হোম » মতামত » ড.মোহাম্মদ ইউনুসের সরকার : নির্বাচন ও জনগণের প্রত্যাশা

ড.মোহাম্মদ ইউনুসের সরকার : নির্বাচন ও জনগণের প্রত্যাশা

বাংলাদেশে ব্যাপক আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার পতনের তিনদিন পর গত ৮ আগষ্ট ২০২৪ নোবের বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে ১৭ জন উপদেষ্টা নিয়ে গঠিত হয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। উপদেষ্টাগণের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর, মুক্তিযুদ্ধের প্রতিনিধি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, মানবাধিকার কর্মী, সাবেক পররাষ্ট্র সচীব, সাবেক নির্বাচন কমিশনার, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা, কয়েকজন এনজিও প্রতিষ্ঠান প্রধান, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, দুজন ছাত্র প্রতিনিধি, একজন করে মাইনোরিটি, নৃগোষ্টি ও ইসলামী সংগঠনের প্রতিনিধি রয়েছেন।

মুটামুটিভাবে সর্বজন গ্রাহ্য, সর্বদলীয়, সর্বগোত্রীয় সাবেক-বর্তমান, নবীন-প্রবীন মিলে এই উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়েছে। ইতোমধ্যে মহামান্য রাষ্টপতি কর্তৃক শপথ গ্রহণ শেষে উপদেষ্টাগণ নিজ নিজ দায়িত্ব ও মন্ত্রনালয় বুঝে নিয়েছেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানতম দায়িত্ব হল একটি প্রতিনিধিত্বমূলক অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়া। পাশাপাশি স্বৈরতন্ত্র ও দাম্ভিকতার গহবরে হারিয়ে যাওয়া কাঙ্খিত গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করে দেশে জনগনের শাসন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। ড. ইউনুসের সরকারকে আরও যেটি করতে হবে তাহল বিতর্কিত ও স্বৈরতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা ভেঙ্গে বেশকিছু সংস্কার ও উদ্যোগ গ্রহণ করে সর্বক্ষেত্রে ন্যায্যতা ও শৃংখলা ফিরিয়ে আনা।

সচিবালয়সহ মাঠপর্যায়ে প্রশাসনে প্রয়োজনীয় সংখ্যক রদবদলের মাধ্যমে দলীয় দাসত্ব ও সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিতে হবে। পুলিশ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে যারা বিভিন্ন অপকর্ম-হত্যা, ঘুম, খুন, চাঁদাবাজি, দলবাজি, বিচাবহির্ভুত হত্যাকান্ড ও গণবিরোধী কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা। সকল পুলিশ সদস্যকে অতিদ্রুত কাজে ফিরিয়ে আনতে হবে এবং তাদের হারানো মনোবল ফেরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। থানাগুলোর কার্যক্রম অতিদ্রুত চালু করতে হবে, প্রয়োজনে জরুরী ভিত্তিতে পুলিশ নিয়োগ দিতে হবে।

অবশ্য সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত পুলিশ প্রধান সকল পুলিশ সদস্যদের কর্মস্থলে যোগদানের কাজ ইতোমধ্যে শুরু করেছেন এবং আশার কথ হল দেশের মোট ৬৩৯টি থানার মধ্যে ৫৯৯টি থানার কার্যক্রম শুরু করতে পেরেছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সকল সরকারী ও বেসরকারী ব্যাংকসমূহ ও আর্থিক খাতের শৃঙখলা ফেরাতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ ডেপুটি গভর্নররা ইতোমধ্যে আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।

এসব পদে দজ্ঞ ও যোগ্য লোকদের নিয়োগ দিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভচুরি, হলমার্ক কেলেংকারী, এসআলম গ্রুপ, বিসমিল্লাহ গ্রুপ, ক্রিসেন্ট লেদার গ্রুপ, পিকে হালদার ও বাচ্চুসহ যারা ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাত ও পাচার করেছে তাদের বিচার করতে হবে।

বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে পুনঃরুদ্ধার করতে হবে। হাসিনা সরকার নিজেদের মসনদ টিকিয়ে রাখার জন্য র‌্যাব পুলিশের পাশাপাশি বাংলাদেশের আইন-আদালতকে দলীয় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে, সেই ব্যবস্থার দ্রুত উত্তরণ ঘটাতে হবে। ইতোমধ্যে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের পর সৈয়দ রেফাত আহমেদ প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।

