হোম » আইন-আদালত » বগুড়ায় নৃশংস হত্যাকাণ্ড, নেপথ্যে মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের রহস্য উদঘাটন

বগুড়ায় নৃশংস হত্যাকাণ্ড, নেপথ্যে মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের রহস্য উদঘাটন

এম,এ রাশেদ,বগুড়া জেলা প্রতিনিধি:  বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় ইব্রাহিম হোসেন (২১) নামে এক যুবককে মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। ১৫- সেপ্টেম্বর (বুধবার) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নিজ কার্যালয়ে প্রেস বিফ্রিংয়ের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন বগুড়ার এসপি। পরে দুপুরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন গ্রেপ্তার হওয়া জাহিদ হাসান মামুন (১৯)।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে ইব্রাহিমকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সঙ্গে ছিনতাই হওয়া মোটরসাইকেল (অ্যাপাচি আরটিআর) উদ্ধার করা হয়েছে। মামুন বগুড়া শেরপুর উপজেলার বাসিন্দা। তার বাবার নাম হানিফ সোনার।  নিহত ইব্রাহিম সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার খামারগাতি গ্রামের আশরাফ আলীর ছেলে। তিনি বগুড়ার শেরপুর উপজেলার মির্জাপুরে একটি ধানের চাতালে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। এই ধানের চাতালটির মালিক ইব্রাহিমের মামা ছামসুল বারী।
এসপি সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ইব্রাহিম শেরপুর উপজেলার তার মামার ধানের চাতালে প্রায় চারমাস যাবৎ কাজ করে আসছিলেন। এ সুবাদে স্থানীয় বখাটে জাহিদ হাসান মামুনসহ আরো অনেকের সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে। ইব্রাহিম তার মামার মোটরসাইকেল নিয়ে ব্যবসায়িক বিভিন্ন কাজে ঘোরাফেরা করতেন।
এসপি বলেন, মামুনসহ অন্যরা ইব্রাহিমের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী সোমবার ইব্রাহিমকে শেরপুর থেকে কৌশলে গাবতলী উপজেলার নিশিন্দারা গ্রামের একটি পরিত্যক্ত ইটভাটায় ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে তারা সবাই মিলে মদপান করেন। মধ্যরাতে তারা ইব্রাহিমকে হত্যা করতে তার গলায় ধালালো ব্লেড দিয়ে আঘাত করেন। এতে ইব্রাহিমের গলাকেটে যায়।
ওই সময় মামুনসহ তার সহযোগীরা ইব্রাহিমকে মৃত ভেবে মোটরসাইকেল ও মুঠোফোন নিয়ে চলে যান। পরবর্তীতে ইব্রাহিম জীবন বাঁচানোর জন্য ঘটনাস্থল থেকে উঠে দৌঁড় দেন। তিনি দৌঁড়ে পরিত্যক্ত ওই ইটভাটা সংলগ্ন রাস্তার পাশে একটি মুদির দোকানের সামনে গিয়ে পড়ে যান। পরে স্থানীয়দের দেওয়া খবরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার ভোরে তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, ইব্রাহীম হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বগুড়া সদর উপজেলার নাটাইপাড়া এলাকায় মামুনের ভাড়াবাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ছিনতাই হওয়া মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গাবতলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফজলুল হক বলেন, গত  বুধবার দুপুরে গ্রেপ্তার জাহিদ হাসান মামুন  আদালতে স্বীকারক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গাবতলী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ  (ওসি) জিয়া লতিফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার সকালে জাহিদ হাসান মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিহত ইব্রাহিমের মামা ছামসুল বারী বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্তে জানা গেছে ইব্রাহিমের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাতজন জড়িত রয়েছেন। অন্য অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
error: Content is protected !!