হোম » প্রধান সংবাদ » মেসের সার্টিফিকেট পাওয়া গেল সারদা মেসে মেসে চুরির উপদ্রব, আতঙ্কে রাবি শিক্ষার্থীরা

মেসের সার্টিফিকেট পাওয়া গেল সারদা মেসে মেসে চুরির উপদ্রব, আতঙ্কে রাবি শিক্ষার্থীরা

আবু সাঈদ সজল, রাবি প্রতিনিধি: মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গত ১৭ মার্চ হঠাৎ করেই বন্ধ ঘোষণা করা হয় দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদেরকে তড়িঘড়ি করেই ছাড়তে হয় হল ও মেসগুলো। প্রথম দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ১৫ দিন বন্ধের কথা থাকলেও সেটি গড়িয়েছে অনির্দিষ্টকালে। ফলে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিতে পারেনি কেউই। দীর্ঘ দিনের এই বন্ধের সুযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আশপাশের এলাকার মেসগুলোতে বেড়েছে চোরের উপদ্রব। গত দুই মাসে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর ও স্টেশন বাজারের কয়েকটি মেসে চুরির ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন বাজার এলাকার এক মেসের ৮ টি তালা ভেঙ্গে সমস্ত মালামাল চুরি হয়েছে। এমনকি চোরদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেটও।
ওই মেসের ভুক্তভোগীদের মধ্যে সমাজকর্ম বিভাগে শিক্ষার্থী সুজন আলী জানায়, হঠাৎ করে ছুটির ঘোষণার কারনে বাসায় পড়ার জন্য কয়েকটা সীট ছাড়া আর কিছুই আনিনি  মেস থেকে। গত ১৫ তারিখ আমার ফোনে কোন এক অপরিচিত লোক ফোন করেন। পরে ঐ লোকটি জানান যে সারদার কোন এক পরিত্যক্ত জায়গায় আমার সার্টিফিকেট ও কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাওয়া  গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমি তথ্যগুলো মিলিয়ে দেখি যে ওই গুলো সব আমারই কাগজপত্র। এরপর আমি তাৎক্ষণিক মেস মালিককে ফোন দিয়ে বিষয়টি অবহিত করি। ঘটনার একদিন পরে আমার কয়েকজন মেসমেট গিয়ে দেখে কিছু আর অবশিষ্ট নেই ফ্যান.টিভি,বাল্ব.প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, বই খাতা. পোশাক, লেপ তোসক এমনকি টিউবওয়েলের মাথাটাও খুলে নিয়ে গেছে দুুষ্কৃতিকারীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেহেরচন্ডির মহসীন  মেসে বসবাসকারী রাবি দর্শন বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী তৌহিদুল হক তুহিন জানায়, ‘হঠাৎ করে ছুটির ঘোষণার কারনে  আমি আমার সব কাগজপত্র ট্রাংকে সাবধানে রেখে গিয়েছিলাম। কিন্তু কয়েকদিন পরই মেসে চুরির ঘটনার শিকার হই। আমার ট্রাংকসহ লাগেস, লেপ-তোষক, প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র চুরি হয়েছে। আমার সার্টিফিকেটগুলোও রাজশাহীর ওই মেসতো দূরের কথা আরেকটি উপজেলা সারদায় গিয়ে পাই। আমরা ১৬ জন একই মেসে থাকি। আমার রুমমেটের সার্টিফিকেট এখনও পাওয়া যায়নি। এই পরিস্থিতিতে এমন একের পর এক চুরি সত্যিই দুঃখজনক।’
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ৩৫ হাজার শিক্ষার্থীর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন সুবিধা রয়েছে মাত্র ৮ হাজার শিক্ষার্থীর। বাকি ২৭ হাজার শিক্ষার্থী আবসিক হলের বাইরে মেসে কিংবা ভাড়া বাসায় থেকে পড়াশুনা চালিয়ে
যাচ্ছেন। যাদের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণই মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসা। মেস ভাড়া সংকটের মধ্যে এখন বেড়েছে চোরের উপদ্রব। একারনে আতঙ্কে দিন পার কারছেন রাবির অধিকাংশ শিক্ষার্থী।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র উপদেষ্টা (অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত) ও প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, “স্টেশন বাজারের দিকের চুরির ঘটনা শুনে আমি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ফোন দেই। এবং সব ধরনের আইনী সহায়তার আশ্বাস দেই। কিন্তু পরবর্তীতে ওই ছাত্র আমার সাথে আর যোগাযোগ করেনি। এসব অনাকাঙ্খিত ঘটনায় সব ধরনের সহায়তায় রাবি প্রক্টরিয়াল বডি সর্বদা তৎপর।”
জানতে চাইলে চন্দ্রিমা থানার ওসি সিরাজুম মনির বলেন, এখনো পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থীর আমরা লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা ব্যবস্থা নেবো। মতিহার থানার ওসি এস এম মাসুদ পারভেজও একই বক্তব্য দেন।
error: Content is protected !!