হোম » শিরোনাম » মোবারকগঞ্জ চিনিকল অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা করছে

মোবারকগঞ্জ চিনিকল অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা করছে

ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহ তথা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যুগযুগের লোকসানী প্রতিষ্ঠান মোবারকগঞ্জ চিনিকল অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় শিল্প মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের সরাসরি তত্বাবধানে গত ২০১৯-২০ ইক্ষু মাড়াই মৌসুমে সাশ্রয় নীতিমালা অবলম্বন করে প্রায় আড়াই কোটি টাকা লোকসান কমাতে সক্ষম হয়েছে বলে জানান মিলের সিবিএ সভাপতি মোঃ গোলাম রসুল। শতশত কোটি টাকা লোকসানের কারণে গত মৌসুমে সরকার দেশের রাষ্ট্রায়ত্ব ৬টি চিনি শিল্প বন্ধ করে দিয়ে ঐ সমস্ত প্রতিষ্ঠানে জনবল তথা শ্রমিক কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের অন্যান্য চালু মিলে শূন্যপদে পাঠাচ্ছেন।

জানা যায় ১৯৬৫ সালে ৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০৭.৯৩ একর নিজস্ব জমির উপর নেদারল্যান্ড সরকার মোবারকগঞ্জ চিনিকলটি স্থাপন করে। এরমধ্যে ২০.৬২ একর জমিতে কারখানা, ৩৮.২২ একর জমিতে কর্মকর্তা ও শ্রমিক কর্মচারীদের জন্য আবাসিক কলোনী, ২৩.৯৮ একর পুকুর এবং ১০৭ একর জমিতে পরীক্ষামূলক ইক্ষু খামার। এ ছাড়া ১৮.১২ একর জমিতে জুড়ে রয়েছে সাবজোন অফিস ও আখ ক্রয় কেন্দ্র। ঝিনাইদহের ৬ উপজেলা ছাড়াও যশোরের দু’টি উপজেলা নিয়ে গঠিত মোচিক জোন মিলের আটটি সাবজোনের আওতায় চাষযোগ্য জমির পরিমাণ রয়েছে সাড়ে তিন লাখ একর। আখ ক্রয় কেন্দ্র রয়েছে ৪৮টি। চিনিকলের ৮টি সাবজোনের অধিনে ৪৮ কেন্দ্রের কৃষক রয়েছে প্রায় সাত হাজার। এবছর ১ সেপ্টেম্বর থেকে আখ রোপন শুরু হয়েছে। আখ রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৭ হাজার একর জমিতে। কৃষকরা এবার আখ রোপনের দিকে ঝুকছে। গত বছর আখ বিক্রির টাকা পেতে কৃষকদের কোন ভোগান্তি হয়নি। মুজিববর্ষে একের পর এক রাষ্ট্রীয় কলকারখানা বন্ধ করে সোনার বাংলা গড়া সম্ভব নয়, এমন মন্তব্য সিবিএ নেতাদের। এর আগে দেশের ১৫টি চিনিকল প্রতি বছর সরকারকে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ভ্যাট প্রদান করত। সেখানে এসব মিলের বিভিন্ন যৌতিক কারণে লোকসান হয় ২০০ কোটি টাকার বেশি।

মোচিকের ইক্ষু উন্নয়ন বি সাবজোনে প্রায় ১০৭ একর জমি রয়েছে। সেখানে অর্ধেক জমিতে মিল কর্তৃপক্ষ আখ রোপন করে যে তুলতে প্রায় দুটি মৌসুম পার হয়। অপর জমি ফেলে না রেখে পত্রিকায় বিঙ্গপ্তির মাধ্যমে ৬ মাসের জন্য লিজ দেওয়া হয়। স্থানীয় কৃষকরা সে জমিতে ধানের আবাদ করে থাকে। এতে করে মিলের প্রায় মৌসুমে ১৭ লাখ টাকা লাভ হয়ে থাকে। চিনি কলের জমি লিজ নেওয়া সময় জমিতে ফসল রোপনের আগেই চুক্তির টাকা মিলের হিসাব শাখায় জমা দিতে হয়। কৃষি ফার্মে ১৩ জন কৃষক ফেলে রাখা জমিতে ধানের চাষ করছেন। তন্দধ্যে আমিনুর রহমান ১২ একর,গোলাম মোস্তফা ১ একর, হাছানুর রহমান ১ একর,লাভলু ১ একর,অহিদুল ১ একর জমিতে ১৩ জন কৃষক ধানের চাষ করেছেন। এছাড়া প্রতি একর জমি ৬ হাজার টাকায় কৃষকরা লিজ নিয়েছেন।

সেখানে ৪৯ একর জমিতে মিল কর্তৃপক্ষ ২০২০/২০২ মৌসুমে আখ রোপন করেছে তন্মধ্যে ২৫ একর রয়েছে ভিত্তি বীজ প্লট। ঈশ^রদী-৩৭ এ জাতের আখ চলতি বছরের ১৮ ফেব্রæয়ারি বীজ ক্ষেত রোপন করে। এর আগে মোচিকের ইক্ষু উন্নয়ন বি সাবজোনে প্রায় ১০৭ একর জমিতে প্রতি বছর ১৯ লাখ টাকা লোকসান যেত সেখানে এখন প্রতি বছর আখ থেকে আয় হয় ১২ লাখ টাকা ও থান থেকে ৫ লাখ টাকা। লিজ নিয়ে ধানের আবাদ করা কৃষক অহিদুল, আমিনুর, লাভলু জানায়, তারা এ মাসেই ধান কের জমি মিল কর্তৃপক্ষ কে ফেরত দিবে এমন অঙ্গিকার দিয়ে জমি নিতে হয়েছে। মোচিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুর রহমান বলছেন, চিনিশিল্পের নিয়মনীতি মেনেই এসব করা হয়ে থাকে। কর্পোরেশনের নিয়ম রয়েছে কোন জমি ফাকা রাখা যাবে না। পতিত জমি থাকলে সেটা থেকে আয়ের উৎস বের করতে হবে। যে কারনে জমিগুলো স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে লিজ দিয়ে আর্থিক সুবিধা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে চিনিকলটি।

error: Content is protected !!