হোম » অর্থনীতি » বদলগাছীর মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে রোপা- আমনের ধান! বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

বদলগাছীর মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে রোপা- আমনের ধান! বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

আব্দুল কাদের, বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর বদলগাছীতে আমন মৌসুমে ফসলি জমির মাঠগুলোতে এখন শোভা পাচ্ছে স্থানীয় জাতের ধান, হাইব্রিড, উফশী স্বর্না ৫, ব্রিধান ২৮, ব্রিধান ৩৪, ব্রিধান ৪৯, ব্রিধান ৫১, ৫২, ৯৩, ৮৭, ৯৫ বেশ কয়েকটি জাতের রোপা আমন ধান।

ধানের সবুজ রঙে ভরে উঠেছে উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠ। উপজেলার বিভিন্ন ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সবুজের সমারোহ। এ যেন
হেমন্তের বাতাসে আমন ধানের সবুজ ঢেউ কৃষকদের মন ভরিয়ে দিচ্ছে।

ঢেউয়ের মতো খেলে যাচ্ছে ধান গাছের সবুজ পাতা এবং আধাপাকা শীষ। কিছু কিছু শীষে শুরু হয়েছে দুধ-দানা গঠন। সবমিলে এ যেন রোপা আমন ধানের শীষে দোল খাচ্ছে।

গত মৌসুমে ধানের ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় কোমড় বেঁধে মাঠে নেমেছেন কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে ধানের আবাদ হয়েছে ১৪,৩৫০ হেক্টর জমিতে এবং লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪,৪০৫ হেক্টর। কৃষদের পরিশ্রম ও স্থানীয় কৃষি অফিসের সহায়তা ও পরামর্শে এখন তারা প্রহর গুনছেন ধান পাকলে মাড়াই করে ঘরে তোলার।

আর অল্প কিছু দিনেই মধ্যেই চলতি মৌসুমে কৃষকরা ফসল ঘরে তুলতে পারবেন বলে ধারণা করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। এদিকে কৃষকরা মাঠে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধান গাছের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সবুজ ক্ষেতে বাতাসের দোল যেন কৃষদের চোখে-মুখে যেন এক অন্য রকম প্রশান্তির আবরণ তৈরি করেছে।

উপজেলার হলুদ বিহার গ্রামের কৃষক আতিকুর রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে আমি ১৪বিঘা জমিতে উফশী জাতের ধানের আবাদ করেছি। কিছুদিন আগে মাজরা পোকার কিছুটা আক্রমন হয়েছিল ক্ষেতে। স্থানীয় কৃষি অফিসার স্যারদের পরামর্শ দিয়ে কিটনাশক প্রয়োগ করে ভালো ফল পেয়েছি। এখন আর পোকার আক্রমণ নেই। আশা করছি ভালো ফলন পাবো।

স্থানীয় মিঠাপুর গ্রামের কৃষক আকবর সাহা বলেন, ৫বিঘা আমন ধানের আবাদ করেছি। স্বর্না-৫ ধানের আবাদ করেছি। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে। বড় কোন প্রাকৃতিক দৃযোর্গ না হলে ফলন ভালো হবে বলে আশা করছি।

হলুদ বিহার গ্রামের কৃষক ডাঃ নূরল ইসলাম বলেন, শুরুর দিকে ছত্রাক জাতীয় রোগ হয়েছে পাতা মরে যাচ্ছিল। তখন একটু চিন্তায় ছিলাম। স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শে কিটনাশক প্রয়োগ করার পর সেই রোগ দমন করা সম্বব হয়েছে।

আপাতত এখন কোন রোগ বালাই নেই। কিছু দিনের মধ্যেই ধান কাটা শুরু করা যাবে। গত বছর ফলন ও ধানের দাম ভালো পেয়েছিলাম। এবারও ভালো ফলন পাবো বলে আশা করছি। তবে ধান কাটার সময় শ্রমিক সংকট দেখা দেয়। যার কারনে সময়মত ঘরে ধান তুলতে কিছুটা বেগ পেতে হয়।

বদলগাছী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাবাব ফারহান বলেন, কৃষি বিভাগ সব সময় কৃষকের পাশে ছিল এবং সঠিক সময়ে সঠিক পরামর্শ দেওয়ার কারণে পোকামাকরসহ রোগ বালায় সহজেই দমন করা সম্ভব হয়েছে। সরকারের সার্বিক সহযোগিতা ও কৃষি বিভাগের পরামর্শে কৃষিতে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। আশা করি কৃষকরা ভালো ফলন পাবে।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, কৃষি দেশের উন্নয়নের বড় মাধ্যম। বর্তমান সরকার দেশের কৃষিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। উন্নত মানের বীজ সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে কৃষক খুব কম খরচে অধিক পরিমান ফসল উৎপাদন করতে পারছেন।

শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূল রয়েছে। এছাড়া ধান কাটা-মাড়াইয়ের সময় যদি কৃষকরা কোন সমস্যায় পড়ে তখন আমরা চেষ্টা করবো তাদের সমস্যাগুলোর সুরাহা করতে। কৃষকদের পাশে আমরা সার্বক্ষনিক থাকবো।

error: Content is protected !!