হোম » অপরাধ-দুর্নীতি » সোনাইমুড়ীতে গায়েব হচ্ছে সামাজিক বনায়নের গাছ,ধামাচাপার চেষ্টা বন কর্মকর্তার

সোনাইমুড়ীতে গায়েব হচ্ছে সামাজিক বনায়নের গাছ,ধামাচাপার চেষ্টা বন কর্মকর্তার

মোহাম্মদ হানিফ: নোয়া নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে রাতের আধারে উধাও হচ্ছে সামাজিক বনায়নের গাছ। কোথায়, কিভাবে রাতারাতি গাছগুলো গায়েব হয়ে যাচ্ছে জানেনা উপজেলা বন কর্মকর্তা। অন্যদিকে উপজেলার বন বিভাগের পক্ষ থেকে নিয়োজিত বনরক্ষী যেন গাছ বিক্রির ঠিকাদার হয়ে দাড়িয়েছেন।
সূত্র বলছে, উপজেলার সতের মাইল এলাকার চাটখিল-সোনাইমুড়ী হাইওয়ে রোডের পাশের বেশকিছু গাছ গায়েব হয়ে গেছে। তার মধ্যে সতের মাইল বাজারের মা-মনি এন্টারপ্রাইজের সামনের একটি বড় গাছ কেটে নিয়ে গেছেন সামাজিক বনায়ন কমিটির সভাপতি রুহুল আমীন হাজী।
আর এই কাজে সহযোগীতা করেছেন কালিকাপুরের বনরক্ষী শরিফ। এই শরিফের নামেও বন বিভাগের গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে এই অভিযোগের সত্যতা মেলে মা-মনি এন্টারপ্রাইজের মালিক মোঃ সেলিমের বক্তব্যে। তিনি জানান, কয়েকদিন পূর্বে তার দোকানের সামনে সামাজিক বনায়নের একটি গাছ কেটে নিয়ে গেছেন রুহুল আমীন হাজী।
মা-মনি এন্টারপ্রাইজের একটু সামনেই আলিফ সার্ভিসিং সেন্টার। এই দোকানের পাশে পড়ে থাকতে দেখা যায় একটি কেটে রাখা সিরিজ গাছ। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ২০ হাজার টাকা।
জানা যায়, গাছটি কেটেছেন আলিফ সার্ভিসের মালিক আব্দুল মান্নান। তিনি জানান, গাছটি বিদ্যুতের তার স্পর্শ করায় সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে না জানিয়েই কেটেছেন।
মান্নানের দোকানের পেছনের খালের ঝোঁপ ও কাদার মধ্যে বেশ কয়েকটি গাছের গুড়ি পড়ে থাকতে দেখা যায়। তবে সরকারি জমির গাছগুলি কেন কেটেছেন এমন প্রশ্নের কোন উত্তর তিনি দিতে পারেননি।
আরো একটু সামনে এগিয়ে রাস্তার পশ্চিম পাশে সোনাইমুড়ী পৌরসভার ময়লার ভাগাড়। এই জায়গাতেই ছিলো বন বিভাগের প্রায় ১৫টি গাছ। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ছিলো প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা।
অপরিকল্পিত ভাবে এই জায়গায় ময়লা-আবর্জনা ফেলা ও আবর্জনার স্তূপে জালিয়ে দেওয়া আগুনে মারা গেছে গাছগুলো। আর সে-সব মারা যাওয়া গাছগুলো একেক করে রাতের আধারে যেন উধাও হয়ে গেছে।
এখনো ওই স্থানে পৌর বর্জ্যের আগুনে মারা যাওয়া দু-একটি গাছ অবশিষ্ট রয়েছে। তবে গাছ গায়েব করা চক্রের কোন তথ্য নেই বন কর্মকর্তা কাছে।
এছাড়া পৌরসভার অপরিকল্পিত বর্জ্যব্যবস্থাপনার কারণে মারা যাওয়া গাছের বিষয়েও দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ নেয়নি উপজেলা বন কর্মকর্তা।
সতের মাইল এলাকার সামাজিক বনায়ন কমিটির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গাছ কাটার বিষয়ে জানতে কথা হয় রুহুল আমীন হাজীর সাথে। তিনি জানান, উপজেলা ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা শামসুদ্দিনের অনুমতি নিয়েই গাছ কেটেছেন। বনায়নের গাছ কোন কাজে ব্যবহৃত হয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি জানান, গাছের কাঠ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করেছেন।
তবে একই প্রশ্নের জবাবে সোনাইমুড়ী উপজেলার ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা শামসুদ্দিন জানান, আমীন হাজী যে গাছ কেটেছেন সেটা তাদের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। তবে সেই গাছ যে জ্বালানি কাঠ হিসেবে রুহুল আমীন হাজী ব্যবহার করেছেন এমন স্বীকারোক্তি শোনানোর পরে নির্বাক হয়ে যান কর্মকর্তা।
এছাড়া বনায়নের গাছ গায়েব ও পৌর বর্জ্যের কারনে মারা যাওয়া গাছের বিষয়ে   পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়েও কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি
error: Content is protected !!