হোম » শিরোনাম » ফেরিতে উপচে পড়া ভিড়, মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক

ফেরিতে উপচে পড়া ভিড়, মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক

আওয়াজ অনলাইনঃ আজও বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কে যানবাহনের চাপ রয়েছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রাসহ কয়েকটি পয়েন্টে ধীরগতিতে চলছে গাড়ি। ঘরমুখো মানুষের ভিড় থাকলেও যান চলাচল স্বাভাবিক থাকায় স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছে মানুষ।

শনিবার সব কারখানা একসাথে ছুটি হওয়ায় কিছুটা যানজটে পড়তে হয়েছে। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাড়ি ফিরছে মানুষ। তবে, এবারে ঘরমুখো মানুষের ভিড় থাকলেও সড়ক মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক।গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় শনিবার সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় জটলা দেখা দেয়।

মহাসড়কের ছয়দানা থেকে তেলিপাড়া পর্যন্ত থেমে থেমে ৪ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। বাস না পেয়ে অনেককে ট্রাকে করে রওনা দিতে দেখা গেছে।ঈদের আগে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কেও স্বস্তি। যানজট না থাকায় ভোগান্তি ছাড়াই বাড়ি ফিরছে মানুষ। মেঘনা সেতুর টোল প্লাজাসহ কিছু পয়েন্টে যান চলাচলে ধীরগতি থাকলেও যানজট নেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। এতে নির্বিঘ্নে ফিরছেন যাত্রীরা। তবে দূরপাল্লার যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অভিযোগ করছেন যাত্রীরা।

বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম দিকে সিরাজগঞ্জের সড়কে যানজট না থাকলেও গাড়ির চাপ রয়েছে। ৩০টি পয়েন্টে মোতায়েন রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য। ঈদযাত্রা শুরু হলেও স্বাভাবিক রয়েছে সাভারের সড়ক-মহাসড়ক পরিস্থিতি।বাড়ি ফেরা নির্বিঘ্ন করতে সড়ক-মহাসড়কে তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সড়ক পথে ঈদ যাত্রায় স্বস্তি থাকলেও আছে বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ।

ঢাকার টার্মিনালগুলো থেকে ছেড়ে যাওয়া অনেক পরিবহন দ্বিগুণ পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে বলে জানান যাত্রীরা। বাড়তি ভাড়া নেয়ার অভিযোগ স্বীকারও করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, বাড়তি ভাড়া বন্ধে আবরো কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

এবার সড়ক পথের যাত্রা অনেকটা স্বস্তির হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফেরার এমন চিত্র অনেকটা কম। স্বল্প আয়ের মানুষ কিছুটা কম ভাড়ায় দূরের গন্তব্যে যেতে দ্বিধা করছেন না। তারা জানান, অগ্রিম টিকিট না থাকায় এখন ভাড়াও বাড়তি, তাই ট্রাক-পিকাপেই যাত্রা করছেন তারা। দ্বিগুণ ভাড়া নেয়ার অভিযোগের সত্যতা মেলে গাবতলি বাস টার্মিনালে গিয়ে।যাত্রীর এমন অভিযোগের সহজ স্বীকারোক্তি পরিবহন সংশ্লিষ্টদের। এরপরও পরিবারের সাথে ঈদ করতে যেতে পারায় খুশি যাত্রীরা।

পুলিশ বলছে, টার্মিনাল থেকে বাড়তি ভাড়া নেয়ার কথা শোনা গেলেও যাত্রীরা তেমন অভিযোগ করছে না। অভিযোগ পেলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানার তারা।

এবারের ঈদ যাত্রা সবচেয়ে স্বস্তির বলে জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বাড়তি ভাড়া বন্ধে প্রশাসন কাজ করছে বলেও জানান তিনি। শনিবার মহাখালি বাস টার্মিনাল পরিদর্শনে এসে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

বেশিরভাগ মহাসড়কে স্বস্তির যাত্রা হলেও প্রতিবারের মতো এবারও ভোগান্তি নিয়েই বাড়ি ফিরছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ।সকাল থেকে শিমুলিয়া ফেরিঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে দেখা গেছে ঘরমুখো লাখো মানুষকে। এছাড়া, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে ছোট-বড় মোট ২১টি ফেরি চলাচল করায় গাড়ির জট থাকলেও ভোগান্তি কিছুটা কম।

ফেরিঘাটের এই গাড়ির জট প্রতিবছরের ঈদযাত্রার পরিচিত দৃশ্য। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। শুক্রবার মধ্যরাত থেকেই শিমুলিয়া ঘাটে অপেক্ষা করছেন অনেকে। ফেরির জন্য কারো কারো অপেক্ষা ২৪ ঘণ্টারও বেশি। রয়েছে মোটরসাইকেল আরোহীদের ভিড়ও।

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসের চাপ না থাকলেও রয়েছে ছোট যানবাহনের চাপ। এতে ভোগান্তি ছাড়া নদী পার হয়ে গন্তব্য পৌঁছাতে পারছেন যাত্রী ও যানবাহন চালকেরা।

এদিকে, বাংলাবাজার ফেরিঘাটেও যাত্রীদের চাপ নেই। ফেরি ছাড়াও লঞ্চ ও স্পিডবোটে করে নির্বিঘ্নে নদী পার হচ্ছেন ঈদে ঘরমুখ মানুষ।

এবারের ঈদযাত্রায় উত্তরবঙ্গগামী ট্রেনে যাত্রী চাপ সবচেয়ে বেশি। বগির ভেতরে, ট্রেনের ছাদে গাদগাদি করে উঠছে মানুষ। এদিকে, নীলসাগর ও একতা এক্সপ্রেস ছাড়া সব ট্রেনই ঢাকা ছেড়েছে নির্ধারিত সময়ে। নেই তেমন সূচি বিপর্যয়। ফলে নেই তেমন ভোগান্তিও।

হঠাৎ কমলাপুর রেলস্টেশনে যাত্রীর ঢল। সবাই উত্তরবঙ্গগামী একতা এক্সপ্রেসের যাত্রী।ট্রেনটি নির্ধারিত সময়ের আধ ঘণ্টা পর স্টেশনে পৌঁছায়। এরপরই শুরু যাত্রীদের হুড়োহুড়ি।

ট্রেনের প্রত্যকটি বগিতে দেখা যায় অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ। সিট না পেয়ে বেশিরভাগ যাত্রী বাড়ি ফিরেছেন দাঁড়িয়ে বা মেঝেতে বসে। প্রিয়জনের কাছে ফেরার আনন্দে ভুলে গেছেন ভোগান্তি।

অতিরিক্ত যাত্রীচাপ ছিল উত্তরবঙ্গগামী ট্রেন নীলসাগর এক্সপ্রেসে। ভেতরে জায়গা না পেয়ে অনেকে উঠেন ছাদে। শত চেষ্টাতেও তাদের নামাতে পারেনি রেলের নিরাপত্তা কর্মীরা।

শনিবার ঈদ স্পেশালসহ ৩৯ জোড়া ট্রেনে বাড়ি ফিরছে যাত্রীরা। সবার যাত্রা নির্বিঘ্ন হচ্ছে দাবি রেলওয়ে কতৃপক্ষের। অন্য বছরের তুলনায় এবার অনেকটা স্বস্তি নিয়েই বাড়ি ফিরতে পারছে ট্রেন যাত্রীরা। বেশিরভাগ ট্রেন ছাড়ছে নির্ধারিত সময়ে।

error: Content is protected !!