হোম » অন্যান্য বিভাগ » বোরহানউদ্দিনে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুরের রস

বোরহানউদ্দিনে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুরের রস

জেএম.মমিন: এক সময় ভোলার বোরহানউদ্দিনের গ্রামগঞ্জ গুলোত শীতের মৌসুম আসলে ভোর বেলায় দেখা যেত গাছিরা গাছ থেকে রস সংগ্রহ, বিক্রি, গুড় তৈরি ও খেজুর গাছ কাটার সরঞ্জামসহ ব্যস্ত সময় পার করছেন  ৷
শীতের মৌসুম শুরু হতেই ঘরে ঘরে শুরু হত খেজুর রসের ফিন্নি ও গুড় দিয়ে তৈরি বিভিন্ন মজাদার পিঠা পুলির আয়োজন ৷ কিন্তু সেখানে আজ এমন দৃশ্য দেখাই দুষ্কর ৷
খেজুর রসের প্রচুর চাহিদা থাকলেও জলবায়ু পরিবর্তন ও কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে শুরু করেছে খেজুরের গাছ ও রস। পেশা বদল করে নিচ্ছেন এর সাথে সম্পৃক্তরা ৷ তাই গ্রামে গ্রামে ঘুরেও খুব সহজে পাওয়া যায়না খেজুর রস।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুড়ে দেখা যায়, অল্প সংখ্যক লোক এখন এ পেশার সাথে যুক্ত ৷ তারা অন্য পেশার পাশাপাশি এটি ধরে রেখেছেন ৷ তাদেরই একজন দেউলা গ্রামের গাছি ইসমাইল ঢালী তিনি জানান, আমি দীর্ঘ ৩৫ বছর যাবৎ এই পেশার সাথে জড়িত ৷
এক সময় আমি ১৫০ টি গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতাম ৷ শীত আসলে খেজুর রস ও গুড় বিক্রি করে সংসার চালাতাম এবং ৭০-৮০ হাজার টাকা আয় করতাম ৷  কিন্তু গত ১০ বছর থেকেই আস্তে আস্তে খেজুর গাছের সংখ্যা কমতে শুরু করে ৷ এবছর মাত্র ২৫ টি গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছি ৷
সাঁচরা ইউনিয়নের বাথান বাড়ী গ্রামের গাছি, নেছার মীর ও আকবর জানান, আমাদের আশেপাশে আগে প্রচুর খেজুর গাছ ছিল ৷ দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে তা হারিয়ে যাচ্ছে এখন আর তেমন গাছ নেই ৷ তাই আমরা রসও সংগ্রহ করতে পারছিনা ৷ তারা আরো জানান, গাছ কম থাকায় বর্তমানে রসের চাহিদা ও দাম অনেক বেশি ৷ এবছর প্রতি হাড়ি রস ১৫০ টাকা ও প্রতি কেজি খেজুর গুড় ২৫০-৩০০ টাকা করে বিক্রি করছেন তারা ৷ অগ্রিম টাকা নিয়েও মানুষের চাহিদা অনুযায়ী রস দিতে পারছেন না ৷
বোরহানউদ্দিন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এইচ.এম শামীম  জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ও অহেতুকভাবে গাছ কেটে ফেলায় অনেকটাই বিলুপ্তির পথে খেজুর গাছ। আগে যারা এ পেশায় ছিল তাদের বেশির ভাগ গাছি মৃত্যু বরণ করেছেন ৷ বর্তমান প্রজন্ম এই পেশা আসতে চান না ৷ এ বিষয়ে সবার সচেতন হতে হবে এবং এগিয়ে আসতে হবে ৷
পাশাপাশি খালি জায়গা ও রাস্তার পাশে খেজুরের বীজ বপন করে রক্ষনাবেক্ষন করতে হবে ৷ তিনি আরো জানান, প্রতি বছর আমরা বিভিন্ন জাযগায় তাল ও খেজুরের বীজ রোপন করছি ৷
error: Content is protected !!