হোম » সারাদেশ » শ্যামনগরের এসএসসি পরীক্ষার্থী ধর্ষণ

শ্যামনগরের এসএসসি পরীক্ষার্থী ধর্ষণ

মারুফ বিল্লাহ রুবেল: শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের কলবাড়ী গ্রামের ইতি মিস্ত্রি (১৭) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী ধর্ষিত হয়েছে।  মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) বেলা ১০ টায় ধর্ষিতার পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার রাত্র আনুমানিক ০৮ টার দিকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের চৈত্র সংক্রান্তির চড়ক পুজার বালাকি শুনে ফেরার পথে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের সন্নিকটে রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের পাশে নওয়াঁবেকী রপ্তান বাড়ীর দুটি ছেলের সাথে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন কলবাড়ী গ্রামের নিশিকান্ত মিস্ত্রির মেয়ে ইতি মিস্ত্রি ও তারই কাকাতো বোন শ্যামাকান্ত মিস্ত্রির মেয়ে পুজা মিস্ত্রি।
এমতাবস্থায় সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন কলবাড়ী গ্রামের স্বপন বাইন এর একমাত্র পুত্র রাকেশ বাইন (২৩)। রাকেশ অপরিচিত  ছেলেকে ইতি ও পুজার সাথে কথা বলা অবস্থায় দেখে প্রথমে নওয়াঁবেকীর ছেলে দুটিকে উত্তম মাধ্যমের ভয় দেখিয়ে তাদেরকে দ্রুত স্থান ত্যাগ করতে বলে তারপর রাকেশ তার কাছে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে বুড়িগোয়ালিনীর সাবেক চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডল এর ভাগ্নে আড়পাঙ্গাশিয়া গ্রামের নিমাই চৌকিদারের ছেলে রাহুল চৌকিদার (২২) ও কলবাড়ী গ্রামের উদয় হালদারের ছেলে বাদল হালদার (২১) কে ডাকে।
তখন ইতি ও পুজা কে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে রাকেশ যা নির্দেশ করবে, তাই তাই করতে বলে। তখন ইতি ও পুজা রাজি না হলে তাদের সাথে জোর জবরদস্তি করার এক পর্যায়ে পুজা ওই স্থান থেকে পালিয়ে যায়। সাথে সাথে রাকেশ ও রাহুল দুজনে মিলে ইতি কে জোরপূর্বক রাকেশ এর বাড়ীতে নিয়ে যায়৷ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর রুমে নিয়ে রাকেশ এবং তার প্রধান সহযোগী রাহুল দুজনের মোবাইল ফোনে ইতির আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারন করেন এবং বলতে থাকেন, যদি এখন রাকেশ এর সাথে শারিরীক সম্পর্কে না জড়ায় তবে এই ছবি, ভিডিও ফেক আইডি দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করবে।
আনুমানিক রাত্র ১০ টার দিকে রাহুল কে বাইরে রেখে রাকেশ ইতি কে সাথে নিয়ে রুমের ভিতরে সাউন্ড বক্সের ভলিউম বাড়িয়ে দিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তারপর রাকেশ এর মা-বাবা চড়ক পুজার বালাকি শেষ করে বাড়ীতে আসবে, এই ভেবে ইতিকে মুখ চেপে ধরে আনুমানিক রাত্র সাড়ে দশটার দিকে বাড়ির বাইরে ওয়াপদা বেড়িবাঁধের কাছে রবীন্দ্র মিস্ত্রির বাগানে নিয়ে আসে। একপর্যায়ে ইতির পরনে থাকা জামা ছিড়ে এবং প্যান্ট খুলে ইতিকে রাত্র ১২ টা পর্যন্ত ধর্ষণ করেন। এসময় ইতি চিৎকার-চেচাঁমেচি করলে তার মুখ চেপে ধরে শ্বাসরোধ করার হুমকি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে রাত্র ১২ টার দিকে ধর্ষণ শেষ হলে ইতি অসুস্থ শরীর নিয়ে তার বাসায় যান।
পরেরদিন সোমবার ইতি প্রাইভেট পড়া শেষ করে কলবাড়ী নেকজানিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়তে যাওয়ার সময় তার ক্লোজ বান্ধবী পাপড়ি মল্লিক ইতির গতিবিধি দেখে তাকে তার মন খারাপ বা শারিরীক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান, ইতি তখন কেঁদে কেঁদে সব ঘটনা খুলে বলে এবং কাউকে জানাতে নিষেধ করেন। কিন্তু ইতির বান্ধবী সোমবার বিকালে ইতিকে নিয়ে বাসায় ফিরে ওইদিন রাতে ইতির মা রুহিনী মিস্ত্রি কে সব খুলে বলে।
এরপর ইতির মা রুহিনী মিস্ত্রি তার মেয়ের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে জড়িত রাকেশ ও রাহুল সহ যারা এই ঘটনায় জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে এলাকাবাসী, সাংবাদিকবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি সকলকে বিষয়টি অবহিত করেন।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ইতি শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং ইতির পরিবার সুষ্ঠু বিচারের দাবীতে শ্যামনগর থানায় এজাহার জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
error: Content is protected !!