হোম » প্রধান সংবাদ » বদলগাছীতে অসহায় হতদরিদ্রদের সেবায় নিবেদিত ইউএনও আবু তাহির

বদলগাছীতে অসহায় হতদরিদ্রদের সেবায় নিবেদিত ইউএনও আবু তাহির

আব্দুল কাদের, বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ মানুষ মানুষের জন্য একটু সহানুভ‚তি কি পেতে পারে না। সমাজে এমন কিছু মানুষ আছে যাদের বেশী সহযোগিতার প্রয়োজন হয়না। সামান্য সহযোগিতা পেলেই তারা তুষ্ট হয়ে থাকে। আর এই সহযোগিতাটুকু পাওয়ার জন্য সমাজের অবহেলিত হতদরিদ্র পরিবারের লোকজন মেম্বার চেয়ারম্যান, রাজনৈতিক নেতাসহ উপজেলা প্রশাসনের দাড়ে ধর্না দেয়। কেউ সহযোগিতা পায় আবার কেউ নানা প্রতিকুলতার কারনে বঞ্চিত হয়ে পড়ে। সেই সব বঞ্চিত অসহায়দের সৌভাগ্য হয়ে দাড়িয়েছে বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাঃ আবু তাহির।

গত ২৬ জুলাই রোববার বদলগাছীর ছোট যমুনা নদীতে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে পলক কুমার নিখোঁজ হয়। ইউএনওর ঐক্লান্তিক প্রচেষ্টায় পত্নীতলা ইউনিটের ফায়ারসার্ভিস, রাজশাহী ইউনিটের ফায়ারসার্ভিসের ডুবুরী দল এনে পলকের লাশ উদ্ধারে বিশেষ ভ‚মিকা পালন করার ১ দিন পর তার লাশ উদ্ধার হয়। এরপর পলকের সৎকার করার জন্য বাবা রতন কুমার মন্ডলের হাতে ২০ হাজার টাকা ও ১৫ কেজি চাল তুলে দেন ইউএনও মুহাঃ আবু তাহির।
তিনি এই উপজেলায় বদলী হয়ে আসার পর থেকেই সফলতার সংগে মোকাবেলা করেছে করোনা পরিস্থিতি। কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায় দরিদ্রদের বাড়ী বাড়ী ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছে।

করোনা আক্রান্ত দরিদ্র পরিবারের মধ্যে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে। নির্মাণ শ্রমিক, ডিস লাইন শ্রমিক, ডেকোরেটর শ্রমিক, আশ্রয় প্রকল্প, দোকান কর্মচারী, বাউল শিল্পী, হ্যান্ডবল ও ফুটবল খেলোয়ার সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মাঝে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপহার সামগ্রী তুলে দেন। ইউএনও নিজে সন্ন্যাসতলা গ্রামে গিয়ে করোনা আক্রান্ত ৪ বছরের শিশুকে শান্তনা দিতে খেলাধুলা সামগ্রীসহ পুষ্টির ফলমুলসহ খাবার দিয়ে আসেন এবং সার্বক্ষণিক খোজ খবর নেন। করোনা সচেতনতায় মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। কৃষি কাজের সহযোগিতার জন্য হারভেষ্টা মেশিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এলাকাবাসীর সুবিধার্তে বহিরাগত লেবারদের স্কুলে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।

বিষ্ণুপুর গ্রামের বৃদ্ধ মোসলেম উদ্দীনকে ব্যক্তিগত অর্থে দোকান করে দেওয়া হয়েছে। মোসলেম উদ্দীন ঐ দোকানের উপর নির্ভর করে সংসার পরিচালনা করছে। বদলগাছী শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে গোলপার সহ উন্মুক্ত চত্ত¡র নির্মান প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা স্মরণে স্মৃতিসৌধের অসমাপ্ত কাজ পূনরায় নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কর্মকান্ড হাতে নিয়েছেন যা বাস্তবায়ন হলে সুফল পাবে উপজেলাবাসী। উপজেলা সমাজসেবা অফিসের সহযোগিতায় ২১ জন ক্যান্সার রুগিদের ৫০ হাজার টাকা করে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্রকল্প জমি আছে ঘর নাই এ কর্মসূচীর অধিনে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে অনেক গৃহহীন পরিবার ঘর পেয়েছে। আবারও নতুন করে ৮৮৭টি ঘরের বরাদ্দ হয়েছে। যা পরিবেশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এছাড়া সরকারের সেমিপাকা বসতঘর নির্মান প্রকল্পের আওতায় ১ম পর্যায় ও ২য় পর্যায় উপজেলার ১৫ জন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টী পরিবারে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। যা অসহায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টী পরিবারের হাজার বছরের দুচোখ ভরা স্বপ্নের বাস্তবায়ন হয়েছে। ঘর পেয়ে খুশি হয়ে রসুলপুর গ্রামের বিজন পাহান জানান আমার বাপ দাদারা মরে গেছে বেড়ার ঘরে থেকে। ঝড় বৃষ্টি হলে এতো কষ্ট হতো বুঝানো যায় না।

 

বর্তমান ইউএনও স্যারের সহযোগিতায় আমি ইটের ঘর পেয়েছি। বিশ্বাস করতে পারছি না আমার জীবনে ইটের ঘর হবে। সে স্বপ্ন পুরুন হয়েছে ইউএনও স্যারের সহযোগিতায়।  এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাঃ আবু তাহির জানান মানুষের সেবার জন্য প্রশাসন। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ড বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে সাধারণ মানুষের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। যাতে সরকারের সার্বিক সহযোগিতা জনগণের দোড়গোড়াই পৌঁছে দেওয়া যায়। আর যারা অসহায় হতদরিদ্র তাদের আমি বিশেষভাবে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি। কারণ তারা সব জায়গায় দাড়াতে পারে না।

error: Content is protected !!