হোম » প্রধান সংবাদ » সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের-ঢাকা ও চট্রগ্রামে মহান মে দিবস পালিত

সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের-ঢাকা ও চট্রগ্রামে মহান মে দিবস পালিত

আলমগীর হোসেনঃ  সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের স্বাস্থ্য বিধিমেনে সীমিত পরিসরে মহান মে দিবস উদযাপন।মহান মে দিবস‘ ২০২১ উপলক্ষে ঢাকা ও চট্রগ্রামে র‍্যালী ও শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত

আজ ০১ মে ২০২১ আর্ন্তজাতিক শ্রমিক দিবস, তাই শ্রমিকের মর্যাদা, অর্থনৈতিক মুক্তি, সামাজিক নিরাপত্তা, সর্বক্ষেত্রে নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আর্ন্তজাতিক শ্রমিক দিবস বিশ্বের দরবারে সমাদৃত। শ্রমিকের উপর বিভিন্ন নির্য়াতনের এবং কর্মঘন্টা নির্ধারনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৮৮৬ সালে সিকাগোতে প্রথম শ্রমিক আন্দোলন শুরু হয় তারই ধারাবহিকতায় একই সাথে প্রতিবছর বিশ্ব¦ব্যাপী পহেলা মে শ্রমিক দিবস হিসাবে পালিত হচ্ছে।

বিশ্ব¦ব্যাপী অর্থনিতিক মুক্তির লক্ষ্যে সকল শ্রমিকেরা সমান ভাবে অবদান রেখে চলেছেন কিন্তু এখনো তারা যোগ্য মর্যাদা এবং কাজের স্বীকৃতি পাচ্ছেন না। কর্মজীবী সকল শ্রমিক বিশেষ করে শ্রমিক নারী এখনো লড়াই করে চলছেন শ্রমিক হিসাবে তার মর্যাদা পাবার । বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে তৈরি পোশাক শিল্প সহ অন্যান্য রপ্তানিকারক শিল্প প্রতিষ্ঠানের অবদান অনিস্বিকার্য। তৈরী পোশাক শিল্পে নিযোজিত আছেন ৬০ ভাগ নারী যাদের শ্রম ও ঘামে অর্জিত হচ্ছে ৮৫ ভাগ বৈদেশিক মূদ্রা ।

