হোম » প্রধান সংবাদ » আরএমজি ওয়ার্কার্স ফোরামের বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে সমাবেশ ও মানববন্ধন

আরএমজি ওয়ার্কার্স ফোরামের বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে সমাবেশ ও মানববন্ধন

আওয়াজ ডেস্ক : আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস। ১৯৭৪ সাল থেকে এই দিবসটি বিশ্বব্যাপি ০৫ই জুন পালিত হয়ে আসছে। এরপর হতে প্রতিবছর দিবসটি আলাদা আলাদা ভাবে প্রদিপাদ্য বিষয় নিয়ে পালিত হচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় –“করবো ভুমি পূণরুদ্ধার, রুখবো মরুময়তা,অর্জন করতে হবে মোদের খরা সহনশীলতা”

“LAND RESTORATION, DESRETIFICATION AND DROUGHT RESILIENCE”

আজ ০৫ই জুন, ২০২৪ বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে আরএমজি ওয়ার্কার্স ফোরাম মানববন্ধন ও সমাবেশ আয়োজন করার মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে তৈরি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানের অবদান অনিস্বীকার্য। আরএমজি ওয়ার্কার্স ফোরাম ২০২৩ সাল থেকে পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে আসছে। আজ এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালনের উদ্দেশ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি ও বিশ্বব্যাপি শ্রমজীবি মানুষকে তাদের ভাবনার জায়গায় পরিবেশ নিয়ে চিন্তা ভাবনার জন্য একত্রিত হয়েছে। পরিবেশের জন্য প্রতিটি দিনই গুরুত্বপূর্ণ, আমাদের সকলের নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথাচিন্তা করে পরিবেশ উন্নয়নের জন্য কাজ এখনি পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী । সমগ্রবিশ্ব পরিবেশের বিপর্যয়ের কারনে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে । পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি মূদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি সবমিলিয়ে নিম্ন শ্রেনীর মানুষের এক নতুন সংকট তৈরী হয়েছে, যার ফলে এই শ্রেণীর মানুষ আরো দূর্বল থেকে দূর্বলতর হয়ে পরেছে। পরিবেশ দূষণজনীত সমস্যা উক্ত সংকটের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করছে। কাজেই এই বিপর্যয় রুখে দিতে আমাদের সকলকে সম্মিলিত ভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে যাতে করে পরিবেশ আরো বেশী দূষিত না হয়।


এছাড়া বন-ভ‚মির গাছপালা কেটে ফেলা, শিল্প কলকারখানার ধোঁয়া ও দূষিত বর্জ্র পদার্থ প্রকৃতির সাথে মিশে পরিবেশকে মারাত্মক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অন্যান্য সকল ক্ষেত্রের মতো পোশাকশিল্পেও পরিবেশ দূষণের প্রভাব বহুদিন ধরে পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ ধরনের পরিবশ দুষণের ফলে কারখানার আশেপাশে যেসব শ্রমিকরা থাকে তাদের খাবার, তাপমাত্রা ও তাদের পারিপার্শি¦ক পরিবেশ খুবই নোংরা এবং নোংরা পরিবেশের কারনে তারা প্র্য়াশই বিভিন্ন রোগের শিকার হয়। কারখানায় ব্যবহৃত রাসায়নিক বর্জ্য ও অপরিচ্ছন্ন কর্মপরিবেশের দরুন তাদের বিভিন্ন পেশাগত ব্যাধি হয়। এসবের দিকেও মনোযোগী নজর দিতে হবে। তাদের জন্য বাসযোগ্য আবাসস্থল নিশ্চিত করতে হবে। যথাস্থানে কারখানা নির্মাণ করতে হবে। প্রকৃতি বিনাশ করে এভাবে শিল্প কারখানা ও স্থাপত্য নির্মাণ এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। সমগ্রবিশে^র পাশাপাশি বাংলাদেশকেও এখন টেকশই উন্নতির জন্য (ঝঁংঃধরহধনষব উবাবষড়ঢ়সবহঃ) পরিবেশ রক্ষার কথা ভাবতে হচ্ছে। এছাড়াও গ্রীন ডেভেলপমেন্ট নিয়ে পৃথিবীর উন্নত দেশ গুলোও বেশ সোচ্চার এবং অগ্রনী ভুমিকা পালন করছে। বিশে^ও অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশকেও পরিবেশ উন্নয়নের জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করে পদক্ষেপ নিতে হবে। টেকসই উন্নয়নের জন্য আজকের মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে শ্রমিকরা পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধে বেশ কিছু পদক্ষেপ সরকারের নিকট বলিষ্ট কন্ঠে উত্থাপন করেন।


পদক্ষেপ সমূহঃ
∙ শিল্প কারখনার বর্জ্র ও রাসায়নিক পদার্থের সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনায় কার্যকরী সরকারি পর্যবেক্ষন প্রয়োজন। ∙ শিল্প কারখানায় রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারের দিক নিদের্শনা সঠিকভাবে মেনে চলতে হবে, উদাহরণ স¦রুপ ইটিপির মাধ্যমে ময়লা জলনিষ্কাশন করে তা পূনঃ ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা।
∙ কার্বন নিঃস¦রণ কমিয়ে পরিবেশ বান্ধব কারখানা তৈরী করতে হবে।
∙ জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধ করে নবায়ন যোগ্য জ্বালানি ব্যবহার বৃদ্ধি করি।
∙ কারখানায় ন্যায় সঙ্গত রুপান্তরে বায়ার ও ব্র্যান্ডকে পরিবেশ বান্ধব শিল্পকারখানা তৈরীতে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। ∙ পাহাড় ও গাছপালা কেটে, নদী-নালা ভরাট করে শিল্পকারখানা ও স্থাপনা নির্মান রোধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
∙ পরিবেশ রক্ষায় সকলের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
∙ গ্রীন ডেভেলপমেন্ট (সবুজীকরন) নিয়ে আর ও কাজ করা।
∙ সামাজিক সংলাপের মাধ্যমে পরিবেশ বান্ধব সবুজ কারখানা গড়ে তোলার অঙ্গীকার বদ্ধ হই ।
∙ বায়ার ও ব্র্যান্ডকে পরিবেশবান্ধব শিল্পকারখানা তৈরীতে দায়িত্ব ও গ্রহনের মাধ্যমে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। ∙ বায়ার ও ব্র্যান্ডকে পণ্যের ও শ্রমের ন্যায্য মূল্য প্রদান করে পরিবেশ উন্নয়নে সহায়তা করতে হবে। ∙ প্লাষ্টিক দ্রব্য ব্যবহার রোধে মালিক, শ্রমিক, বায়ার, ব্র্যান্ড, দেশী-বিদেশী উন্নয়ন সংস্থা ও সরকারÑসকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করে পরিবেশকে রক্ষা করতে হবে।
∙ পরিবেশ বান্ধব ব্যবসানীতি প্রনয়ণ করতে হবে।
∙ পরিবেশ দূষণের ফলে শ্রমিকেরা যেসব ক্ষতিকর স্বাস্থ্য হানির স্বীকার হচ্ছে তা রোধকল্পে সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সভাপতি জনাব বিলকিস বেগম, সাধারন সম্পাদক জনাব উর্মি আক্তার এবং সহ-সাধারন সম্পাদক জনাব লিলি বেগম সহ বিভিন্ন কারখানার ইউনিয়নের শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।

Loading

error: Content is protected !!