হোম » সারাদেশ » বগুড়ার শেরপুরের অবৈধ দখল ও খানা খন্দকে জনদুর্ভোগ চরমে শেরুয়া টু ব্রাক বটতলা রাস্তা

বগুড়ার শেরপুরের অবৈধ দখল ও খানা খন্দকে জনদুর্ভোগ চরমে শেরুয়া টু ব্রাক বটতলা রাস্তা

আবু জাহের, শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধঃ বগুড়া শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের শেরুয়াবটতলা বাজার থেকে ভবানীপুরের আঞ্চলিক এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন তারাশ, সিংড়া, নাটোর, রাজশাহীর হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। শেরুয়া বটতলা হতে ব্রাক বটতলা পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তার দুই পাশে প্রতিনিয়ত গড়ে উঠছে অবৈধ স্থাপনা এবং এক থেকে দেড় ফুট পর্যন্ত বড় বড় গর্ত হয়ে জন দুর্ভোগে পরিনত হয়েছে এই রাস্তাটি। এতে প্রায় ঘটটে ছোট বড় দুর্ঘটনা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন স্থাপনা হয়ে পানি গড়ার মত জায়গা না থাকায় রাস্তায় পানি জলাবদ্ধতা হয়ে বড় বড় গর্ত হয়েছে।

দড়িমুকন্দ এলাকার সাকো ভেঙ্গে গেছে। এতে যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। রাস্তাটি প্রায় ৬০ ফিট প্রশস্ত হইলেও রাস্তার দুই পাশে মিল, কল কারখানা, বসতবাড়ী করে রাস্তার জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনার আগ্রাসনে কোথাও কোথাও ৬০ ফিটের জায়গায় দেখা যায় ১০-১৫ ফিট বাকী সকল জায়গা দখল করে নিয়েছে স্থাপনা করে। কোথাও কোথাও দেখা যায় রাস্তার পাশে ড্রেন আছে সেই ড্রেনের উপর দিয়ে তিন থেকে পাঁচ ফিট পর্যন্ত রাস্তার মাঝে এসে ইট দিয়ে স্থাপনা করা হয়েছে। রাস্তাটির দুই পাশের গড়ে উঠেছে প্রায় ৫০টির মত কল কারখানা ও মিল চাতাল দোকান ঘর।

এমন অবৈধ স্থাপনা হয়ে রাস্তাটি জায়গা কমে গিয়েছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় মিল কলকারখানা তৈরী হয়ে বর্ষার দিনে রাস্তায় পানি জলাবন্ধতা তৈরী হয়ে থাকায় এক থেকে দেড় ফুট পর্যন্ত বড় বড় গর্ত হয়েছে। এতে জন দুর্ভোগে পরিনত হয়েছে এই রাস্তাটি। এবং প্রায় ঘটটে ছোট বড় দুর্ঘটনা। শেরপুর উপজেলার মির্জাপুর ও শাহবন্দেগী ইউনিয়নের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাভুক্ত সড়কের মির্জাপুরের আড়ংশাইল মোড় থেকে শেরুয়া বটতলার দক্ষিণে আন্দিকুমড়া পর্যন্ত ২.৪ কিলোমিটার সড়কের উপরে গত প্রায় দশ বছরে গড়ে উঠেছে ৭৬টি বসতবাড়ি।

সেখানেই টিন দিয়ে একটি ঘর তৈরী করে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিয়েছেন নদীভাঙ্গন কবলিত অসহায় ৭৬টি পরিবার। ওই একটি ঘরের মাঝে বেড়া দিয়ে থাকে মানুষ, গরু ছাগল। সেখানেই চলে তাদের জীবন। পাকাসড়কের উপর এভাবে বসবাস যেমন তাদের জন্য ঝুঁকিপুর্ণ তেমনি সড়ক দখল হয়ে পড়ায় সড়ক দুর্ঘটনার আশংকা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেখানে বসবাসরত সেলিম, ইসমত, কালাম জানান, ‘আগে বাড়ি আছিল সারিয়াকান্দির বোহাইলে। যমুনার ভাঙ্গনের পর ১০ বছর হলো এটি আছি।

চাতালে কাজ করে সংসার চালাই। যাবার কোন জায়গা না থাকায় রাস্তার উপরই ঘর কইরা আছি।’ ছকিনা বেগম জানান, সারিয়াকান্দি থেকে এখানে এসে একটি ঘর করেছেন ৭ বছর হলো। রাস্তা পাকা হওয়ায় এখানেই বাস করতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো: জাহিদুল ইসলাম জানান, শেরপুর-ভবানীপুর সড়কের উপর ঘর বাড়ি তৈরী করে শতাধিক পরিবার বসবাস করে বিষয়টি আমার জানা আছে। এদের অধিকাংশই নদী ভাঙ্গন কবলিত ভুমিহীন মানুষ।

তাদের পুর্নবাসন করা গেলে প্রশস্ত সড়কটি দখলমুক্ত করা সম্ভব। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর শেরপুর উপজেলার উপ সহকারি প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ জানান, শেরপুর-ভবানীপুর আঞ্চলিক সড়কটি আমি শুনেছি প্রায় ১শ ফুট প্রশস্ত এবং এর ১০ ফুট পাকাকরণ করা হয়েছে। তবে কতফুট প্রশস্ত তার সঠিক মাপ পাওয়া যায়নি। এটি অবৈধ স্থাপনা করে মিল কারখানা, চাতাল এবং বাড়িঘর নির্মিত হলেও আমাদের করণীয় কিছু নেই। আমরা সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি অবগত করেছি। এ ব্যাপারে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ময়নুল ইসলাম জানান, অবৈধ দখলদারদের তালিকা করে সরকারি রাস্তা থেকে তাদের উচ্ছেদের জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

error: Content is protected !!