হোম » আন্তর্জাতিক » ম্যানইউকে ৭ গোলের মালা পড়াল লিভারপুল

ম্যানইউকে ৭ গোলের মালা পড়াল লিভারপুল

আওয়াজ অনলাইন: একটা বা দুটি নয়, একেবারে হাফ ডজনেরও বেশি গোল। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করল লিভারপুল। নিঃসন্দেহে ৫ মার্চ ইউনাইটেড সমর্থকদের কাছে দুঃস্বপ্নের একটি রাত হয়ে থাকবে। এ ভাবে লিভারপুল যে নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাবে, সে কথা হয়তো তাদের ভাবনাতেও ছিল না। তাও প্রথমার্ধে রেড ডেভিলসরা পিছিয়ে থাকলেও, পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে যেন সাইক্লোন বয়ে গেল অ্যানফিল্ডে। পাশাপাশি লিভারপুলের এই জয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ১৬-র দ্বিতীয় লেগের খেলার আগে রিয়াল মাদ্রিদের জন্য একটি সতর্কবার্তা।

রোববার (৫ মার্চ) অ্যানফিল্ডে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ৭-০ গোলে রেড ডেভিলসদের একেবারে খড়কুটোর মতোই উড়িয়ে দিয়েছে ক্লপের শীর্ষরা। বিরতির আগে তাও ১-০ এগিয়ে ছিলেন মোহাম্মদ সালাহরা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে একেবারে গোলের বন্যা বইয়ে দেয় লিভারপুল। বিরতির পরেই হয় হাফ ডজন গোল। সেই সঙ্গে লিভারপুল গড়ে ফেলে নতুন রেকর্ড।

ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে এই জয় লিভারপুলের সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড। এর আগে ১৮৯৫ সালে দ্বিতীয় ডিভিশনের ম্যাচে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে তারা ৭-১ জয় পেয়েছিল। কিন্তু এ দিন লিভারপুল ক্লিনশিট রাখে।

কডি গাকপো, ডারউইন নুনেজ, মোহাম্মদ সালাহ দু’টি করে গোল করেছেন। আর শেষ দিকে পরিবর্তে নামা রবার্তো ফিরমিনো ইউনাইটেডের কফিনে সপ্তম পেরেকটি পোঁতেন।

গত সপ্তাহে লিগ কাপের শিরোপা জিতেছিল ম্যান ইউনাইটেড। ২০১৭ সালের পর এটি ছিল তাদের প্রথম কোনও শিরোপা। অবিশ্বাস্যভাবে, ইউনাইটেড ভাল দল হিসাবে খেলা শুরু করেছিল। অ্যালিসনকে নবম মিনিটে অ্যান্টনির সুযোগ বাঁচাতে হয়েছিল। এরপরে ২৬তম মিনিটে ব্রুনো ফার্নান্দেস একটি ক্লোজ রেঞ্জ হেডার মিস করেন এবং মার্কাস রাশফোর্ড এর কিছুক্ষণ পরেই একটি শট সরাসরি অ্যালিসনের হাতে মারেন।

এক সময় ইউনাইটেড প্রায় এগিয়ে গিয়েছিল যখন ক্যাসেমিরোর হেডার গোলে ঢুকে যায়। যদিও অফসাইডের জন্য গোলটি বাতিল হয়। এই গোল বাতিল না হলে খেলার ফল অন্যরকম হতে পারতো। যদিও, এর ঠিক এক মিনিট পরে, ৪৩তম মিনিটে লিভারপুল উঠে আসে ইউনাইটেডের অর্ধে। সেখানে অ্যান্ডি রবার্টসন একটি পাস দেন গাকপোকে। প্রাক্তন পিএসভি খেলোয়াড় ডেভিড ডি গিয়ার পাশ দিয়ে জালে জড়িয়ে দেন বল। প্রথমার্ধে ১-০-তেই এগিয়ে ছিল লিভারপুল।

দ্বিতীয়ার্ধের খেলার শুরু হতেই ওঠে ভয়ানক ঝড়। ম্যানচেস্টারের গোলশোধ তো দূরে থাক, লিভারপুলের আক্রমণের ঝাঁজে থরহরি কম্প দশা ক্যাসেমিরো-ভারানেদের। লিভারপুলের আক্রমণের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের।

৪৭ মিনিটের মাথায় ২-০ করেন নুনেজ। এর ঠিক মিনিট তিনেক পরেই নিজের দ্বিতীয় গোলটি করে ৩-০ করেন গাকপো। এর পর ৬৬ মিনিটে লিভারপুলের হয়ে চার নম্বর গোলটি করেন সালাহ। ৭৫ মিনিটে ফের গোল করেন নুনেজ। ৮৩ মিনিটে ৬-০ করেন সালাহ। খেলার ৮৮তম মিনিটে পরিবর্ত খেলোয়াড় ফিরমিনো দলের সপ্তম গোলটি করেন। এই জয়কে ঐতিহাসিক করে রাখার লক্ষ্যে সালাহর কাছ থেকে একটি চমৎকার পাস নিয়ে গোলে ঠেলে দেন তিনি। এ রকম বিধ্বংসী জয়ের পর প্রথম চারে থেকে প্রিমিয়ার লিগ শেষ করার আশাটা বাঁচিয়ে রাখল লিভারপুল।

এই হারের ফলে ইউনাইটেড ২৫ ম্যাচে ৪৯ পয়েন্টেই আটকে থাকল। লিগ টেবলের তিন নম্বরে রয়েছে তারা। শীর্ষে থাকা আর্সেনালের চেয়ে তারা পিছিয়ে ১৪ পয়েন্টে। সম সংখ্যক ম্যাচ খেলে লিভারপুলের পয়েন্ট ৪২। তারা এই মুহূর্তে রয়েছে পঞ্চম স্থানে। চতুর্থ স্থানে থাকা টটেনহ্যামের সঙ্গে তাদের পয়েন্টের ব্যবধান মাত্র ৩।

error: Content is protected !!