হোম » মতামত » মানুষ মানুষের জন্য

মানুষ মানুষের জন্য

সাইমানা ইসলাম সাফিয়া: ১৮.০১.২০২২ইং সকাল ১০.৩০,১১ টার দিক আমি আমার ছোট বোনকে নিয়ে হসপিটালে যাওয়ার পথে দেখলাম পাবনা দই বাজারের মোড়ের মাঝখানে একটা ছেলে একটা ভ্যান গাড়ির মধ্যে রক্ত বমি করছে,কিছুই বলতে পারছে না,নাক মুখ দিয়ে রক্ত ফেফরি বের হচ্ছে আর সবাই তাকিয়ে দেখছে কিন্তু কেউ এগিয়ে এসে সাহায্য করছে না।আমি বললাম আমার বোনকে চল এগিয়ে দেখি কি হচ্ছে ওখানে আমার বোন বললো ওখানে যা হচ্ছে হোক তোমার দেখতে হবে না চলো তো এখান থেকে।

হয়ত ৮.১০ জন মানুষের মত এগিয়ে আশা দেখে ও ভয় পাচ্ছিল এসব ঝামেলা দেখে।কিন্তু আমি বললাম চলো দেখি ভালো করে কি হয়েছে জিগ্যেসা করলাম ছেলে টা কে?কোথায় বাড়ি? সবাই বললো আমরা কেউ চিনি না।কোথা থেকে যেন এই ভ্যানের উপর পড়ছে প্রায় ৩০,৪০ মিনিট হবে হয়ত এমন রক্তে কাতরাচ্ছে। কিন্তু কিছুই তো বলতে পারতাছে না।হয়ত বিষ অথবা বিষাক্ত কিছু খাইছে। আমি বললাম আপনারা সবাই ওর আত্মীয় স্বজন কে খবর দেন।কেউ চিনেন ও না জানেন ও না তাহলে ওকে ধরে আপনারা হসপিটালে নেন তাহলে হয়ত ওকে বাঁচানো যাবে, সবাই ভয় পাচ্ছে এটা তো পুলিশ কেস বলে।আমি বললাম একটা জীবন তো বাঁচাতে হবে।

তারপর হয়ত ওর খোঁজ খবর পুরো ডিটেইলস খুঁজে বের করেন।সবাই বল্লো এই লোকের দায়িত্ব কে নিবে?আপনি নেন,আমি বললাম আচ্ছা আমি নিচ্ছি ওনার দায়িত্ব। আপনারা ওনাকে একটু ধরে একটু গাড়িতে তুলে দেন কিন্তু কেউ আমাকে সাহায্য করেনি ছেলেটাকে হসপিটালে নিতে, আমি একাই ছেলেটাকে নিয়ে হসপিটালে যাই, কিন্তু আমার একা ছেলে টাকে নেওয়া খুব কষ্ট হয়ে গেছিলো ছেলেটার মরণ জন্তনা উঠে গেছিলো শুধু গূ্্ড়াতে ছিলো আমি একা সামলাতে কঠিন হয়ে গেছিলো তাও ওভাবেই নিয়ে জাই ,এদিকে আমার ছোট বোন এসব ঘটনা দেখে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।বোনকে অন্য একটা রিকশা তে দিয়ে বল্লাম আপনি আমার পিছে পিছে হসপিটালে আসেন আহত ব্যক্তিকে সদর হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার সময় ভাবলাম একবার থানাতে বলে যাই যদি ওরা কোন সাহায্য করে আমার সাথে মিলে ছেলেটাকে বাঁচাতে, হসপিটালে যাওয়ার পথে থানাতে গেলাম আর বললাম এই এই অবস্থার ছেলেটার চলেন আপনাদের মধ্যে থেকে একজন পুলিশকে দেন আমাকে একটু সাহায্য করবে।

ছেলেটাকে বাঁচাতে বা কি করা যায় বলেন।একজন পুলিশ বল্লো আগে হসপিটালে নিয়ে যান।আমি ওকে নিয়ে হসপিটালে ভর্তি করলাম।এই দিকে বোনের চিকিৎসাও চালালাম।ডাক্তার ছেলেটাকে দেখে বল্লো ওকে তাড়াতাড়ি রাজশাহী হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে।ওর একটা ফোন ছিল,বাট সেটা নক করা ছিল,কিন্তু এমন অবস্থায় একটা কল আসছিল ছেলেটার ফোনে।তাই আমি ফোন রিসিভ করে বললাম কে আপনি,বাসা কই কিছুই জানি না এই ফোনটার মালিক খুব অসুস্থ আপনি ওর বাবা মাকে খবর দেন।সবাই কে সদর হসপিটালে আসতে বলেন।ওর কিছু ঔষধ লাগল সেগুলো নেওয়ার জন্য কে যেন ওর ফোন রাখল বন্ধুক আমি যে টাকা গুলো দিয়ে ফোনটা উদ্ধার করলাম এবং রাজশাহী নেওয়ার জন্য সব কিছু ব্যবস্থা করলাম ছেলেটার বন্ধু রা আসল তাদের সাথে মিলে তারপর ওর আত্মীয় স্বজন ও মা বোন আসল।এদিকে আমার বোনকে চিকিৎসা দেয়ার পর বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করে দিলাম।

ছেলেটার মা বোনকে বললাম তাইলে এবার ওকে ভালো করে রাজশাহী নিয়ে যান।সবাই অনুরোধ করে আমাকে বললো আমাদের সাথে তুমিও চলো। আমরা তেমন কিছু বুঝিনা চিনিও না কি করলে কি করা লাগে আমরা তাও জানিনা তুমি গেলে আমাদের একটু উপকার হয়। ওদের অনুরোধ না ফিরাতে ছেলেটার সাথে গিয়ে হসপিটালে সব চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়ে চলে আসলাম।পরে ওর স্বজন দের থেকে জানতে পারলাম ছেলেটার বাড়ি বাংলা বাজার নাম সোহান।ওরা গরিব মানুষ, সোহানের অবস্থা তেমন ভালো না সম্ভবত অনেক বিষাক্ত কিছু খেয়েছে।এখন কিছুটা ভালো ও চিকিৎসার পড়ে যানতে পারলাম এসিড এবং অনেক গুলো ঘুমের ইত্যাদি ঔষধ খেয়েছিলো তবে বলা যাচ্ছে না কি হবে সবার থেকে দোয়া চাই ছেলেটা যেন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে মায়ের বুকে ফিরে আসে আমিন।

(আমার মনে হয় কেউ মরে যাচ্ছে এমন অবস্থায় আমাদের উচিৎ তাকে আগে সাহায্য করা,সে ভাল মন্দ সেটা না জেনে আগে তাকে জীবন বাঁচাতে সাহায্য করা।আপনার আমার লক্ষ্য থাকা উচিৎ আগে তাকে বাঁচানো।

আপনার যদি এতটা বিপদের ভয় থাকে তাহলে আপনি নিজে বিপদে পড়বেন না এমন ভাবে সতর্কতার সাথে যে ভাবে সাহায্য করলে একটা জীবন বাঁচানো যাবে সেভাবে বাঁচান। আপনি নিজেও বাঁচেন এবং অপর কে জীবন বাঁচাতে সাহায্য করুন।কেননা জীবন বাঁচানো ফরজ ইবাদত।
মোছাঃ সাইমানা ইসলাম (সাফিয়া)

error: Content is protected !!