিশ্রিত পাথর মহালে,বিআইডব্লিউটিএ এর নামে চলছে বেপরোয়া চাঁদাবাজী

আল-হেলাল,সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জ জেলার সদর ও বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার ধোপাজান বালিমিশ্রিত পাথর
মহালে,বিআইডবিøউটিএ (বাংলাদেশ আভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ) এর নামে বেপরোয়াভাবে চাঁদাবাজী
চলছে। শহরের চিহ্নিত চাঁদাবাজরা গত ২ মাস যাবৎ প্রতিদিন ধোপাজান নদীতে কার্গো বলগেডসহ ভারী
নৌযান প্রবেশ করিয়ে ড্রেজার ও বোমা মেশিন দ্বারা বালি পাথর উত্তোলনসহ ক্রয় বিক্রয়ের মাধ্যমে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় অব্যাহত রেখেছে। চাঁদাবাজরা নৌযান আইন অমান্য করে ভারী নৌযান প্রবেশ এর মাধ্যমে ভেঙ্গে দিচ্ছে ধোপাজান নদীর উভয় তীরের পার ও বসতবাড়ি। পুলিশ প্রশাসন নদীতে নিয়মিত টহল দিলেও বিআইডবিøউটিএ এর নামে অবৈধভাবে চাঁদা আদায়কারীদের বিরুদ্ধে কোন আইনগত পদক্ষেপ গ্রহন করছেনা।

এদিকে পৌর ট্যাক্স আদায়ের নামে আরেকটি গ্রæপ নদীর ভেতরে গিয়ে চাঁদা আদায় করে যাচ্ছে। জানা
যায়,সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার রঙ্গারচর ইউনিয়নের হরিনাপাটি গ্রামের আব্দুল খালেক এর পুত্র মাজেদ হোসেন পৌনে ২ লাখ টাকা ইজারামূল্য দিয়ে ২টি ঘাট এবং আরপিননগর নিবাসী সুজা মিয়ার পুত্র অরুন গনী ৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা মূল্যে একটি ঘাট চলতি ১৪২৭ বাংলা সনের জন্য ইজারা নেন।

পৌরসভার ৩টি ঘাটের ২ জন ইজারাদার থাকলেও প্রায় ১০/১২ জন যুবক ধোপাজান নদীর ভিতরে চলতি নদীর জিরো পয়েন্টে গিয়ে বালি পাথর উত্তোলনকারী কার্গো বলগেড এর ব্যবসায়ী মালিক শ্রমিকদের কাছ থেকে জোরপূর্বকভাবে মোটা অংকের টাকা চাঁদা আদায় করে যাচ্ছে। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে তেঘরিয়া নিবাসী ফারুক মিয়া সর্বোচ্চ ইজারামূল্যে ধোপাজান কোয়ারীর সদর উপজেলা অংশ ইজারা নেন।

গত ১১/৫/২০২০ইং তাকে ভূমি অফিস কর্তৃপক্ষ টোল ট্যাক্স ঘাটের দখল সমজিয়ে দেয়। বৈধ ইজারা গ্রহীতা হওয়া স্বত্তেও বিআইডবিøউটিএ ও পৌর ট্যাক্স আদায়কারীদের অপতৎপরতার কারণে তিনি ট্যাক্স আদায়ে প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছেন। বালি পাথর ব্যবসায়ীরা জানান,সদর উপজেলার সুরমা নদীর পূর্বে হালুয়ারঘাট থেকে পশ্চিমে পৈন্দা হাটি পর্যন্ত লঞ্চঘাটে জেটি ভিড়ানোর মাধ্যমে পরিবহন ও যাত্রী পারাপারের কাজ হচ্ছে বিআইডবিøউটিএ এর।

কিন্তু এই মূল কাজটি না করে বিআইডবিøউটিএ এর নামে একদল চাঁদাবাজ ধোপাজান নদীর ভেতরে প্রবেশ করে চলতি নদীর জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত অনধিকার প্রবেশ করত: বালি পাথর উত্তোলনসহ চাঁদা আদায় চালিয়ে যাচ্ছে। জানা যায়,২০১৩ সালে সাবেক ইজারাদার তোফজ্জুল হোসেনের মামলায় ও সুনামগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এর ডিও লেটারের ভিত্তিতে সরকার সদর উপজেলার সুরমা ধোপাজান নদীতে এবং জামালগঞ্জের লালপুর এলাকায় বিআইডবিøউটিএ এর নামে চাঁদা বা টোল ট্যাক্স আদায় বন্ধ করেছে সরকার।

তারপরও একটি মহল প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রতিদিন ৫ লক্ষ টাকা করে চাঁদা আদায় করছে সুরমা
ধোপাজান ও চলতি নদীতে বালি পাথর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। । জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত বলেন,আমরা পৌরসভার রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য পৌর এলাকার মধ্যে অবস্থিত বিভিন্ন ঘাট ইজারা দেই। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় ইজারা নেয় একজন বা দুজন। আবার ইজারাগ্রহীতারা পার্টনার নিয়োগ বা অন্যদের কাছে বিক্রয় করে।

এ কারনে নদীতে পৌর ট্যাক্স আদায়ের নামে কারা কিভাবে চাঁদা আদায় করে থাকে তা আমি সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারবোনা। তবে আমরা যাদেরকে লীজ দেই তারা কোথায় কিভাবে টোল ট্যাক্স আদায় করবে তা সুনির্দিষ্ট করে বলে দেয়া আছে। কেউ যদি এক্ষেত্রে সীমা লংঘন করে তাহলে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করলে এজন্য পৌরসভা দায়ী হবেনা। রোববার জেলা গোয়েন্দা পুলিশ নদীতে চাঁদা আদায়কালে সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের পূর্ব সদরগড় গ্রামের নুরুল আমিনের পুত্র রেজা উদ্দিন ও বুধাই মিয়ার পুত্র ফকিরকে আটক করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইয়াসমিন নাহার রুমা বলেন,ধোপাজান কোয়ারীতে বর্তমানে কোন বৈধ
ইজারাদার নেই। আমরা এই নদী হতে বালি পাথর উত্তোলন বন্ধ ঘোষণার পাশাপাশি অবৈধ বালু পাথর
উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন অব্যাহত রেখেছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে এবং
থাকবে।

error: Content is protected !!