কর্মস্থলে তৈরী পোশাক শিল্পে নিযোজিত সকল শ্রমিকের নিরাপত্তা, বাঁচার মত মজুরী অবাধ ট্রেডইউনিয়ন তরা সহ বিশেষ করে নারী শ্রামকের নিরাপত্তা, আইনি সহায়তা,মাতৃত্ব কালীন ছুটি এবং সম অধিকার বাস্তবায়ন লক্ষ্যে ৫ দফা দাবী ঘোষনা করে -করোনা সময়ে কারখানায় শ্রমিকের স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা ব্যব্স্থা নিশ্চিত করন,-পোশাক শিল্পে শ্রমিকের জন্য বাঁচার মত মজুরী ঘোষনা করা-নারী শ্রমিকের মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস ঘোষনা কর- অবাধ ট্রেডইউনিয়ন এর অধিাকাার নিশ্চিত কর এবং সকল কারখানায় জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ কমিটি গঠন করনের দাবীতে সাসম্মলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন সকাল ৯ ঘটিকায় মহাখালী রসুলবাগ হতে র‌্যালী এবং নাবিস্কো তেজগা ঁশিল্প এলাকা ও ছোট্র পরিষরে রসুলবাগে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি জনাব নাজমা আক্তার বলেন- সর্বপ্রথমে আমাদের করোনা কালীন সময়ে সকল কারখানার শ্রমিকের স্বাস্থÍ্য ও সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ তৈরী করতে হবে , শ্রমিকের নায্যপাওনা সময় মত আদায় করতে হবে ,বকেয়া বেতন বোনাসের পুর্বে পরিশোধ করতে হবে , ঈদের কম পক্ষে ১০ দিন পুর্বে ঈদবোনাস পরিশোধ করতে হবে । শ্রমিককে তার পুর্নমর্যাদা দিতে হবে, কর্মস্থলে সকল শ্রমিকের নিরাপত্তা বিশেষ করে নারী শ্রমিকের নিরাপত্তা সহ সকল নারী পুরুষের সহ-অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। অর্থনৈতিক মুক্তি এবং সমতা ভিত্তিক অর্থনীতি গঠনের লক্ষ্যে নারীর যাত্রাকে তরান্বিত করার মাধ্যমে নারীকে ক্ষমতায়িত করতে হবে। শ্রমিক হিসাবে নারী তার যোগ্য মর্যাদা, কর্মস্থলের নিরাপত্তা, চাকুরির নিরাপত্তা, পদোন্নতিতে সম অধিকার, নেতৃত্ব এবং ট্রেড ইউনিয়নে নারীর অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি আরো বলেন,গত ১৪ মে ২০০৯ মহামান্য হাইকোর্টের একটি দিকনির্দেশনা মুলক নীতিমালাকে আইনে বাস্তবায়ন, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানী প্রতিরোধ কমিটি গঠন, করার জন্য জোর দাবী জানানো হয় । জেন্ডার ভিক্তিক সহিংসতা রোধে ‘‘কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানী প্রতিরোধ আইন প্রণয়ন। পোশাক শিল্পে নিয়েজিত শ্রমিকের জন্য বাঁচার মত মজুরী ঘোসনা করে সকল-কারখানাসহ সকল প্রতিষ্ঠানে নারী বান্ধব কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সকল পর্যায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের কে আহব্বান জানানো হয় । শ্রম আইনে নারীদের বিভিন্ন সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হলেও সে গুলো প্রকৃত অর্থে দেওয়া হয় না। গর্ভবতী মায়েদের গার্মেন্টস মালিকেরা মাতৃত্বকালীন যে ছুটি দেন তা একজন গর্ভবতী মা এবং সন্তান প্রসব পববর্তী একজন শিশুকে দেখাশোনা করার জন্য যথেষ্ট নয়। একজন নারী শ্রমিক যখন মাতত্বৃকালীন ছুটি তে যান সন্তান প্রসবের পরে ৮সপ্তাহ পরেই তাকে কাজে যোগদান করতে হয় এতে সে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে পুরোপুরি প্রস্তুত থাকে না। এর ফলে উৎপাদন এবং উৎপাদনশীলতা ব্যঘাত হয়। অনেক ক্ষেত্রে নারীরা চাকুরী ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। এক জন দক্ষ নারী শ্রমিক যখন চাকুরী ছেড়ে চলে যান। তখন নারী শ্রমিক নিজে এবং সাথে সাথে নিয়োগ কর্তারাও সমান ভাবে ক্ষতি গ্রস্থ হয় এই ক্ষতি এড়ানো জন্য নিয়োগকর্তার ও গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করতে হবে। মাতৃত্ব কালীন ছুটি ১৬ সপ্তাহের পরিবর্তে ৬ মাস করার জন্য জোর দাবি জানাই। করানা সময়ে প্রতিটা নারী নেতৃ তাদের জীবনের ঝুকি নিয়ে প্রত্যেকটি শ্রমিকের পাশে দাড়িয়েছে তাই আমরা আজ মে দিবসের এই দিনে সে সকল সাহসী নারী নেতৃদের পাশে দাড়িয়ে তাদের কাজ করার প্রেরনা যোগানোর আহব্বান জানাই।

সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন এর সাধারন সম্পাদক জনাব নাহিদুল হাসান নয়ন বলেন- করোকালীন সময়ে স্বাস্থ্য বিধি মেনে সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করে সকল শিল্প কারখানা গুলোকে কাজ করার আহব্বান জানান । অর্থনৈতিক মুক্তি ও শিল্পের উন্নয়নের একমাত্র উপায় নারী পুরুষের সমতা এবং কাজের সম মর্যাদা তথা নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ গড়া সম্ভব আমরা সম অধিকার এবং সম সুযোগ নিয়ে নিরাপদ ও নেতৃত্বে নারীর অংশগ্রহন নিশ্চিত করার মাধ্যমে উৎপাদন মূখী শিল্পকে টেকসই করে গড়ে তুলব। কথায় কথায় যৌন হয়রানীমূলক কথা বলাসহ সকল ধরনের নির্যাতন ও হয়রানী বন্ধ করতে হলে একা একা প্রতিবাদ করলে চলবে না সংগঠিত হয়ে সকলে মিলে প্রতিবাদ করতে হবে। এর জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে দরকার যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি । তাই আসুন আমরা সকলে কর্মক্ষেত্রে ঐক্য বদ্ধ হয়ে নারী অধিকার ও যৌন হয়রানী প্রতিরোধ করার জন্য নির্যাতন ও হয়রানী প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তুলি।

খাদিজা আক্তার, সহ-সভাপতি, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন বলেন, করোনার ভয়াবহতায় যেন আমরা আমদের দৃঢ প্রত্যয় থেকে বিচ্যুত না হই আসুন করোনা মোকবেলা করে সামাজিক সুরকাষা নিশ্চি করে আমরা আমদেও লক্ষ অর্জন করি ।াপ্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতা মূলক যৌন হয়রানী প্রতিরোধ কমিটি করতে হবে। দেশের উন্নয়নের পিছনে আজ আমরা দেখতে পাই নারীর অবদান। তাই নারীদের অবহেলা না করে তাদের অধিকার ও মর্যাদা দিয়ে তাদের পাশে থেকে এগিয়ে যাওয়ার সহযোগীতা করার মানষিকতা থাকতে হবে। যাতে করে প্রতিটা নারী মূল্যবান সম্পদে পরিণত হতে পারে এই লক্ষ্যে সকলকে কাজ করতে হবে এবং প্রতিষ্ঠানে নারীরা যেন প্রশান্তি নিয়ে কাজ করতে পারে সেই ব্যাপারে কিছু নিয়ম নীতি তৈরী করতে হবে। আমরা জানি, একটি নীতিমালা একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য শক্তি। তাই আমরা ব্্রান্ডদের দায়িত্ব সর্ম্পকে স্পস্ট জবাবদিহিতা থাকার প্রয়োজন। আসুন আমরা সকলে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের জন্য বাধ্যতা মূলক যৗন হয়রানী প্রতিরোধ কমিটি জেন্ডার নীতিমালা বা পলিসি তৈরীতে অগ্রনী ভুমিকা পালন করি।

উক্ত র‌্যালী ও শ্রমিক সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন আওয়াজ ফাউন্ডেশনের সভাপতি জনাব মমতাজ বেগম সহ আখিঁ, তমাশ্রী, সালমান,ইমরান রহমান,আনিসুর রহমান খান,এমরান খান, , শিরিন আক্তার, ইয়াসমিন সুলতানা, শ্রাবনী, মামুনুর রশিদ, তোফায়েল আহম্মেদ, সৈকত চৌধুরী, আরিফুজ্জামান, বি এম হাকীম, আনিসুর রহমান, তামান্না আক্তার, সানজিদা পারভীন, সমপ্রীতি আলী, ফরিদ মিয়া, শেখ রুবেল, আলমগীর হোসেন, হাবীবুর রহমান, আরিফা বেগম, হ্যাপী বেগম, মো:আশিদ,আলমগীর হোসেন লালচান, শারমিন আক্তার, উর্মি আক্তার, হালিমা বেগম, রেশমি বেগম, লিলি বেগম, সম্পা আক্তার, এনামূল হক, রিনি, একরামূল হক, দিপালী রানী ও, অমিত সহ বিভিন্ন ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ।

error: Content is protected !!