বিচারপতি খাইরুল হক ও বিচারপতি মানিকের মতো সংকট সৃষ্টিকারী দলদাস বিচারপতিদের বিচার করতে হবে। দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই,বিজিএমইএসহ সকল ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোকে নজীরবিহীন একদলীয় আওয়ামি কাঠামো থেকে উদ্ধার করতে হবে এবং দজ্ঞ ও প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। দেশের ব্যবসা বানিজ্য
সচল রাখার লক্ষ্যে ব্যবসায়ীদের জন্য নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। দেশের সকল কলকারখানা ও গার্মেন্টসগুলো পুরোদমে চালু করতে হবে এবং প্রয়োজন হলে ছুটির দিনগুলোতেও কাজের ব্যবস্থা করতে হবে।

                     ছবি সংগৃহিত : বঙ্গভবনে ঐতিহাসিক শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান।
দেশে ডলার সংকট নিরসন ও পর্যাপ্ত এলসির ব্যবস্থা করতে হবে যাতে করে খাদ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের সংকট নিরসন করা সম্ভব হয়। যারা কৃত্রিমভাবে ডলার সংকট সৃষ্টির সংঙ্গে যুক্ত তাদের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে বিচারের আওতায় আনতে হবে। শেয়ার কেলেংকারী ও ডলার খেকো দরবেশ বাবাদের বিচার করতে হবে। মূদ্রাস্ফিতি ও দব্যমূল্যের উধর্¦গতি নিরসনের লক্ষ্যে জ্বালানী ও কৃষি ভর্তুকি বৃদ্ধিসহ বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। দেশের ক্রীড়াঙ্গনে যে অস্থিরতা ও শুন্যতা চলছে তা নিরসন করতে হবে।

বিশেষকরে বিসিবিতে পাপন বাহিনী ও বাফুফেতে সালাউদ্দিন বাহিনী যেভাবে বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ চরদখলের মতো নিজেদের দখলদারিত্ব বজায় রেখেছে তাতে করে সেখানেও একটি স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আওয়ামিলীগের সাবেকএমপি ও সাবেক বিসিবি প্রধান সাবের হোসেন চৌধুরীও পাপন বাহিনীর বিপরীতে নির্বাচনের ঘোষনা দিয়ে নির্বাচন করার সাহস পাননি। আর কাজী সালাউদ্দিনতো গত ১৭ বছর ধরে বাফুফেকে পিতৃপুরুষের সম্পত্তি বানিয়ে রেখেছেন। বর্তমানে পাপন ও সালাউদ্দিন বাহিনী স্বেচ্ছায় পদত্যাগ নাকরে বরং সংকট সৃষ্টির জন্য নির্লজ্জ ও চোরের মতো পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

বর্তমান সরকারকে ফিফা ও আইসিসির আইনের মধ্যে থেকে যথাসম্ভব তাদের বিকল্প নিয়োগ দিতে হবে যাতে করে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে শ্রীলংকারমতো নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে।

সবার সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে শত্রুতা নয়-এই পররাষ্ট্রনীতিকে আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলতে হবে। শুধু ভারত, রাশিয়া বা চীনের সঙ্গে নয় বরং সকল দেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বমুলক একটি সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।

প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ন, কার্যকরী ও বন্ধুত্বমূলক সম্পর্ক ধরে রাখতে হবে। ভারতকে বুঝাতে হবে ড. ইউনুসের সরকার ভারতের জন্য কোনভাবেই হুমকির কারন নয়। তাছাড়া বাংলাদেশের আমদানী বানিজ্য এতরফাভাবে ভারতীয় পন্যের উপর নির্ভরশীল। ভারত যাতে পন্য রপ্তানির ক্ষেত্রে কোন প্রকার বাধা প্রদান না করে তার জন্য কুটনীতিক প্রচেষ্ঠা বজায় রাখতে হবে।

অবিলম্বে বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় ভিসা অফিসগুলোর কার্য়ক্রম অতিদ্রæত চালু করার ব্যবস্থা করতে হবে। কারন বাংলাদেশে বহু জটিল রোগী আছে যারা ভারতে গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন এছাড়াও অনেককে ব্যবসার কাজে, আত্বীয়-স্বজনের সাথে দেখা সাক্ষাত ও অন্যান্য কাজে ভারতে যেতে হয়।

হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে চার শতাধিক মানুষের প্রাণহানী ঘটেছে, অনেকের মতে এটি হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর আগে বাংলাদেশের কোন আন্দোলনে এতো বিপুল সংখ্যক প্রাণহানী ঘটে নাই। দীর্ঘ ৯ বছরের স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনেও মাত্র গুটিকয়েক লোকজনের প্রাণহানী ঘটেছিল। প্রতিবেশী দেশ শ্রীলংকাতেও সরকার পতন আন্দোলনে মাত্র ১০ জনের প্রাণহানী ঘটেছে।

চলমান আন্দোলনে যারা শহিদ হয়েছেন তাদের একটি পূনাঙ্গ ও সঠিক তালিকা করে বিশেষ সম্মাননা ও তাদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে হবে। এই আন্দোলনে প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার ছাত্র, যুবক পুঙ্গত্ববরন করেছেন, তাদের জন্য চাকরীর ব্যবস্থা করতে হবে। হাসিনা সরকারের পতনের পর বিপুল পরিমান রাষ্টীয় সম্পদ ধ্বংস ও আগুনে পোড়ানো হয়েছে যা পুরণ করতে সরকারের বেশ বেগ পেতে হবে। সাবেক সরকারের উচ্চ বিলাসী প্রকল্প গ্রহন, অর্থপাচার ও দেশের চলমান আন্দোলনের সময় সরকার কর্তৃক
ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন থাকার দরুন দেশের বৈদেশিক রিজার্ভের পরিমান উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। তাছাড়া দব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সাবেক সরকারের রেখে যাওয়া ৫শ ৬৩ কোটি ডলার ঋণ, সীমাহীন দূর্নীতি, নজিরবিহীন দলীয়করন ও লুটপাট দেশকে একটি ভঙ্গুর কাঠামোর মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

এতো কিছু সামাল দিয়ে ড. ইউনুসের সরকারকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে, ব্যাপারটি মোটেও সহজ নয়। ড. ইউনুসের সরকারকে সকল প্রকার লোভ লালসার ঊর্ধ্বে থেকে জনগনের জন্য কাজ করে যেতে হবে। অতিদ্রুত একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন দিতে হবে। অনেকে বলছেন তাহলে নির্বাচন কতদিনের মধ্যে হবে। উপদেষ্টাগণও সেটা পরিষ্কার করে বলছেন না বরং তাদের কথাবার্তায় অস্পষ্টতা ও কৌশল লক্ষ্য করা যাচেছ।

একজন উপদেষ্টাতো বলেই ফেললেন ‘মেয়াদ মেয়াদ (নির্বাচনের) করে অস্থির হওয়ার কিছু নাই’ অথচ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। অনেকের মতো ব্যক্তিগতভাবে আমিও মনে করি সেটা ৩-৬ মাস হলেই ভাল হবে। আর যদি নির্বাচন দেয়ার মেয়াদ ১ বছর বা ২ বছর কিংবা তারও অধিক হয় তাহলে সেটার ভবিষ্যত কোনভাবেই ভাল হবেনা। অতীত অভীজ্ঞতাও কিন্তু তাই বলে, বিগত ওয়ান ইলেভেনের সরকারও অতিরিক্ত সময় নিতে গিয়ে নিজেদেরকে চরমভাবে বিতর্কিত করেছে।

তাছাড়া তখনকার প্রেক্ষাপট আর বর্তমান প্রেক্ষাপট এক নয়। তখন রাজনেতিক দলগুলোর মধ্যে সমযোতার অভাব ছিল এবং তত্তাবধায়ক সরকার নিয়ে পারস্পরিক অবিশ্বাস চরম পর্যায়ে রুপ নিয়ে ছিল। সেই সময়ে সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল- দেড় কোটি ভুয়া ভোটার রয়েছে, এই ভোটার তালিকা দিয়ে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই ত্রুটিপূর্ণ ভোটার তালিকার পরিবর্তে একটি ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রনয়ন ও জাতীয় আইডি কার্ড প্রদানের কারনে সেই সময়ে নির্বাচন দিতে আড়াই
বছর লেগেছিল।

