হোম » সারাদেশ » কিশোরগঞ্জে সরিষার বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি 

কিশোরগঞ্জে সরিষার বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি 

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জে সরিষা আবাদের পাশাপাশি মধু সংগ্রহ করতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসেন মৌ চাষিরা। জেলায় চলতি মৌসুমে তাড়াইল, করিমগঞ্জ, ইটনা, ভৈরব, হোসেনপুর উপজেলার গ্রামে গ্রামে সরিষার বাম্পার ফলনে কৃষকের চোখে মুখে আনন্দের হাসি। রোপা আমন কাটার পর বোরো আবাদের মাঝামাঝি সময় করা হয় সরিষার আবাদ। আর এ বছর ভালো ফলন হওয়ায় খুশি এ জেলার কৃষকেরা।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, এ বছর জেলায় ৯ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ হাজার মেট্রিকটন। এতে ১ হাজার হেক্টর জমির সরিষা চাষে মধু সংগ্রহের বাক্স বসানো হয়েছে।
সরিষা চাষ মৌসুমে সর্বোচ্চ তিনবার মধু সংগ্রহ করা হয়।কিশোরগঞ্জ জেলায় চলতি রবি মৌসুমে ১৩ উপজেলাতেই সরিষার আবাদ হয়েছে। জেলায় মোট আবাদকৃত জমির পরিমাণ ৯ হাজার ৬শত হেক্টর। উপজেলাওয়ারি জমির পরিমান হোসেনপুরে ২০০ হেক্টর, কিশোরগঞ্জ সদরে ২২৫ হেক্টর, পাকুন্দিয়ায় ৫৪০ হেক্টর, কটিয়াদীতে ৫৪০ হেক্টর, করিমগঞ্জে ১৮৩০ হেক্টর, তাড়াইলে ৮৮০ হেক্টর, ইটনাতে ৪৫০ হেক্টর, মিঠামইনে ২০৫ হেক্টর, নিকলীতে ৩০০ হেক্টর,অষ্টগ্রামে ২০০ হেক্টর, বাজিতপুরে ১২৩০ হেক্টর, কুলিয়ারচরে ৩৭০ হেক্টর ও ভৈরবে ২৭২০ হেক্টর। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ হাজার মেট্রিক টন।
এদিকে, সরিষা চাষিরা বলছেন, সরিষা ক্ষেতগুলো সাধারণত দেড় মাসের মতো ফুলে ফুলে ভরে থাকে। যতদিন ফুল থাকে, ততদিনই চলে মধু সংগ্রহ।মিঠামইন উপজেলার সরিষা চাষী মো: মহিন উদ্দীন বলেন, রোপা আমন ধান কাটার সাথে সাথেই আমরা সরিষার চাষ করে থাকি। সরিষা চাষের পরপরই আমরা বোরো ধান আবাদ করি। এতে ফসলের কোন ক্ষতি হয় না।
খরচ কম; লাভ বেশি। মৌ চাষিরা সাধারণত পছন্দের একটি সরিষা ক্ষেতের পাশে খোলা জায়গায় চাক ভরা বাক্স স্থাপন করেন। একেকটি বাক্সে ৮-১০টি মোম দিয়ে তৈরি মৌচাকের ফ্রেম রাখা হয়। প্রতিটি মৌ বাক্সের ভেতরে রাখা হয় রাণী মৌমাছি।ফুল থেকে মৌমাছিরা মধু এনে বাক্সের ভেতরের চাকে জমা করে। রাণী মৌমাছির কারণে ওই বাক্সে মৌমাছিরা আসতে থাকে। চাকের বাক্সের মাঝখানের নিচে ছিদ্র করে রাখা হয়। সে পথ দিয়ে মৌমাছিরা আসা-যাওয়া করতে থাকে।
মৌ চাষিরা জানান, বাক্সের ভেতরের চাকগুলো মধুতে পরিপূর্ণ হতে সময় লাগে ছয় থেকে সাত দিন। এরপর মধু চাষিরা বাক্স খুলে চাকের ফ্রেম থেকে মেশিনের মাধ্যমে মধু সংগ্রহ করেন। কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আব্দুস সাত্তার জানান, ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরিষাকে বিকল্প হিসেবে দেখছে সরকার। শুধু তেল নয় এ থেকে অধিক পরিমাণ মধু সংগ্রহ করা হয়।
এ জেলার চাষীরা ৭২ দিনের মধ্যেই সরিষা হারভেস্ট করে থাকে এবং এর পরেই তারা বোরো আবাদ করবে। সেই সাথে খরচ ও চাষের সময় দুটোই কম হওয়ায় কৃষকের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সরিষা চাষ। চাষীদের সরিষা চাষে বিভিন্ন ধরণের পরামর্শ দেয় হয়।
error: Content is protected !!