হোম » অপরাধ-দুর্নীতি » তীব্র গরমে বেহাল দশা ১০ হাজার বন্দীর

তীব্র গরমে বেহাল দশা ১০ হাজার বন্দীর

আওয়াজ অনলাইন: দেশের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি রাজধানীতেও গরমের কারণে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এদিকে আবহাওয়া অফিস বলছে,৫৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে উত্তপ্ত দিন কাটাচ্ছেন রাজধানীবাসী।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পাশাপাশি বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকায় গরমের আঁচ আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে। ১৯৬৫ সালে ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ উঠেছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এই প্রচণ্ড গরমের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার (কেরানীগঞ্জে) ১০ হাজার বন্দীর অবস্থা আরো করুন। ধারণ ক্ষমতা ৪৫০০ হলেও বন্দী আছে প্রায় দশ হাজারের মতো।

এই গরমে কেমন আছেন তারা, জানতে চাইলে রোববার রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একটি সূত্র জানায়, বন্দীদের জন্য সব ওয়ার্ডে সিলিং ফ্যান থাকলেও অতিরিক্ত গরমের কারণে সেখান থেকে বাতাস বের হয় আগুনের ফুলকির মতো।

বন্দীরা নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী ওয়ার্ড থেকে বের হয়ে কারাগারের ময়দানে একটু গাছ তলায় আশ্রয় নেবে তারও কোনো ব্যবস্থা নেই। কারণ কারাগারে তেমন কোনো বড় গাছও নেই। সূর্যের ভয়াবহ তাপের কারণে চারিদিকে আগুনের মতো বাতাস বইতে থাকে। এই প্রচণ্ড গরমের কারণে কারাগারে প্রতিদিনই অনেক বন্দী অসুস্থ হয়ে কারা হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

সূত্রের দাবি, কারাগারে বন্দীদের থাকার স্থানে কতটা যে গরম তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। দিনের বেলায় বন্দীরা পর্যাপ্ত পানি থাকার কারণে গোসল করে কাটিয়ে দিতে পারে কিন্তু বিকেলে লকারের সময় তাদের যে কি অবস্থা হয় ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। ফ্যান থাকলেও সেখান থেকে বের হতে থাকে একেবারে গরম বাতাস। দিনের বেলায় গরমের পাশাপাশি সন্ধ্যার পরে সেটা আরো বেশি বেড়ে যায়।

কথা হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কারা হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান শুভর সঙ্গে।

শুভ বাংলানিউজকে সরাসরি বলেন, এই তাপ প্রবাহ যদি অব্যাহত থাকে তাহলে কারাগারের ভেতরে গরমে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। এই গরমের বন্দী রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি বলেন, তীব্র গরমে ডায়রিয়া, মাথাব্যথা, জ্বর কাশি সর্দিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বন্দীরা। আমরা তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে কারা হাসপাতাল থেকে ওষুধও দিয়ে দিচ্ছি।

তবে এই অতিরিক্ত গরমের কারণে অসুস্থ হয়ে বেশ কয়েক জনবন্দীকে কারা হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো বন্দী রোগীকে বাইরের হাসপাতালে পাঠানো হয়নি।

চিকিৎসক আরও বলেন, বন্দীদের থাকার সব জায়গায় ফ্যান আছে। কিন্তু সেগুলো থেকে গরম বাতাস বের হয়। আর কারাগারে গাছগুলো এখনো বড় হয়নি, ছায়াও নেই। তবে পর্যাপ্ত পানি সাপ্লাই রয়েছে বন্দীরা দিনের বেলায় ভালোভাবে গোসল করতে পারেন।

বন্দীরাও যেন প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে আছেন, একটু বৃষ্টি হলেই মিলবে স্বস্তি।

error: Content is protected !!