কিন্তু এখনতো দেশে সেই সমস্যা নেই বরং দীর্ঘদিন ধরে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতন্ত্রের আকাল চলছে। মানুষ গত ১৫ বছর ধরে কোন নির্বাচনেই নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে নাই। এমনকি বিতর্কিত শেখ হাসিনা সরকারের জন্য জনগনের ভোটের দরকারও হয় নাই। হয় বিনাভোট না হয় রাতেরভোট অথবা ভোটারবিহীন নির্বাচন দেখে দেখে জনগন তিক্ত বিরক্ত।

তাছাড়া মানুষ এখন অনেক সচেতন, মানুষকে এখন সলিমবুঝ দেয়া কঠিন। দেশে সাড়ে ৪ কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে, দেশে ৫০টির মতো ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া, ৩২১০টি সংবাদপত্র রয়েছে। এছাড়াও অনলাইন নিউজ পোর্টাল আছে ২ শতাধিক। মানুষ এখন উনিশ থেকে বিশ হলেই সমালোচনা শুরু করেন ।

এছাড়া দেশী-বিদেশী চাপ, রাজনৈতিক দলগুলোর চাওয়া, ইসলামী দলগুলোর মনোভাব, সুশীল সমাজের সমালোচনা সবকিছু মিলে জনগনের চাওয়া পাওয়ার চাপ সামলানোর সক্ষমতা ড. ইউনুস সরকারের কতটুকো আছে সেটাও বিবেচনার বিষয়।

বাংলাদেশ আওয়ামিলীগের নেতৃবৃন্দ ও তার প্রধান শেখ হাসিনা সারাদিনই ড. ইউনুসের সদিচ্ছা নিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে থাকেন।

শেখ হাসিনা কথায় কথায় ড. মোহাম্মদ ইউনুসকে সুদখোর-ঘুসখোর বলে গালি দেন। রাজনীতিতে বা ক্ষমতায় যাতে আসতে না পারেন তার জন্য ড. মোহাম্মদ ইউনুসকে আওয়ামিলীগ সরকার নানা সময়ে নানাভাবে হয়রানী করেছেন। নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে ড. ইউনুস জেনে বুঝে সেই বদনামের খাতায় নাম লিখবেন বলে মনে হয় না। যদি এমন হয় কোন মহলের প্ররোচনা বা কোন উপদেষ্ঠাদের পরামর্শে তিনি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সমালোচনার ইস্যু তৈরী করছেন তাহলে ক্ষতিটা কিন্তু তারই হবে কারন একজন সাধারন উপদেষ্ঠা আর ড. মোহাম্মদ ইউনুস এক নন। যিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিলে ১৫০ এর অধিক পুরষ্কার লাভ করেছেন। যিনি পৃথিবীর সেই সাত ব্যাক্তির একজন যারা নোবেল শান্তি পুরষ্কার, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কগ্রেশনাল গোল্ড মেডেল পেয়েছেন।

যিনি একটি লেকচার বা বক্তব্য দিলে লক্ষাধিক ডলার পারিশ্রমিক পান, যার ক্ষুদ্র ঋণের ধারনা বা মডেল নিয়ে পৃথিবীব্যাপী গবেষনা হয়, যে মানুষটি সারাবিশ্বের মানুষের কাছে রোল মডেল, গোটাবিশ্ব যাকে সম্মান, শ্রদ্ধা করে থাকেন তিনি কিনা জাতির একটি প্রত্যাশিত নির্বাচনকে তালবাহানার মাধ্যমে পিছিয়ে দিবেন এমন মানুষ নিশ্চয়ই ড. মোহাম্মদ ইউনুস নন।

বরং সর্বদা নিরংকার, নির্লোভ, নিঃস্বার্থক এই মানুষটি নিজেকে সকল প্রকার সমালোচনার ঊর্ধ্বে নিয়ে গেছেন। যার সিভি বা বায়োডাটা সংক্ষিপ্তভাবে লিখলেও ৪৫ পাতা হয়, সেই মানুষটি আর যাই হোক জাতির নির্বাচন নিয়ে কোন প্রকার প্রহসন করবেন না বলে আমার বিশ্বাস।

লেখক: মোঃ মনিরুল ইসলাম
সিনিয়র ব্যাংকার, জনতা ব্যাংক, পিএলসি. রাজশাহী।

Loading

error: Content is protected !!