হোম » বিনোদন » বগুড়ায় পুতুলের বিয়ে: উদ্দেশ্য বৃষ্টি জন্য প্রত্যাশা

বগুড়ায় পুতুলের বিয়ে: উদ্দেশ্য বৃষ্টি জন্য প্রত্যাশা

এম এ রাশেদ: তীব্র দাবদাহ ও বৃষ্টির আশায় দুটি পুতুলকে বর বউ সাজিয়ে নিজেদের ছেলে-মেয়ের মতোই আদর যত্ন করে বিয়ে দিল বগুড়া শহরের দত্তবাড়ী এলাকার একদল নারী। এ উপলক্ষ্যে সাজানো হয় চালুন-কুলা।
চালুন-কুলায় রাখা হয় পান, সুপারি, দূর্বাঘাস, তেলের সলতে, মিষ্টি, মাটির গুঁড়াসহ বিয়ের সব উপকরণ।
অনুষ্ঠানে গায়ে হলুদ থেকে শুরু করে কন্যাদান, সিঁদুর দান, সাতপাকে ঘোরা, বাসর এমনকি কন্যাকে ছেলের সঙ্গে তার বাড়িতে পাঠানোও হয়েছে।
আর পাঁচটা বিয়েবাড়ির মতোই এই বিয়েতেও সেজেছিল ছেলে পক্ষ এবং মেয়ে পক্ষ। ছিল ঢালাও খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন। পাত পেড়ে পুতুলের বিয়েতে খেয়েছেন এলাকার শতাধিক মানুষ।
কাঙ্খিত বৃষ্টি আর আর্থিক সংকট থেকে বাঁচার জন্য পুতুলের বিয়ে দেয়ার কথা ভাবেন বগুড়া শহরের দত্তবাড়ী এলাকার বাসিন্দা কাজল রেখা দত্ত, কাকলি দাস ও পূর্ণিমা দাস।
তাদের সাথে যোগ দেন এলাকার আরও জন ৫০ নারী। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ অনুষ্ঠানের জন্য সকলে মিলে চাঁদা তুলেন। তাদের মধ্যে উর্মিলা দাস ছেলের মা হিসেবে দায়িত্ব নেন। আর মেয়ের মা হন রিনা দাস।
গতকাল বুধাবার (৭ জুন) দুপুরে সবাই মিলে হিন্দু রীতিতে হলুদ কুটেন, এরপর জল ভরতে যান করতোয়া নদীতে। সেখান থেকে জল নিয়ে এসে ছেলেকে ছোঁয়ানো হলুদ নিয়ে মেয়েকে মাখান। এরপর শুরু হয় বিয়ের মূল আনুষ্ঠানিকতা। পুরহিতের উপস্থিতিতে বরের জন্য টোপর আর কনের জন্য মাথার মুকুট পিঁড়ির ওপরে রেখে সাতপাকে ঘোড়ানো হয়।
এরপর সিঁদুর পড়ানো হয়। কণ্যাদানও করা হয় স্বাভাবিক বিয়ের মতই। শুধু কী বিয়ে? সাথে চলে গান বাজনা, উলু, শাঁখ বাজানো, বাজে কাসরও। দুপুরের বিয়ের বর ও কনে যাত্রীদের জন্য খাওয়ার আয়োজন করা হয় দই মিষ্টিসহ হালকা খাবারের। তবে রাতে বিয়ের বাসরে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন হয় মাংস বিরিয়ানী।
বিয়ের দাওয়াত খেতে আসা পল্লবী দাস বলেন, খুব ভাল লাগছে। এই ব্যতিক্রমী আয়োজন ইতোমধ্যে বাইরের অনেক মানুষের মধ্যেও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। পুতুল বিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের অন্যতম কাজল রেখা দত্ত জানান, দেশে প্রায় দুই মাস হলো কাঙ্খিত বৃষ্টি হচ্ছে না। তাপমাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। তাপমাত্রা  ৩৫ থেকে ৪০ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে।
কয়েকদিন হলো সেই ভয়াবহতা আরও বাড়িয়েছে প্রতিঘন্টার লোডশেডিং। খরার কারণে অনেক বাড়িতে টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। চারিদিকে রোগবালাই বাড়ছে।
বিয়ের মতো শুভ অনুষ্ঠান সংসারে স্বাচ্ছন্দ্য আনে। এক কথায় বলা যায় ঘরে লক্ষ্মী আসে। সেকারণেই এই প্রতীকী পুতুলের বিয়ের আয়োজন করেছেন বলে জানান এই আয়োজক।।
error: Content is protected !!