হুমায়ুন কবির সুমন: সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়নের আলমপুর হাই স্কুল জামে মসজিদের পাশের জমি দখল করে দোকান ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় এলাকায় মুসল্লিদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। মসজিদের জমি রক্ষার দাবি জানিয়ে এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেছে বলে জানা গেছে।
সোমবার (৫জুন) সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, জেলা পরিষদ ও স্থানীয় বিভিন্ন ব্যক্তিদের অর্থায়নে আলমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে এলাকাবাসীর প্রচেষ্টায় একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়।
দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মুসল্লিগণ সেখানে নামাজ আদায় করে আসছে।
সম্প্রতি মসজিদটিতে মুসল্লিদের জায়গা সংকুলান না হওয়ায় এলাকাবাসীর সহায়তায় মসজিদ কমিটি মসজিদটি বড় করার জন্য সিদ্ধান্ত নেন। ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক টাকার বিনিময়ে মসজিদ প্রশস্ত না করে দোকান নির্মাণের পায়তারা করছে।
এমন সংবাদের ভিত্তিতে বহুলী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি সাইদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মমিন ও স্থানীয় দোকানদার আল-আমিন, রফিকুল ইসলাম, আবু হোসেন মসজিদের জায়গা সংকুলান করে দোকান নির্মাণের প্রস্তুতি নেয়।
মসজিদ কমিটি ও এলাকাবাসী এ ঘটনার প্রতিবাদ জানালেও এই চক্রটি কাউকে তোয়াক্কা না করে দোকান ঘর নির্মাণ করার চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যুবস্থা গ্রহণের জন্য মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে মৌখিক ভাবে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ করেছে।
মসজিদের জমি দখলের বিষয়ে অভিযুক্ত সাইদুল ইসলাম ও আব্দুল মমিন বলেন, মুলত মসজিদের কোন জায়গা নেই। যে জায়গায় মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে সেটা সরকারী জায়গা।
মসজিদের সামনে দীর্ঘদিন ধরে আল-আমিন, রফিকুল ইসলাম, আবু হোসেন নামে তিনজন দোকান করে আসছে।
বর্তমানে মসজিদটি ২য় তলা ও মুসল্লিদের নামাজের জায়গা প্রশস্ত করা হচ্ছে। কিন্তু ওই তিন ব্যবসায়ী কোথায় দোকান করবে এ বিষয়টি চিন্তা করে দোকানগুলো ভেঙ্গে না দিয়ে মসজিদটি প্রশস্ত কমিয়ে নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি সাইদুল ইসলাম নিজেই রাজ মিস্ত্রী হিসেবে মসজিদের নির্মাণ কাজ করছে।
আলমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান মজনু বলেন, বিদ্যালয়ের মধ্যে টিনের মসজিদ ছিলো। সেই মসজিদটি ২য় তলার নির্মাণ কাজ চলছে। কিন্তু মসজিদের সামনে ৩টি দোকান রেখেই নির্মাণ কাজ হচ্ছে। কি কারণে দোকানগুলো রেখে নির্মাণ কাজ চলমান আছে এবিষয়ে আমার জানা নেই।
আলমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের স্কুল কমিটির সভাপতি হেকমত উল্লাহ খান বাবু বলেন, দোকানগুলো ভেঙ্গে না দিয়ে মসজিদটি প্রশস্ত কমিয়ে নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। মসজিদের জায়গা থাকতে মসজিদের প্রশস্ত কমিয়ে মসজিদের সামনে ৩টি দোকান রেখেই নির্মাণ কাজ হচ্ছে। আমরা বারবার বলার পরেও জোরপূর্বক নির্মাণ কাজ চলমান রেখেছে তারা।
বাজার কমিটির সভাপতি ও আলমপুর হাই স্কুল জামে মসজিদের সাবেক সভাপতি মহিদুল হক খান বলেন, আমরা অনেক কষ্ট করে মসজিদটি নির্মাণের জন্য উদ্যোগ নেই।
মসজিদটি কাজ শুরুর জন্য সকল প্রস্তুতি নেই আমরা এমত অবস্থায় মসজিদের কাজের নিয়োজিত মিস্ত্রীকে বাদ দিয়ে ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি সাইদুল ইসলাম নিজেই রাজ মিস্ত্রী হিসেবে মসজিদের নির্মাণ কাজ করছে। মসজিদের জায়গা থাকতে মসজিদটির প্রশস্ত কমিয়ে কেন দোকান ঘর নির্মাণ করছে আমি বুঝতে পারছিনা।
বহুলী ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফোরহাদ হোসেন বলেন, প্রথম দরবারে আমি ছিলাম। কিন্তু তারা কি সিধাস্ত নিয়েছে আমি জানি না। এবিষয়ে আমাকে আর অবগত করা হয়নি বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাশুকাতে রাব্বীকে বার বার ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
আরও পড়ুন
টেন্ডারে অনিয়মসহ একাধিক অভিযোগে সাময়িক বহিষ্কার বশেমুরবিপ্রবি’র ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প পরিচালক
তাড়াশে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান কারাগারে