হোম » শিক্ষা » বগুড়ার শিবগঞ্জে প্রধান শিক্ষক কর্তৃক সাত শিক্ষককে এমপিও ভুক্ত না করায় শ্রেণি কক্ষে তালা 

বগুড়ার শিবগঞ্জে প্রধান শিক্ষক কর্তৃক সাত শিক্ষককে এমপিও ভুক্ত না করায় শ্রেণি কক্ষে তালা 

বগুড়া প্রতিনিধিঃ বগুড়ার শিবগঞ্জে ২৩ বছর যাবৎ ৭জন শিক্ষক বেতন ভাতা না পেয়ে পরিবার পরিজনদের নিয়ে মানবতার জীবন যাপন। প্রধান শিক্ষক আবারো শিক্ষকদের নিকট থেকে টাকা দাবি করায় শিক্ষকরা ক্ষিপ্ত হয়ে  শ্রেণি কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, উপজেলার শিবগঞ্জ ইউনিয়নের ধাওয়াগীর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ১৯৯৯ সালে স্থাপিত হয়। প্রতিষ্ঠানটির শুরু থেকে ২৩ বছর যাবৎ শহিদুল ইসলাম মর্তুজা প্রধান শিক্ষককের দায়িত্বে রয়েছেন। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে শিক্ষকদের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়।
প্রতিষ্ঠানটি ২০১৯ সালে ২৩ অক্টোবর এমপিও ভূক্ত হয়। ১২ জন শিক্ষকদের মধ্যে প্রধান শিক্ষকসহ তার মনোনীত ৫জন সহকারি শিক্ষকদের  বেতন ভাতা ব্যবস্থা করেন। অবশিষ্ট ৭ জন শিক্ষকদের নাম এমপিও ভুক্ত করার  কোন ব্যবস্থা করেন নাই। এই শিক্ষকগণ বার বার প্রধান শিক্ষককে এমপিও ভুক্ত করার জন্য তাগিদা দিলে তিনি বিভিন্ন তালবাহানা করতে থাকে।
এব্যাপারে বিদ্যালয়ের এমপিও ভুক্ত অধিকার বঞ্চিত শিক্ষক ছারোয়ার জাহান (জীববিজ্ঞান), মোজাফ্ফর হোসেন (ইংরেজী), শ্যামল বর্মন (কাব্যতীর্থ), সোহজামান (বিপিএড), কনা বেগম (কম্পিউটার), মেরিনা আক্তার (বাংলা), নুরে ইয়াছমিন (পদার্থ বিজ্ঞান) অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষককের কারণে  গত ২৩ বছর যাবৎ বেতন ভাতা পাচ্ছি না। বিদ্যালয়টি এমপিও ভুক্ত হলেও প্রধান শিক্ষক স্বেচ্ছাচারিতার কারণে আমাদেরকে ৭ জন শিক্ষককে নাম ব্যতিত তিনি ও তাঁর সহযোগী ৫জন শিক্ষকের নাম এমপিও ভুক্ত করেছেন।
এই বিদ্যালয়ে পাঠদান করে ৫জন শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক বেতন ভাতাসহ সকল সুবিধা নিচ্ছেন। অথচ আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। তারা অভিযোগ তুলে  আরো বলেন,  প্রধান শিক্ষক মুর্তজা আমাদের নাম এমপিও ভুক্ত করতে তিনি পুনরায় প্রত্যেক শিক্ষকের নিকট থেকে ২-৩ লক্ষ করে টাকা দাবী করছেন। প্রধান শিক্ষক বঞ্চিত শিক্ষকদের টিউশন ভাতাসহ সরকার কর্তৃক সকল সুবিধা তিনি নিজেই ভোগ করছেন। প্রধান শিক্ষক গোপনে পত্রিকায় শিক্ষক  নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
শিক্ষকরা আরো বলেন, প্রধান শিক্ষক একজন দূর্নীতিবাজ তিনি গত কয়েক বছর এর মধ্যে ৪জন অফিস সহকারি ও দপ্তরী পদের জন্য ৪জন আয়া পদে একজনের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এর প্রতিবাদে ও প্রধান শিক্ষকের অবিলম্বে অপসারণের দাবীতে গত ২ অক্টোবর সকাল ১০ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত ১ ঘন্টা বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ করে ও প্রধান শিক্ষকের  কক্ষে ও শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
এব্যাপারে  উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এটিএম আব্দুল হামিদ বলেন,  এবিষয়টি জানার পর সরেজমিনে তদন্তের মাধ্যমে  প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  তাহমিনা আক্তার বলেন, বিষয়টি নিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে কথা বলে, তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মর্তুজার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে,  তিনি  বলেন এমপিও ভুক্তির জন্য ইতিমধ্যে ২ জন শিক্ষকের নাম প্রেরণ করা হয়েছে। বাকী শিক্ষকদের নাম এমপিও ভুক্তির জন্য কাজ করা হচ্ছে। তবে অচিরেই তাদের নাম এমপিও ভুক্ত করা হবে। তবে টাকা লেনদেন এর কোন প্রশ্নই ওঠে না।
অত্র বিদ্যালয়ের সভাপতি শাহিনুর রহমান বলেন, আমি কিছুদিন পূর্বে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছি। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দূর্নীতি সহ নানা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
error: Content is protected !!