হোম » প্রধান সংবাদ » পাহাড়ের বুক চিরে ছুটে চলা মনোমুগ্ধকর মহামায়া লেক

পাহাড়ের বুক চিরে ছুটে চলা মনোমুগ্ধকর মহামায়া লেক

মহামায়া লেক গুরে এসে মোঃ কবির হোসেনঃ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঠাকুরদীঘি বাজার থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার পূর্বে মহামায়া ইকো পার্ক। এখানে রয়েছে একটি বিশাল লেক। ছোট ছোট ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও একটি ঝর্ণা। বর্তমানে এটি স্থানীয় এক ইজারারদারের কাছে ইজারা দেয়া হয়েছে। মহামায়া কৃত্রিম লেক ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের রূপে ও মাধুর্যে মুগ্ধ করবে।

মহামায়া লেক বাংলাদেশের অন্যতম একটি পর্যটনস্থান। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদ মহামায়া লেক। ১১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ লেকটি চট্টগ্রাম শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার উত্তরে মিরসরাই উপজেলার ৮ নম্বর দুর্গাপুর ইউনিয়নের ঠাকুরদীঘি বাজার থেকে দেড়-দুই কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত।

পাহাড়ের কোলঘেঁষে আঁকাবাঁকা লেকটি অপরূপ সুন্দর। ছোট-বড় অসংখ্য পাহাড়ের মাঝখানে অবস্থিত মহামায়া লেকের অন্যতম আকর্ষণ পাহাড়ি ঝরনা। স্বচ্ছ পানির জলাধারের চার পাশ সবুজ চাদরে মোড়া। মনে হয়, কোনো সুনিপুণ শিল্পীর কারুকাজ।নীলাভ জলরাশিতে ডিঙি নৌকা কিংবা ইঞ্জিনচালিত বোট নিয়ে হারিয়ে যেতে পারেন অপরূপ সৌন্দর্যের মাঝে। প্রতিটির ভাড়া পড়বে ৬০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে। বন্ধুবান্ধব, পরিবার-পরিজন নিয়ে পানির কলকল ধ্বনিতে মুখরিত মহামায়া লেকে নৌভ্রমণ অন্যরকম আনন্দদায়ক। মহামায়া লেকের চারপাশে পাহাড়ের বুক চিরে ছুটে চলা আপনাকে বিমুগ্ধ করবে। গৌধূলিলগ্নে সূর্য যখন অন্তিম নীলিমায় ডুবে যায়, তখনকার লেকের পরিবেশ খুবই চমৎকার।

পিকনিকের জন্য মহামায়া দারুণ একটা জায়গা। এখানে এসে আপনি রান্নাবান্না করেও খেতে পারেন। তা ছাড়া অনেকেই লেকের কোলে অবস্থিত বিস্তীর্ণ ভূমিতে ফুটবল কিংবা ক্রিকেট খেলায় মেতে ওঠে।

এই লেকে কায়াকিং করারও সুযোগ রয়েছে। ঘুরে বেড়াতে পারবেন মহামায়া লেকের ৮ কিলোমিটার এলাকায়। কায়াকিং-এর জন্য ঘন্টা প্রতি খরচ হবে ৩০০ টাকা। ছাত্রদের জন্য এই খরচ ২০০ টাকা। তবে স্টুডেন্ট আইডি কার্ড দেখাতে হবে। এক কায়াকে চড়া যাবে ২ জন।

সকাল ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত কায়াকিং করা যায়। কায়াকে ওঠা সবার জন্য লাইফ জ্যাকেট থাকে, তাই যারা সাঁতার পারেন না তারাও কায়াকিং করতে পারবেন। মহামায়া লেকে প্রবেশের জন্য প্রতিজন ১০ টাকা দিয়ে টিকেট করতে হবে।

এখানে ক্যাম্পিং করার সুযোগও রয়েছে। সপ্তাহের যেকোনো দিন রাতের বেলা ক্যাম্পিং করা যাবে। সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরদিন সকাল ৭টা পর্যন্ত। এর মূল্য জনপ্রতি ৬০০ টাকা।

মহামায়া লেকে ক্যাম্পিং ও কায়াকিং এর প্যাকেজের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন ০১৮১৬১১০৩০০, ০১৭১৯৩৯৯৯১৫ বা ০১৬১৬৭৯৬৯৬৯ নম্বরে। তবে ক্যাম্পিংয়ে মেয়েদের থাকার অনুমতি নেই।

কিভাবে যাওয়া যায়:

ঢাকার কমলাপুর থেকে বিআরটিসির বাসে আসতে পারেন। অথবা সায়েদাবাদ থেকে এসি, নন-এসি বিভিন্ন বাস সার্ভিস রয়েছে। তাতে করে সরাসরি চলে আসুন চট্টগ্রামের মিরসরাই। সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিংবা হিউম্যান হলারে করে আসতে পারবেন লেকে। অটোরিকশায় ভাড়া পড়বে একশো টাকা। এছাড়া হিউম্যান হলারে ভাড়া পড়বে ১০ টাকা।

ট্রেনে ঢাকা-চট্টগ্রামের রুট ট্রেনে বা সিলেট থেকে সড়ক ও রেলপথে চট্টগ্রাম আসা যায়। চট্টগ্রাম নগরীর মাদারবাড়ি থেকে সরাসরি বাস সার্ভিসে করে চলে যেতে পারেন মিরসরাইয়ের মহামায়া লেকে। কিংবা অলংকার সিটি গেট থেকে যেকোনো লোকাল বাসেও যেতে পারবেন মিরসরাই। সময় লাগবে ১ ঘন্টা। ভাড়া ৪০ থেকে ৭০ টাকা।

এছাড়া, ট্রেনে আসলে ফেনী রেলওয়ে স্টেশন নামতে পারেন। তারপর স্টেশন থেকে ইজিবাইকে করে মহিপাল বাসস্ট্যান্ড তারপর চট্টগ্রামগামী যেকোন বাসে ঠাকুরদীঘি বাজার আসতে ভাড়া-৩০/৪০ টাকা

বিঃদ্রঃ “পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ”। তাই নির্দিষ্ট জায়গা ছাড়া কোনো ধরনের ময়লা আবর্জনা লেকে কিংবা আশেপাশে ফেলবেন না। প্রকৃতি আমাদের, তাকে রক্ষা করার দায়িত্বও আমাদের।

error: Content is protected !!