হোম » প্রধান সংবাদ » পিএইচডিতে চৌর্যবৃত্তি রোধে চূড়ান্ত খসড়া আইন

পিএইচডিতে চৌর্যবৃত্তি রোধে চূড়ান্ত খসড়া আইন

আওয়াজ অনলাইন : গবেষণা কাজে বা পিএইচডিতে চৌর্যবৃত্তি রোধে খসড়া আইন প্রায় চূড়ান্ত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল জানিয়েছেন, এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন উচ্চ আদালতে দাখিল করা হয়েছে। তবে গবেষকদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহযোগিতা না নেয়া, ডিগ্রি প্রদানের সময় চৌর্যবৃত্তি হয়েছে কিনা পরীক্ষা করা ও শাস্তির বিষয় সংযোজন করে ২ মাসের মধ্যে আইনের খসড়া জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

দেশে প্রতিবছর কয়েক হাজার শিক্ষার্থী স্নাতকোত্তর বা পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনে বিদেশে যান। আবার দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও এমফিল ও পিএইচডি পর্যায়ে গবেষণা ও ডিগ্রি লাভের সুযোগ রয়েছে।

দুঃখজনক হলেও সত্য, দেশে এই উচ্চতর ডিগ্রি বা গবেষণা নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ উঠছে।  ২০২০ সালে এক গবেষণার প্রায় ৯৮ শতাংশে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ উঠে খোদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বিষয়টি গড়ায় উচ্চ আদালতে। পিএইচডি ও উচ্চতর গবেষণাগুলোতে জালিয়াতি ও চৌর্যবৃত্তি ঠেকানোর বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন চেয়ে রিট করেন আইনজীবী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান লিংকন।

পিএইচডি ও সমমানের ডিগ্রি কীভাবে অনুমোদন হয়, সেগুলো যথাযথ আইন মেনে হয়েছে কিনা তা জানতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের কমিটি করে দেন হাইকোর্ট। আর চৌর্যবৃত্তি রোধে নীতিমালা করতে নির্দেশ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে।

ইউজিসির আইনজীবী মুনতাসির মাহমুদ রহমান বলেন, “ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্ডস কমিশন কোনো প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিকে বাংলাদেশের পিএইচডি থিসিস বা পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করার জন্য এখন পর্যন্ত কোনো অনুমোদন দেয়নি।

রিটকারী আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিংকন বলেন, “এটা ঢাকা ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ একটি রুল করেন। প্রথম বার আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষা বা গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি যেটা হয় সেটা রোধ করার জন্য তারা একটা ড্রাফট করে। সেটা মহামান্য আদালতে জমা দেন।”

কমিটিতে থাকা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ড. জাফর ইকবালসহ সবাই বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেন। এসব সুপারিশ সংবলিত নীতিমালা করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ২ মাসের সময় বেঁধে দেন।

আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিংকন বলেন, “আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ, এখন স্মার্ট বাংলাদেশ হতে যাচ্ছি কিন্তু শিক্ষাক্ষেত্রের সর্বত্র জায়গায় একটা সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারবো না এটা বিশ্বাস করা যায়। অবশ্যই প্রত্যেকটা থিসিস পেপার সফটওয়্যারের মাধ্যমে যেন চেক করা হয়।”

শুধুমাত্র নামের আগে পিএইচডি ডিগ্রি যোগ করার উদ্দেশ্যকে নিরুৎসাহিত করেছেন শিক্ষাবিদরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এসএম মাকসুদ কামাল বলেন, “পিএইচডি বা যে কোনো গবেষণার কাজে চৌর্যবৃত্তির বিষয়টিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা ইতিমধ্যে আইন করেছি। সারাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে তথা গবেষণা কাজের জন্য আমাদের যে নীতিমালা সেটি মঞ্জুরি কমিশন অনুমোদন করেছে। একজন শিক্ষক হিসেবে এক্ষেত্রে আমার সাজেশন হলো কারোর অনর্থক সময় ব্যয় করা উচিত নয় নামের আগে ডক্টরেট ডিগ্রিটি লাগানোর জন্য। বরং সে সময় যদি অন্য কোনো কাজে ব্যয় করে তাহলে জাতি-রাষ্ট্র আরও বেশি পরিমাণে উপকৃত হবে।”

দেশে মানসম্মত গবেষণা ও গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত ল্যাব সুবিধা নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলেও মনে করেন শিক্ষাবিদরা।

error: Content is protected !!