হোম » সারাদেশ » কুরবানির গারল প্রস্তুত বগুড়ার সারিয়াকান্দি যমুনা গারল খামারে

কুরবানির গারল প্রস্তুত বগুড়ার সারিয়াকান্দি যমুনা গারল খামারে

এম এ রাশেদ: বগুড়া সারিয়াকান্দির যমুনা চরের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে বেড়ে ওঠা গারলগুলো কোরবানির হাটগুলোতে বিক্রি করার জন্য প্রস্তুত হয়েছে।
শেষ মুহুর্তের পরিচর্যা নিয়ে এখন ব্যস্ত খামারি এবং পরিচর্যার দায়িত্বে থাকা রাখালরা । আগামী কুরবানিতে ৩০ টির বেশি গারল বিক্রির আশাবাদী খামারি আশলাফ আলী ।
গত ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসের দিকে যমুনাচরের বিস্তীর্ণ চারণভ‚মিতে গারলের খামার করে সফল হয়েছেন আশরাফ আলী। মাত্র ৩০ টি গারল দিয়ে শুরু করলেও তার খামারে এখন প্রায় ২০০ এর কাছাকাছি গারল ।
গত কয়েকবছরে তিনি প্রায় শতাধিক গারল বিক্রিও করেছেন । আগামী কুরবানিতে বিক্রির জন্য তার খামারে ৩০ টির বেশি গারল প্রস্তুত রয়েছে । কুরবানির জন্য তার প্রস্তুতকৃত গারলের ওজন প্রতিটি ৩০ কেজি থেকে শুরু করে প্রায় ৬০ কেজি পর্যন্ত । প্রতিটি গারল তিনি ২৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে চান ।
খামারি আশরাফ আলীর ছেলে উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমুস সাদাত জানান, বিদেশি একটি জার্নালে প্রকাশিত গারলের রক্তের সাথে মানুষের রক্তের মিল আছে এরকম একটি খবরে গারলের ভবিষ্যৎ চাহিদা অনেক বৃদ্ধির সম্ভাবনা থেকেই তার বাবা গারলের খামার করেছেন । তিনি আরও জানান গারলের মাংস আমাদের মানবদেহের জন্য খুবই উপযোগী ।
তিনি জানান , পাবনার ইছামতী এগ্রো সার্ভিসেস এর তথ্যমতে, ভেড়ার মাংস লাল মাংস হিসেবে বিবেচিত হয় এবং প্রোটিনের একটি সুস্থ ও নির্ভরযোগ্য উৎস বলে মনে করা হয়। এতে চর্বি খুব সামান্য পরিমানে আছে। ভেড়ার মাংস হালকা সাদযুক্ত।
এর বারবিকিউ বা বেকড বর্তমানে সারা পৃথিবীতে সমাদৃত। পুষ্টিকর খাদ্য হিসাবে আমাদের প্রতিদিন  ভেড়ার মাংস খাওয়া খুবই জরুরি। ভেড়ার মাংসে আয়রন, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়াম, পটাসিয়াম, তামা ও ম্যাগনেসিয়াম এবং বিভিন্ন বি ভিটামিনের একটি অত্যন্ত সমৃদ্ধ উৎস।
ভেড়ার মাংসের ৪ আউন্সে প্রোটিন প্রায় ২৮ গ্রাম, ৩৩০ ক্যালরি ও মনোআন্স্যাচুরেটেড ফ্যাট আছে। এই মাংস খাওয়ার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সুবিধাগুলির মধ্যে অ্যানিমিয়া, উন্নত পেশী, হাড়ের ভাল সাস্থ্য উন্নত জীবাণু প্রতিরোধ ¶মতা, জন্মগত সমস্যা প্রতিরোধ  এবং স্নায়ুতন্ত্রের সাস্থের অন্তর্ভুক্ত। ভেড়ার মাংস স্তন ক্যান্সার প্রতরোধে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে, রক্তসল্পতা প্রতিরোধে কাজ করে, নবজাত শিশুদের স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা প্রতিরোধ করে, মুখের দাগ ও বয়সের ছাপ হ্রাস করে, পেশী তৈরি ও বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, স্ট্রোক এবং কিডনি রোগের ঝুঁকি কমায়, অটিজম এবং স্নাযুতন্ত্রের সাস্থের উন্নতিতে সহায়তা করে ।
সারিয়াকান্দি প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা: শাহ আলম বলেন, আশরাফ আলীর দেখাদেখি এ উপজেলায় বেশকটি গারলের খামার বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে। এর মধ্যে একটি রেজিস্ট্রিকৃত। এদের দেহের ওজন ভেড়ার তুলনায় অনেক বেশি। আবার মাংসের দামও বেশি হওয়ায় বাজারে এর চাহিদাও অনেক বেশি। তাছাড়া রেড মিটের মধ্যে অন্যান্য মাংসের তুলনায় গারল বা ভেড়ার মাংস আমাদের মানবদেহের জন্য বেশ উপযোগী।
error: Content is protected !!