হোম » সারাদেশ » একই ঘরে গরু-মানুষের বসবাস!

একই ঘরে গরু-মানুষের বসবাস!

মিজানুর রহমান: লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে চরম দরিদ্রতার কষাঘাতে জরাজীর্ণ ঘরে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে গরুর সাথে বসবাস করছেন ভূমিহীন শাহ আলম।
নিজের থাকার ঘরের একদিকে বিছানা অন্যদিকে খড় বিছানো গরুর থাকার জায়গা। অন্যদিকে তার বাবা বদিউজ্জামাল ও ছোট ভাই মাহাবুরও থাকেন খাস জমিতে। কাজ জুটলে মুখে খাবার ওঠে, না হলে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটে।
এভাবেই শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা পার করছেন তারা। তবুও দেখার যেন কেউ নেই। মঙ্গলবার (২ মে) সরেজমিন গিয়ে এমন দুর্বিষহ জীবনের চিত্র চোখে পড়ে উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের মহিষামুড়ি এলাকায় ভূমিহীন শাহআলমের বাড়িতে।
ভূমিহীন শাহআলম বলেন, খাস জমিতে কোন রকম দো চালা একনা টিনের ঘর করে স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে থাকি। পাশে গরুটা থাকে। ওই ঘরেই থাকা খাওয়া সব। কিন্তু দুর্গন্ধে থাকা যায় না। এই অবস্থায় বাড়িঘরে কোন আত্মীয়স্বজন আসতে পারে না।
সহায় সম্বল কিছুই নেই। শুধু একটা গরু আছে। সরকার একটা ঘর দিলে বাকী জীবনটা সুখে থাকতে পারতাম। কান্না জড়িত কন্ঠে শাহআলমের স্ত্রী মনিরা বেগম বলেন, অভাবের তারনায় গরু নিয়ে একই ঘরে থাকতে হয়। খাওয়া দাওয়াও করতে হয় একই ঘরে। আমার স্বামী দিনমজুরির কাজ করে যা আনে তাই খাই, না আনলে না খাই। অনেকে সরকারি ঘর পাইলেও আমাদের ভাগ্যে জুটেনি সরকারি বরাদ্দের ঘর।
শাহ আলমের ছোট ভাই মাহাবুর বলেন,ঘরের আবেদনেন জন্য ভূমিহীন সনদে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর নিতে গেলে চেয়ারম্যান আমাদের দুই ভাইয়ের ভূমিহীন সনদে স্বাক্ষর করেনি।
আমরা দুই ভাই ভালো ঘরের অভাবে খুব কষ্টে জীবনযাপন করছি। প্রতিবেশি মোহাম্মদ আলী বলেন, প্রায় বিশ বছর ধরে এমন মানবেতর জীবন-যাপন করছেন শাহ আলমসহ তার পুরো পরিবার। তার বাবা বদিউজ্জামাল একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী অনেক কষ্টে দিন পার করছে। বৃষ্টি আসলে কষ্ট তাদের আরো দ্বিগুণ হয়ে যায়। রান্না ঘরের যে অবস্থা তাতে চুলা ভিজে যায়। রান্না করতে পারে না।
এবিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান তাহির তাহু বলেন, তারা খাস জমিতে থাকে কিনা আমার জানা নেই। তবে খোঁজ খবর নিয়ে দেখতে হবে।
কাকিনা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের  ইউপি সদস্য রমজান আলী বলেন, বদিউজ্জামানসহ তার দুই ছেলে ভূমিহীন। থাকেন খাস জমিতে। সরকারি বিধি মোতাবেক তারা সরকারি ঘর পাওয়ার যোগ্য।
error: Content is protected !!