হোম » Uncategorized » জাতীয় শ্রমিক জোট এর কমেরড তাজুল দিবস পালিত

জাতীয় শ্রমিক জোট এর কমেরড তাজুল দিবস পালিত

আব্দুর রাজ্জাকঃ “কমেরড তাজুল দিবসে- ৩৯তম মৃত্যু বার্ষিকে জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশ এর পক্ষ সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা এবং সহ সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকে শ্রদ্ধা নিবেদন” করেন।

১৯৮৪ সালের আজকের দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র – বাংলাদেশের শ্রমিক আন্দোলনের অগ্রদূত কমরেড তাজুল ইসলাম- স্বৈরশাসক এরশাদের গুণ্ডাবাহিনীর ছুরিকাঘাতে মারাত্মকভাবে আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মার্চ মৃত্যুবরণ করেন(আমরা তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি)। সেই থেকে ১ মার্চকেই ‘তাজুল দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে তার সহযোদ্ধারা।

১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে সহ পরিবারে হত্যা, জাতীয় চার নেতা হত্যা, কর্নেল আবু তাহেরকে ষড়যন্ত্র মূলকফাঁসী প্রদানের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ যখন ক্ষত বিক্ষত,সেই সময় কালের চাকাকে উল্টে দিয়ে বিশ্বাসঘাতক মোশতাক চক্র জেনারেল জিয়ার সহায়তায় ক্ষমতা দখল করে। পৌনঃপুনিক সামরিক শাসনের যাঁতাকলে আটকে যায় বাংলাদেশ। বিপন্ন বাঙ্গালী জাতির স্বাধীনতার চেতনা, মানবিকতা,৭২এর সংবিধান, অসাম্প্রদায়িকতার মূল্যবোধ।

সামরিক শাসনের ধারাবাহিকতায় নানাবিধ ষড়যন্ত্র, হত্যা, ক্যুর মাধ্যমে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি হিসেবে ক্ষমতা দখল করে সামরিক শাসন জারি করে নিজেকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে ঘোষণা করেন ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ। সেদিন থেকেই প্রতিবাদের ঝড় ওঠে গনতান্ত্রিক বাঙালি, ছাত্র, শ্রমিক মেহনতী জনতা মাঝে। তঁরা কখনই বাংলাদেশে সামরিক শাসন মানে নাই । ১৯৮৩ সালের মধ্য ফেব্রুয়ারিতে অপ্রতিরোধ্য ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হন দীপালি সাহা, মোজাম্মেল, কাঞ্চন, আইয়ুবসহ অসংখ্য সাথী। পিচঢালা রাজপথ রক্তে রঞ্জিত হয় সামরিক জান্তার বুলেট ও বেয়নেটে। ব্যাংকিং সেক্টরে বিরাষ্ট্রীয়করনের বিরুদ্ধে গড়ে উঠে প্রতিটি ব্যাংকের কর্মচারী সংসদ নামে ট্রেড ইউনিয়নে আন্দোলন শক্তি।

এরশাদ ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের নামে উপজেলা পরিষদের কাঠামো তৈরি করে নির্বাচনের ঘোষণা দেন। এর বিপরীতে ১৫ দলীয় রাজনৈতিক জোট, ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) ও অন্যান্য পেশাজীবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠে। উপজেলা নির্বাচন প্রতিহত করার লক্ষ্যে ১৫ দলীয় রাজনৈতিক জোট হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করে। হরতাল সফল করার জন্য ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ রাজপথে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি গ্রহণ করে। স্কপ শিল্প-কলকারখানায় ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট আহ্বান করে।

স্কপের ধর্মঘটের সমর্থনে দেশের কলকারখানায়,রাষ্ট্রায়ীত্ব ব্যাংক বীমা, বিদ্যুৎ, বিএডিসি, পানি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে ধর্ম ঘটের প্রস্তুতি চলছিল। তখন ২৯ শে ফেরুয়ারী দেশের সর্ববৃহৎ পাটকল ‘আদমজী’তে ধর্মঘট প্রস্তুতির মিছিলে হামলা চালিয়ে খুনি এরশাদের মদদপুষ্ট ছায়াদুল্লাহ সাদুর গুণ্ডাবাহিনী ছুরিকাহত করে শ্রমিক নেতা বীর কমরেড তাজুল ইসলামকে। ১মার্চ হরতাল চলাকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে কমরেড তাজুল ইসলাম শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ।

আজ কমরেড তাজুল ইসলামের ৩৯ তম মৃত্যু বার্ষিকী। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ এবং জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশ এই দিনটিকে শ্রদ্ধার সহিত স্বরণ করছে এবং মরহুম এর আত্মার শান্তি কামনা করছে।
বিপ্লব দীর্ঘ জীবি হউক।

error: Content is protected !!