হোম » সারাদেশ » না’গঞ্জে প্রেমের ফাঁদে ফেলে হত্যা করা হয় স্বপনকে, বন্ধুর ফাঁসি, বান্ধবীর যাবজ্জীবন

না’গঞ্জে প্রেমের ফাঁদে ফেলে হত্যা করা হয় স্বপনকে, বন্ধুর ফাঁসি, বান্ধবীর যাবজ্জীবন

ইন্ডিয়ায় ফ্ল্যাট কিনে দেওয়ার কথা বলে স্বপন কুমারের কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকা নেন বন্ধু পিন্টু দেবনাথ। সেই টাকায় ফ্ল্যাট কিনেন ভাগ্নির নামে। বিষয়টি জেনে ফেলায় তাদের বান্ধবী রত্না রানীকে দিয়ে স্বপন কুমারকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে খাবারে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিলিয়ে অচেতন করে হত্যা করা হয় স্বপন কুমারকে। পরে মরদেহ খন্ড খন্ড করে বাজারের ব্যাগে ভরে ফেলে দেওয়া হয় শীতলক্ষ্যা নদীতে। নারায়ণগঞ্জের এমনি এক চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনায় খুনী বন্ধু পিন্টু দেবনাথের মৃত্যদÐ ও প্রেমিকার যাবজ্জীবনের সাজা প্রদান করেছে আদালত।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ-১ আদালতের বিচারক উম্মে সরাবান তহুরা এ রায় দেন। হত্যা মামলার অপর আসামী আব্দুল্লাহ আল মামুন মোল্লাকে খালাস দিয়েছেন আদালত। মৃত্যুদÐপ্রাপ্ত পিন্টু দেবনাথের বিরুদ্ধে এর আগে নারায়ণগঞ্জের জুয়েলারী ব্যবসায়ী প্রবীর ঘোষকে খুন করার পর সাত টুকরো করে সেফটি ট্যাংকিতে ফেলে দেওয়ার মামলায়ও মৃত্যদন্ডের সাজা প্রদান করা হয়েছিল।

এই রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন নিহত স্বপন কুমারের ভাই অজিত কুমার। তবে রায়টি দ্রæত কার্যকরী করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানান তিনি। এই রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের অতিরিক্ত পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) অ্যাডভোকেট মাকসুদা আহম্মেদ। তিনি জানান, মামলার আসামি পিন্টু দেবনাথ ও রত্মা রানী চক্রবর্তী এক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছেন। স্বপনের মরদেহ ৭ টুকরা করে বস্তাবন্দী অবস্থায় শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়, পরে সেই হত্যাকান্ডেরর আলামত সংগ্রহ করা হয় এবং থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলার রায় ঘোষণা করার আগে মোট ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় বলে জানান তিনি।

হত্যার ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের নিতাইগঞ্জের বাসা থেকে স্বপন কুমারকে শহরের মাসদাইর বাজার এলাকায় একটি ৪ তলা ভবনের ২য় তলায় বান্ধবী রত্মা রাণী চক্রবর্তীর ফ্ল্যাট বাসায় ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে বান্ধবী রত্মা ও বন্ধু পিন্টু দেবনাথ মিলে স্বপনকে খাবারের সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অচেতন করে ফেলে। পরে শিল পুতা দিয়ে মাথায় আঘাত করে টয়লেটে নিয়ে তার মরদেহ ৭ টুকরো করে বাজারের ব্যাগে ভরে। সেই ব্যাগের উপরটা সবজি দিয়ে ডেকে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয় পিন্টু। এ হত্যার ঘটনায় তিনজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয়া হলে গতকাল তাদের বিরুদ্ধে এই রায় দেয় আদালত।

error: Content is protected !!