হোম » শিরোনাম » বইছে শৈত্যপ্রবাহ – কাঁপছে দেশ

বইছে শৈত্যপ্রবাহ – কাঁপছে দেশ

আওয়াজ অনলাইনঃ  দেশের আট জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে , আর মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কাছাকাছি তাপমাত্রা ছিল ১০ জেলায়, দিন ও রাতের তাপমাত্রা কাছাকাছি চলে আসায় চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বাদে দেশের প্রায় সব জেলায় তীব্র শীত জেঁকে বসেছে, পাশাপাশি দেশজুড়ে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা বিরাজ করছে, তবে আগামীকাল শনিবার থেকে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে, আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে।

গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এ ছাড়া চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, পাবনা, নীলফামারী, পঞ্চগড় ও দিনাজপুর জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে ছিল, ফলে এসব জেলায় শৈত্যপ্রবাহ বইছিল, অন্যদিকে রংপুর ও বগুড়া জেলায় গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কিছুটা ওপরে ছিল, আরো আটটি জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ছিল, এই ১০ জেলায় তাপমাত্রা কমলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোতে সর্বোচ্চ মাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে রয়েছে।

গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ খোঃ হাফিজুর রহমান জানান, আজ রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে, দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে, গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে, কোথাও কোথায় এটি দুপুর পর্যন্ত বিদ্যমান থাকতে পারে, দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়ার কারণে উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে তীব্র শীতের অনুভূতি থাকতে পারে, ঘন কুয়াশার সঙ্গে হিমেল বাতাসের কারণে কুড়িগ্রামে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে, ফলে দিনমজুর, ছিন্নমূল ও হতদরিদ্ররা পড়েছে ভীষণ কষ্টে, প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্র না থাকায় রাতের বেলা হাড়-কাঁপানো শীতে কাবু হয়ে যাচ্ছে অনেকেই, অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।

কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, জেলায় হতদরিদ্রদের মাঝে এ পর্যন্ত ৩৮ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে, এ ছাড়া জেলা প্রশাসন আরো এক লাখ ১৪ হাজার কম্বল বরাদ্দ চেয়েছে, এর মধ্যে ১৫ হাজার কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে, শীতের তীব্রতায় নীলফামারী জেলায় বাড়ছে শীতজনিত রোগ, এসব রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা, গতকাল নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি ছিল ২১৫ জন রোগী, এর মধ্যে ১০ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে ছিল ৩৬ জন, হাসপাতালের শিশু বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. আব্দুল আউয়াল বলেন, শীতের প্রকোপ দেখা দেওয়ার সঙ্গে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ে হাসপাতালে, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হন শিশু ও বয়স্করা।হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা গোলাম রসুল রাখি বলেন, শীতের প্রকোপ দেখা দেওয়ার সঙ্গে হাসপাতালের রোগীর সংখ্যা বেড়েছে, অন্যান্য সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ রোগীকে প্রতিদিন আউটডোর ও ইনডোরে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

গতকাল সৈয়দপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, চলতি বছরে এটিই সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল, শীতের পাশাপাশি ঘন কুয়াশায় সৈয়দপুর বিমানবন্দরে বিমান চলাচল বেশ বিঘ্ন ঘটছে, সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ লোকমান হাকীম বলেন, ঘন কুয়াশায় সৈয়দপুর বিমানবন্দর রানওয়েতে সকাল ১০টায় দৃষ্টিসীমা ছিল ৪০০ মিটার, এটি ফ্লাইট ওঠানামার জন্য পর্যাপ্ত নয়, ফ্লাইট ওঠানামার জন্য সর্বনিম্ন দৃষ্টিসীমা দুই হাজার মিটার প্রয়োজন, সৈয়দপুর বিমানবন্দর ম্যানেজার সুপ্লব কুমার ঘোষ জানান, শীত মৌসুমে ঘন কুয়াশার কারণে প্রায়ই সৈয়দপুর বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল বিঘ্ন ঘটছে, তবে দুপুরের মধ্যে কুয়াশা কেটে গিয়ে তা স্বাভাবিক হওয়ায় কোনো ফ্লাইট বাতিল করা হচ্ছে না

গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিন গোয়ালন্দে ঘন কুয়াশা পড়ছে, বিআইডাব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানিয়েছেন, ঘন কুয়াশা না পড়ায় গতকাল দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি, লঞ্চসহ সব নৌযান চলাচল স্বাভাবিক ছিল, এর আগে গত বুধবার (৪ জানুয়ারি) পর্যন্ত ১০ দিনে ঘন কুয়াশার কারণে নৌপথটিতে প্রায় ৬০ ঘণ্টা ফেরি সার্ভিস বন্ধ ছিল,

error: Content is protected !!