রায়হান আলী উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ শেখ হাসিনার অবদান কমিউনিটি ক্লিনিক বাঁচায় প্রাণ এই লক্ষ্যে গ্রামগঞ্জের সাধারণ মানুষ যেন টাকার অভাবে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় এজন্য সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে।কিন্তু কমিউনিটি ক্লিনিক গ্রামগঞ্জের মানুষ কে কতটুকু সেবা দিয়ে যাচ্ছে এটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সাধারণ মানুষের। বাংলাদেশ সরকার গ্রামের হতদরিদ্র মানুষ কে বিপুল পরিমানে বিনামূল্যে ঔষধ সরবরাহ করে থাকে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে। কিন্তু বিনামূল্যে ওষুধ তো দূরের কথা টাকা ছাড়া মেলে না সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ার পূর্নীমাগাঁতী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের বামনঘিয়ালা কমিউনিটি ক্লিনিকের চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ। একজন রোগী কে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য যেসকল মেডিকেল যন্ত্রপাতি দরকার তাও নেই।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১ সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার মোঃ আতিকুর রহমানের পরিবর্তে রাখা হয়েছে একজন বেতনভুক্ত কর্মচারী।তাকে দিয়েই চলছে চিকিৎসা সেবা। বামনঘিয়ালা কমিউনিটি ক্লিনিকের (সি,এইচ,সি,পি) আতিকুর রহমানের পরিবর্তে (সি,এইচ,সি,পি) পদে কাজ করছেন বিনায়েকপুর গ্রামের মোঃ জুলমত হোসেন। তিনি রীতিমতো (সিএসসিপির) চেয়ারে বসে রেজিস্ট্রার খাতায় রোগীদের নাম লিপিবদ্ধ করে টাকা নিয়ে ওষুধ দিচ্ছেন । তিনি এখানে কাজ করেছেন ৭ বছর যাবৎ।
এই কমিউনিটি ক্লিনিকের হাজিরা খাতায় কথিত (সি,এইচ,সি,পির) অনুপস্থিতির বিষয়টি সত্যতা পাওয়া যায়। চলতি মাসের শুরু থেকেই তিনি অনুপস্থিত। মাস শেষে একদিন ক্লিনিকে গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে বেতন উত্তোলন করেন আতিকুর। শুধু আতিকুর রহমান নয় এই ক্লিনিকে কর্মরত জোন্সা খাতুন স্বাস্থ্য সহকারী। সেও ক্লিনিকে না গিয়েই বেতন তুলে নিচ্ছে প্রত্যেক মাসে।
এ বিষয়ে জুলমাত হোসেন সত্যতা স্বীকার করে বলেন তার চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্পর্কে কোন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি । আতিকুর রহমান (সি,এইচ,সি,পি) তাকে প্রত্যেক মাসে তার বেতন থেকে ৩ হাজার করে টাকা দেন। তিনি আরো বলেন আতিকুর রহমান ক্লিনিকে নিয়মিত আসেন না এজন্য তার পরিবর্তে চিকিৎসা দেওয়ার তাকে রাখা হয়েছে। ওষুধ দিয়ে টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন হাসপাতালে একজন ঝাড়ুদার রাখা হয়েছে তার বেতন দেওয়ার জন্য প্রত্যেকের কাছে থেকে ৫ টাকা করে নেওয়া হয়।
বামনঘিয়ালা গ্রামের সোলেমান হোসেন, মোমেনা খাতুন, শামসুল নাহার,নুর নবী ইসলাম সকলেই অভিযোগ করেন এই ক্লিনিকে বিনামূল্যে চিকিৎসার নামে আমাদের সাথে প্রতারণা করছে। টাকা ছাড়া ওষুধ পাওয়া যায়না, ওষুধ থাকলেও তাদের প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়না এরা বাজারে ওষুধ বিক্রি করে দেয়। তারা আরও অভিযোগ করেন আতিকুর রহমান (সি,এইচ,সি,পি) কে মাসেও একদিন দেখা যায় না। তার পরিবর্তে একজন এসএসসি পাশের কর্মচারী কে রেখেছেন তিনি আমাদের কি চিকিৎসা দিবেন। আমাদের ভুল চিকিৎসা করে যদি সমস্যা হয় এর দায়ভার কে নিবে আমরা এর উপযুক্ত বিচার চাই।
এ ব্যপারে অভিযুক্ত আতিকুর রহমান (সি,এইচ,সি,পি) বলেন আমি দীর্ঘদিন বগুড়া মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র সেভ-প্লাসে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অসুস্থ তাই ক্লিনিকে নিয়মিত যেতে পারি না এজন্য একজন কে ৩ হাজার টাকা বেতনে রেখে দিয়েছেন। আতিকুল অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন বর্তমানে যাকে রাখা হয়েছে সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয়। তবে তিনি এখন থেকে নিয়মিত ক্লিনিক যাওয়ার কথা বলেন।
এ ব্যাপারে উল্লাপাড়া উপজেলা সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম জানান বামনঘিয়ালা এই কমিউনিটি ক্লিনিকের অবস্থা একবারে শোচনীয়। আমি এ বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ কে জানিয়েছি। পরিদর্শন করতে গিয়ে নিয়মিত ক্লিনিক খোলা পাইনা, আতিকুর রহমান এর আগে অনেকদিন অনুপস্থিত ছিলেন হাজিরা খাতায় আমি অনুপস্থিত লিখেছিলাম এজন্য আমাকে (আতিকুর) অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। পরবর্তীতে আতিকুল ফ্লুট দিয়ে লাল কলমের দাগ মুছে বেতন তুলেছেন। তিনি আতিকুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।সিরাজগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ জাহিদুল ইসলাম জানান বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত হলাম তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পস বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম ও ক্লাস আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু
পীরগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানের অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত
কুবিতে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত