হোম » সারাদেশ » যশোরের আলোচিত প্রতারক রুবেলের বাড়িতে স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে অন্তঃসত্ত্বা ২য় স্ত্রীর অন্বেষণ।

যশোরের আলোচিত প্রতারক রুবেলের বাড়িতে স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে অন্তঃসত্ত্বা ২য় স্ত্রীর অন্বেষণ।

এস আর নিরব যশোরঃ যশোরে রুবেল হোসেন নামে আলোচিত এক প্রতারক স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা দ্বিতীয় স্ত্রী অন্বেষণ করেছেন। রুবেল হোসেন চৌগাছা পাঁচ নামনা (থানাপাড়া) গ্রামের, বজলুর রহমানের ছেলে। (রুবেল হোসেনের বর্তমান ঠিকানা ) রুবেল হোসেন বর্তমানে আত্মগোপনে রয়েছেন।এ অন্বেষণ চলাকালীন সময় এলাকাবাসীসহ ও তার পরিবারের লোকজন রুবেলের বাড়ির সামনে উপস্থিত ছিলেন। অন্বেষণ চলাকালীন সময়ে রুবেলের বাড়ির গেটের ভেতর থেকে রুবেলের মা এলাকাবাসী ও উপস্থিত সাংবাদিক এবং অন্বেষণকারী রুবেলের দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে চরম দুর্ব্যবহার ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
বুধবার (২৭এপ্রিল) সকাল ১১ টায় রুবেলের দ্বিতীয় স্ত্রী সেলিনা বেগম স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে এই অন্বেষণ করেন। এসময় তার সাথে তার পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। অন্বেষণ চলাকালীন সময় রুবেল হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী সেলিনা বেগম জানান, আমার স্বামী রুবেল একজন আলোচিত প্রতারক, সে শুধু আমার সাথে প্রতারণা করেনি, আরো অনেকের সাথে প্রতারণা করেছে তার প্রমাণ আমার কাছে আছে। বিভিন্ন মেয়েদের সে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অর্থ আত্মসাৎ ও অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়ে তোলে। নিজেকে কখনো সাংবাদিক,, কখনো ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করি, কখনো ঢাকায় সরকারি চাকরি করি, কখনো ঢাকাতে ব্যবসা করিসহ বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা পরিচয় দেয় মানুষের সাথে ।
সে আমাকে বিয়ে করার আগে তারই এলাকার সীমা নামের একটি মেয়েকে প্রথম বিয়ে করে।আমি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরে গত এক মাস আগে আমাকে রেখে রূবেল নিজেকে অবিবাহিত, নিজেকে মাস্টার্স পাস ও ঢাকাতে ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি করি পরিচয় দিয়ে মহেশপুর উপজেলার ভালাইপুর গ্রামে রুমি নামের একটি মেয়েকে তৃতীয় বিবাহ করেছে। ভুক্তভোগী ওই নারী আরো জানিয়েছেন, সাংবাদিকতা পেশার আড়ালে বিভিন্ন মেয়েদের সাথে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলাই তার প্রধান পেশা। আপনাদের কাছে আমার একটাই অনুরোধ আমার মত আর কোন মেয়ের সর্বনাশ যাতে রুবেল না করতে পারে। আল্লাহ জানে কত মেয়ের সর্বনাশ করেছে সে। তার উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেন ওই নারী।
অন্বেষণ চলাকালীন সময়ে উপস্থিত এলাকাবাসী জানান, কিছুদিন আগে তার পরিবার ধুমধাম করে ছেলেকে বিবাহ করিছেন। কিন্তু এই বিবাহতে এলাকার কোন মানুষকেই তারা আমন্ত্রণ করেনি। এই ছেলে ও তার পরিবার এত বড় প্রতারক আমরা আগে জানতাম না। এই ছেলে আগে দুইটা বিবাহ করেছে এই কথা কখনো তার পরিবার আমাদেরকে জানায়নি বরং ছেলেকে সবসময় অবিবাহিত বলেছেন আমাদের সাথে।  স্থানীয় নভু দেওয়ান ও লিটন হোসেন জানান,এই মেয়ে এর আগেও আমাদের কাছে এসে রুবেলের প্রতারণার কথা বলেছে। তারপর আমরা তার পরিবারের সাথে বিষয়টি নিয়ে মীমাংসার জন্য বসেছি কিন্তু তার পরিবার আমাদের কথায় কোনো কর্ণপাত করেনি।
খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়,রুবেল হোসেন নামে কথিত এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কার্যালয়সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে যৌতুক দাবি, নারীনির্যাতন ও প্রতারণামূলক ভাবে অর্থ হাতানোসহ বিভিন্ন প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। রুবেল একজন আলোচিত প্রতারক। মানুষের সাথে প্রতারণা করায় তার প্রধান পেশা। সিকিউরিটি গার্ড থেকে হয়েছেন কথিত সাংবাদিক। পরে তার অপকর্মের কথা সংবাদপত্রের বিভিন্ন মিডিয়ার কর্তৃপক্ষ জানতে পেরে বিভিন্ন মিডিয়া থেকে বহিষ্কার হন তিনি।তার বর্তমান ঠিকানায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রুবেল ও তার পরিবার এলাকায় পরিচয় দেন রুবেল ঢাকায় একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করে। খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জেলায় দাপিয়ে বেড়িয়েছেন তিনি। বিভিন্ন মিডিয়ার সংবাদকর্মী পরিচয়দানকারী এই আলোচিত প্রতারক যখন যেখানে যাই সেখানেই মানুষের সাথে প্রতারণা করেন। গত পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যশোরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল পরিমাণ টাকা। সে নামিদামি বিভিন্ন মিডিয়ার নাম ব্যবহার করে নিউজ ও বিজ্ঞাপন দেওয়ার কথা বলে এই টাকা হাতিয়েছেন। সাংবাদিকতা করার আড়ালে নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মেয়েদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টাও করছে এই প্রতারক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী জানান, রুবেল নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে আমার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে এবং আমাকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখায়।তার কথায় সন্দেহ হওয়ায় তার সম্বন্ধে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি সে একটা আলোচিত প্রতারক।
যশোর সদর উপজেলার খাজুরা অঞ্চলের বিভিন্ন দোকানদারের কাছ থেকে টাকা ধার ও দোকানদারের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় বাকি কেনাবেচা করে টাকা দেওয়ার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে সে। রুবেল হোসেন এমনই এক প্রতারক যে নিজের পরিচয় পত্র টি নকল বানিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম পরিচয় দিয়ে থাকে। তার প্রকৃত পরিচয় গোপন করে মানুষের কাছে মিথ্যা পরিচয় প্রদান করে যার ফলে সে যত বড় অপরাধই করুক না কেন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে না সাধারণ মানুষ। সে কখনো তার বাড়ি গাজীপুর, মহেশপুর, যশোর, চৌগাছা, ফরিদপুর সহ বিভিন্ন জায়গার কথা বলে পরিচয় দিয়ে থাকে। আলোচিত এ প্রতারক যশোরের এক সাংবাদিকের কাছ থেকে ৪৫,০০০ হাজার টাকা একটি ক্যামেরা কেনার জন্য ধার নিয়ে টাকা না দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় ওই সাংবাদিক টাকা উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে জানার জন্য রুবেল হোসেনের মুঠোফোনে (01903-171423 / 01740881239) একাধিকবার কল করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)সাইফুল ইসলাম সবুজ বলেন, আমরা পুলিশ সুপার মহোদয়ের কার্যালয় থেকে দুইটি অভিযোগের কাগজ পেয়েছি। একটি রুবেল হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রীর সেলিনার সাথে বিভিন্ন প্রতারণা ও অপরটি প্রতারণামূলকভাবে অর্থ হাতানোর অভিযোগ। আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। আইনগত ব্যবস্থা অব্যাহত আছে।রুবেল বর্তমানে এলাকা ছাড়া।
error: Content is protected !!