মোঃ ইসলাম: ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মথুরাপুর পাবলিক হাই স্কুলে এক সাথে বিভিন্ন শ্রেণীতে পড়াশোনা করেন ২০ জন যমজ ভাই-বোন। বিদ্যালয়টির ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে তাহসিন-তাসনিম ও সান-মুন, সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে কার্তিক-গণেশ, হাবিব-হাফিজ ও সুমাইয়া-সাদিয়া, অষ্টম শ্রেণিতে শুভ-সৌরভ, নবম শ্রেণিতে হাসি-খুশি ও তাহবি-তাসবি এবং দশম শ্রেণীতে পড়াশোনা করেন আবিদ-অমিত ও রাহুল রাহা- চঞ্চল রাহা। তারা যমজ ভাই বোন৷
যমজ ভাই-বোনদের চেহারায় মিল থাকায় তাদের সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে খানিকটা বিড়ম্বনা হলেও তাদের সাথে কাটানো সময়টা বেশ উপভোগ করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সহপাঠীরা। অপরদিকে দুইজন একসাথে বেড়ে ওঠাকে এবং তাদের মত আরো জমজ ভাই বোনদের একই স্কুলে পড়ার বিষয়টিকে বেশ গর্বের সাথেই দেখছেন যমজ ভাই-বোনেরা৷
ষষ্ঠ শ্রেণীর যমজ দুই ভাই সান ও মুন বলেন, আমরা দুই ভাই একসাথে খাওয়া, খেলাধুলা ও স্কুলে আসা যাওয়া সহ প্রায় সব কাজ একসাথে করি৷ তবে আমাদের খাওয়া দাওয়ার পছন্দ এক হলেও দুজনের দুই রঙ পছন্দ ৷ একজনের লাল আরেকজনের নীল ৷ আমরা একই পোশাক পরে বিভিন্ন জায়গায় যাই ৷ শুধু পোশাক না আমাদের জুতা, চশমা, প্যান্ট সব একরকম। এসব আমাদের খুব ভালো লাগে৷ তবে আমরা কে কোনটা তা অনেকে চিনতে পারেন না। আমরা এ বিষয়টাকে আরো বেশী উপভোগ করি।
সপ্তম শ্রেণীর যমজ দুই বোন সুমাইয়া ও সাদিয়া বলেন, আমাদের সব কাজগুলো আমরা একসাথে করি। আমাদের দুজনের প্রিয় রঙ হল নীল ৷ আমরা একসাথে স্কুলে আসি। একসাথে ক্লাশে বসি৷ টিফিনের সময় আবার একসাথে খেলাধুলা করি। সব কাজগুলো আমরা একসাথে করি৷ ক্লাসের সময় একজনকে বকা দিলে আমাদের আরেকজনকে খুব খারাপ লাগে৷স্কুলের শিক্ষক ও সহপাঠীরা আমাদের চিনতে পারেনা বেশিরভাগ সময়৷ তখন একসাথে দুজনকে ডাকলে আমাদের খুব ভালো লাগে।
নবম শ্রেণির যমজ দুই বোন হাসি ও খুশি বলেন, আমাদের একটা বড় সুবিধা হল কেউ কোন ভুল করলে একজন আরেক জনকে চাপিয়ে দেওয়া যায়৷ পরে আবার আমরা একসাথে মিলে যাই৷ আর পরিবারের কাছে, আতœীয় স্বজনদের কাছে ও শিক্ষকদের কাছেও আমরা বেশ আদর পাই৷ আমরা আমাদের পুরো সময়টা একসাথে কাঁটাই।
এছাড়াও সুমাইয়া-সাদিয়া, হাবিব-হাফিজ, তাহবি-তাসবি সহ অন্যান্য যমজ ছাত্র ছাত্রীরা একই কথা ব্যক্ত করেন।
বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষিকা আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, যমজ বিষয়টি আমি বেশ উপভোগ করি৷ তারা যখন পাশাপাশি বসে তখন তাদের দেখতেও ভালো লাগে। তাদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ অনেক বেশী। তারা যাতে ভালো কিছু করে সেই বিষয়ে আমরা তাদের উৎসাহিত করি৷
মথুরাপুর পাবলিক হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানে ২০ জন যমজ ভাই-বোন পড়াশোনা করেন৷ তাদের নাম গুলো প্রায় একই রকম ও চেহারার মিলও দেখা যায়। সে কারণে কোনটা কে সেটা বুঝতে মাঝে মাঝে বিড়ম্বনায় পরতে হয়। তবুও আমরা যমজ বিষয়টি বেশ উপভোগ করছি ৷ তাদের মেধাও প্রায় সমান হয়৷ একজনের শ্রেণীর রোল নাম্বার দুই হলে অপরজনের তিন হয়। তাদের আচার-আচরণ, পোশাক পরিচ্ছদ একই রকম৷ তারা একসাথে থাকতে বেশ স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। আমার আশা করছি তারা সকলে ভালো কিছু করবে।
আরও পড়ুন
আলফাডাঙ্গায় তিন শতাধিক পরিবারকে ঈদ উপহার দিলেন যুবলীগ নেতা
পাকুন্দিয়া থানা পুলিশের সাথে নৈশোর প্রহরীদের মত বিনিময় কালে রিফ্লেক্টিং ভেস্ট প্রদান
জাতীয় শিশু দিবসে কমিউনিটি ব্যাংকের আয়োজনে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত