হোম » প্রধান সংবাদ » ইউজিসির গনশুনানি পথ দেখিয়ে বিপদে রাবি ভিসি!

ইউজিসির গনশুনানি পথ দেখিয়ে বিপদে রাবি ভিসি!

আবু সাঈদ সজল, রাবিঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্যের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগে বিশ্ববিদ্যলয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত নতুন নয়। এর আগেও দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় বিশ্ববিদ্যালয়টির এক উপাচার্যকে শুনানির মুখোমুখি করে ইউজিসি। ২০০৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক আলতাফ হোসেনসহ তৎকালীন প্রশাসনের উর্ধ্বতন ব্যক্তিরা এই শুনানির মুখোমুখি হন।

সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়া ওই শুনানিতে ইউজিসির সদস্য হিসেবে উপস্থিত থাকাদের একজন ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. কে এম মহসিন।

শুনানিতে ভিসি ছাড়াও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জিজ্ঞাসার মুখোমুখি হয়েছিলেন এমন একজন তৎকালীন সহকারী প্রক্টর ও আরবী বিভাগের অধ্যাপক ইফতেখারুল আলম মাসুদ।

অধ্যাপক ইফতেখারুল আলম মাসুদ বলেন, শুনানি আয়োজনের আগে ইউজিসিতে গিয়ে ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নানা অনিয়ম দূর্নীতির শ্বেতপত্র‘ শীর্ষক একটি অভিযোগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষক গ্রুপের শিক্ষকরা।

মার্চে তৈরি করা ওই অভিযোগ ইউজিসিতে জমা পড়ে এক মাস পর। এরপর বছরের সেপ্টেম্বর কি অক্টোবরের দিকে ওই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান দলটির তখনকার আহবায়ক থাকায় তার স্বাক্ষরও ছিলো শ্বেতপত্রে। আর অভিযোগে বিএনপি প্রশাসনের ৫৪৪ নিয়োগসহ বেশ কয়েকটি বিষয় ছিলো। তার প্রেক্ষিতেই শুনানি হয় জানান অধ্যাপক মাসুদ।

এদিকে সেরকমই একটি ঘটনা আবার ঘটতে যাচ্ছে। সম্প্রতি বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিয়ে ইউজিসি একটি গনশুনানির আয়োজন করেছে।

আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর নির্ধারিত ওই উন্মুক্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হবে ইউজিসি অডিটোরিয়ামে। সেই শুনানি নিয়েই এখন নানা প্রশ্ন ক্যাম্পাস জুড়ে।

কেউ কেউ বলছেন পথ দেখিয়ে বিপদে পড়েছেন বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক সোবহান ৷ অন্যদিকে ক্যাম্পাসের বাইরে ইউজিসি আদৌ গনশুনানির এখতিয়ার রাখে কিনা সে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রশাসন পন্থী শিক্ষকরা।

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী তার ফেসবুক ওয়ালে প্রশ্ন তুলেছেন।

অধ্যাপক মামুন লিখেছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু প্রদত্ত ১৯৭৩ সালের এক্ট দ্বারা পরিচালিত। তাতেই পাওয়া যাবে কোন উপাচার্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্ত ও বিচারের উপায়। ১৯৭৩ সালের এক্টকে উপেক্ষা করে ইউজিসি যে প্রক্রিয়ায় গণশুনানি করতে যাচ্ছে তা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মানহানিকর। ইউজিসির উচিত তার তদন্ত দলকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরণ করা। কেননা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মর্যাদা সুরক্ষা করা ইউজিসির দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। ইতোপূর্বে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে একইরকম পরিস্থিতি তদন্ত করতে ইউজিসির তদন্তদল উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় দুটিতে গিয়েছিলো, তলব করে নি বলে লিখেন তিনি।

এর আগে এবছরের গত ০৪ জানুয়ারি উপাচার্যের দুর্নীতির তথ্য-উপাত্ত’-সংবলিত ৩০০ পৃষ্ঠার একটি অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) দাখিল করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকদের একাংশ। উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের বিরুদ্ধে মোট ১৭ টি অভিযোগ আনেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকদের একাংশ ‘দূর্নীতি বিরোধী শিক্ষক সমাজ’। সেটি নিয়েই আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর শুনানি করবে ইউজিসি।

error: Content is protected !!